নতুন উদ্যোগ শুভ সূচনা

Must read

আগরতলা : রাজ্য জুড়ে গেরুয়া সন্ত্রাসের বাতাবরণ। উপনির্বাচনেও রক্ত ঝরেছে, ভোটলুঠ হয়েছে। আইনশৃঙ্খলার অবস্থা শোচনীয়। এদিকে বছর পেরোলে হাইভোল্টেজ বিধানসভা ভোট। তার আগে ত্রিপুরায় সাংগঠনিক তৎপরতা ও রাজনৈতিক প্রচার আরও বাড়াতে আগরতলায় স্থায়ী রাজ্য দফতর উদ্বোধন করল তৃণমূল কংগ্রেস (Tripura AITC Office)। সোমবার নিয়ম মেনে পূজার্চনা করে, দলীয় কর্মীদের উৎসাহের আবহে আগরতলা চিত্তরঞ্জন রোডে ত্রিপুরা প্রদেশ তৃণমূলের নতুন সদর কার্যালয়ের উদ্বোধন হল। ত্রিপুরা তৃণমূল ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী মলয় ঘটক ও তৃণমূল কংগ্রেসের যুব সভানেত্রী সায়নী ঘোষ। এছাড়াও ছিলেন ত্রিপুরা তৃণমূলের ইনচার্জ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ সুস্মিতা দেব, রাজ্য সভাপতি সুবল ভৌমিক-সহ স্থানীয় নেতৃত্ব। রাজ্য সদর দফতরের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে প্রবল উৎসাহ লক্ষ্য করা যায়। স্থায়ী সদর দফতর হওয়ার পর এখন থেকে এই ঠিকানায় রাজ্যের সব জায়গা থেকে আসা কর্মীরা কাজ করতে পারবেন। নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। দলীয় বৈঠক থেকে শুরু করে সাংবাদিক বৈঠক সবকিছুই এক ছাদের তলায় করা যাবে। ত্রিপুরার তৃণমূল কর্মীদের দীর্ঘদিনের চাহিদা পূরণ করে এবার নতুন স্থায়ী রাজ্য পার্টি অফিসের (Tripura AITC Office) যাত্রা শুরু হল। সম্প্রতি উপনির্বাচনের প্রচারে ত্রিপুরায় এসে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নয়া দলীয় কার্যালয় তৈরির সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন। এদিন তা বাস্তবায়িত হল। বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক লড়াইয়ে তৃণমূল কংগ্রেস এক ইঞ্চিও জমি ছাড়তে চায় না। ত্রিপুরার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে রাজ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর তৃণমূল। প্রতিদিনই দলের সদস্য বাড়ছে। মাঝেমধ্যেই ত্রিপুরা সফরে আসছেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। এ-ছাড়াও কলকাতা থেকে একাধিক শীর্ষনেতা ত্রিপুরায় নিয়মিত আসছেন সংগঠনের কাজে। সাংসদ-মন্ত্রীরাও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ত্রিপুরায় দলের সাংগঠনিক কাজকর্মের শরিক হন। এতদিন কোনও স্থায়ী রাজ্য দফতর না থাকায় অনেক ক্ষেত্রেই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছিল। এবার সেই সমস্যা মিটল। নতুন তৃণমূল ভবন পেয়ে রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা আরও উৎসাহিত।

আরও পড়ুন: গণতন্ত্রের সংজ্ঞাটাই বদলে দিল ওরা

দলীয় কার্যালয় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তৃণমূলের স্টেট ইনচার্জ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পার্টি অফিসের উদ্বোধন প্রদেশ তৃণমূলের নতুন যাত্রার সূচনা। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলেছেন, ত্রিপুরা আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য। আমরা সেই লক্ষ্য অনুসরণ করছি। যতক্ষণ না আমরা এখানে উন্নয়নমুখী বঙ্গীয় শাসনের মডেল আনতে পারি, আমরা ত্রিপুরার জন্য লড়াই চালিয়ে যাব। প্রদেশ তৃণমূল সভাপতি সুবল ভৌমিক বলেন, ত্রিপুরায় শুধু তৃণমূল নয়, সাধারণ মানুষও এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। আগেরদিন রাতেও বিজেপির গুন্ডারা আমাদের পার্টি অফিসের উদ্বোধন বানচাল করতে বাধা তৈরির চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ত্রিপুরার জনগণ আমাদের সঙ্গে আছেন এবং তাঁরা চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ত্রিপুরাকে অত্যাচারী বিজেপি শাসন থেকে মুক্ত করতে। তাই আমাদের লড়াই ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনের জন্য এবং আমরা আমাদের লক্ষ্যে স্থিত। রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেব তথাকথিত বিজেপির ডাবল ইঞ্জিনের রাজ্য ত্রিপুরায় গণতন্ত্র কীভাবে ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে তার উদাহরণ তুলে ধরেন। তাঁর কথায়, আমরা সব শ্রেণির মানুষকে আশ্বস্ত করতে চাই যে তৃণমূল শেষ পর্যন্ত আপনাদের পাশে থাকবে। ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বুলেট বা হিংসার মাধ্যমে নয়, গণতন্ত্রের মাধ্যমেই লড়ব আমরা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা মলয় ঘটক বলেন, এখন থেকে আরও বেশি করে ত্রিপুরার জনগণ তাঁদের অভিযোগ উত্থাপন করার এবং বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রামে সমর্থন চাওয়ার জায়গা পাবেন। আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ত্রিপুরায় পরিবর্তন আনতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। পশ্চিমবঙ্গ যুব তৃণমূল সভানেত্রী সায়নী ঘোষের কথায়, সাধারণ মানুষের সমর্থন বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে আমাদের উৎসাহ দিয়েছে। আমাদের এই লড়াই চলবে।

Latest article