সুখেন্দুশেখর রায়: ‘‘ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হয়তো বিশ্বাসই করতে পারবে না এমন একজন রক্তমাংসে গড়া মানুষ পৃথিবীর বুকে কখনও পদচারণা করেছিলেন”— আইনস্টাইন, ৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৭। কলকাতার বেলেঘাটায় ‘হায়দারি মঞ্জিল’-এ বেশ কিছুদিন কাটিয়ে গান্ধীজি ফিরে এলেন দিল্লিতে। আপাতত শান্ত দাঙ্গাবিধ্বস্ত কলকাতা। কিন্তু দিল্লি ও পাঞ্জাবের পরিস্থিতি তখনও অগ্নিগর্ভ। দোসরা অক্টোবর— জন্মদিনে অনেকে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন। কিন্তু চারপাশে দাঙ্গার লেলিহান শিখা আর উদ্বাস্তুর স্রোত দেখে বিহ্বল গান্ধীজি বললেন, ‘‘এসব দেখার চেয়ে আমার বরং মরে যাওয়া ভাল। আমাকে সংবর্ধনা জানানোর চেয়ে শোকজ্ঞাপন শ্রেয়।’’
আরও পড়ুন –বিশ্ববাংলা শারদ সম্মান ঘোষণা রাজ্য সরকারের
ওই বছর ২৩ অক্টোবর পাকিস্তানি হানাদাররা কাশ্মীর আক্রমণ করে। কারণ, অন্যান্য ৫৩৫টি দেশীয় রাজ্যের মতো কাশ্মীরেরও ভারতভুক্তির আবেদন জানিয়েছেন মহারাজা হরি সিং।
পাক হানাদারদের হটিয়ে দিতে পাল্টা ব্যবস্থা নিল ভারত সরকার। যদিও ততদিনে কাশ্মীরের বিস্তীর্ণ ভূখণ্ড পাকিস্তানের দখলে চলে গিয়েছে। পূর্ব প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পাকিস্তানকে ৫০ কোটি টাকা ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করল ভারত সরকার। গান্ধীজি বিরোধিতা করলেন। তাঁর বক্তব্য, সীমান্তের সংঘর্ষ দেশের সার্বভৌমত্বের সঙ্গে জড়িত বিষয়। কিন্তু প্রতিশ্রুত টাকা ফেরত না দেওয়ার সিদ্ধান্তে ভারতের প্রতিহিংসার মনোভাব ফুটে উঠেছে। এর ফলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সরকার কিন্তু তা মানতে নারাজ। দেশভাগের ফল বিষময় হবে— গান্ধীর এমন সতর্কবাণীতে কোনও নেতা কর্ণপাত করেননি। টাকা ফেরতের বিষয়েও তাঁর আপত্তি শোনা হবে কেন? কিন্তু গান্ধীজি তাঁর দাবিতে অটল। সরকারের ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় তিনি ১৩ জানুয়ারি থেকে অনশন শুরু করেন।
আরও পড়ুন –বৃষ্টিতে ভাসল শহর, চলবে ঘূর্ণাবর্তের জের
আগের মতো অনশনের ধকল সইবার ক্ষমতা কমে এসেছে ঠিকই। কিন্তু উদ্যমে, সত্যের সন্ধানে এখনও নিবেদিতপ্রাণ এই একক সত্যাগ্রহী। ভারত সরকার শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানকে ৫০ কোটি টাকা দিতে আর আপত্তি করল না। গান্ধীজিও অনশন ভঙ্গ করলেন। তিনি এবার ঠিক করলেন, সেবাগ্রামে ক’দিন কাটিয়ে অস্থায়ীভাবে কিছুদিন পাকিস্তানে বসবাস করবেন। মহঃ আলি জিন্না গান্ধীজির এই সিদ্ধান্তে খুশি হয়ে স্বাগত বার্তা পাঠালেন। এই দেশের মধ্যে শান্তির বাতাবরণ তৈরির জন্য এমন অভিনব প্রয়াসে সেদিন পাক-ভারতের জনচিত্ত আলোড়িত হয়েছিল। কিন্তু ধর্মীয় মৌলবাদী শক্তি গান্ধীজির বিরুদ্ধে নিরবচ্ছিন্ন অপপ্রচার চালিয়ে যেতে থাকে। এক পাঞ্জাবি উদ্বাস্তু, মদনলাল ২০ জানুয়ারি গান্ধীজিকে লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়ে। তিনি ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। তবু তাঁর নির্দেশ, মদনলালকে যেন শাস্তি না দেওয়া হয়। এমনকী ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার সরকারি প্রস্তাবও গান্ধীজি খারিজ করে দেন। বললেন, ‘‘যার কাছে অবাধে চলাফেরার চেয়ে সুরক্ষাবলয়ে বেশি থাকা পছন্দের, তার মরে যাওয়া ভাল।’’
আরও পড়ুন –পুকুরে গড়িয়ে পড়ল ট্রাক্টর, মৃত ২৭
২৯ জানুয়ারি, গান্ধীজি কংগ্রেস দলের জন্য এক নতুন পথনির্দেশিকা তৈরি করলেন। সেটিই ছিল তাঁর জীবনের অন্তিম ইচ্ছাপত্র, উইল অথবা টেস্টামেন্ট। ওই ইচ্ছাপত্রে তিনি লিখলেন, ‘কংগ্রেসকে ভেঙে দেওয়া হোক। ক্ষমতার রাজনীতি থেকে দূরে সরে গিয়ে কংগ্রেস গড়ে তুলুক লোকসেবক সংঘ। যা ক্ষমতার কেন্দ্র নয়, শুধু জনগণের উদ্দেশ্যে নিবেদিত সেবামূলক সংগঠন হিসেবে কাজ করবে। দেশ স্বাধীন হয়েছে। সুতরাং কংগ্রেসের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে।’ তাই ক্ষমতার অলিন্দ থেকে জনগণের মাঝখানে ফিরে আসার জন্য তাঁর এই আহ্বান। কিন্তু কংগ্রেস দলের অধিকাংশ নেতা-মন্ত্রীর গান্ধীজির এই অন্তিম ইচ্ছা মনঃপূত হয়নি।
আরও পড়ুন –বাংলার পুজো-সাহিত্য দুনিয়ায় জুড়ি নেই
৩০ জানুয়ারি। দিল্লির আলবাকার্ক রোড। এখন নাম ৩০ জানুয়ারি মার্গ। বিড়লা ভবনে একতলার বিশাল হলঘরে ঘেরা বারান্দায় শুয়ে রয়েছেন মোহনদাস। আরাবল্লির পাহাড় গড়িয়ে নেমে আসা কনকনে শীতে কাবু হয়ে পড়েছে দিল্লি। রাতের শেষ প্রহর। অখণ্ড নিস্তব্ধতা ভেঙে দূরে কোথাও একটা পেঁচা ডাকল। ঘুম থেকে উঠে পড়লেন গান্ধীজি। একে একে বাকি সবাই। কিছুক্ষণ পরে শুরু হল প্রভাতী প্রার্থনা। নাতনি মনু শ্রীমদ্ভাগবত গীতার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্লোক আবৃত্তি করলেন। মোহনদাস ও তাঁর অনুগামীরা তা সমবেত কণ্ঠে পুনরুচ্চারিত করলেন। প্রার্থনা শেষে তাঁর দুই চলমান যষ্টি মনু ও আভার কাঁধে হাত রেখে গান্ধীজি ভিতরের ঘরে গেলেন। এইভাবে শুরু হল তাঁর প্রাত্যহিকী। দিঙ্মণ্ডলে তখনও ঘন আঁধার। আকাশে একাকী শুকতারা জ্বলজ্বল করছে।
আবার মন দিয়ে পড়লেন কাল দুপুরে লেখা কংগ্রেসের নববিধান। কিছুক্ষণ ধরে চলল সংশোধন, সংযোজন। এক গ্লাস লেবুর জল, গরম জলে মেশানো মধু পান করলেন। তারপর আবারও শুয়ে পড়লেন। মনে দোলাচল। কংগ্রেস নেতারা কি আমার শেষ ইচ্ছা পূর্ণ করবেন? মানবেন তাঁরা এই নির্দেশিকা? এরপর আধঘণ্টা পায়চারি করে ফাইল খুলে লেখালেখিতে মন দিলেন। মনু এসে জানতে চাইলেন, দোসরা ফেব্রুয়ারি সেবাগ্রাম যাওয়া হবে কি না। গান্ধীজির সংক্ষিপ্ত উত্তর, ‘‘ভবিষ্যৎ কে বলতে পারে!’’
আরও পড়ুন –জেলায় জেলায় ঘোষিত বিশ্ববাংলা শারদ সম্মান
সকাল সাতটা। দিনের প্রথম দর্শনার্থী শ্রীমতী বি কে নেহরু এসেছেন। আজই ফিরে যাবেন আমেরিকায়। সামান্য কথাবার্তার পরে তাঁর খাতায় শুভেচ্ছাবাণী লিখে দিলেন। একসময় সচিব প্যারেলালকে ডেকে কংগ্রেসের নববিধান তুলে দিয়ে বললেন, ‘‘যদি কোনও ভুলত্রুটি থাকে তা ভালভাবে দেখে নিয়ে শুধরে দিও। আজ সন্ধেয় জওহর আসবে। ওর হাতেই তুলে দেব আমার এই অন্তিম ইচ্ছাপত্র।’’ স্নানের পরে ডাক্তারের নির্দেশমতো গান্ধীজির ওজন নেওয়া হল। কী আশ্চর্য! এতদিন একটানা অনশনের পরেও তাঁর ওজন বেড়েছে আড়াই পাউন্ড! উচ্চতা ছিল পাঁচ ফুট, পাঁচ ইঞ্চি। এখন ওজন ১০৯.৫ পাউন্ড। দুপুরে খানিক বিশ্রামের পরে আবার দর্শনার্থীদের সঙ্গে আলাপচারিতা চলতে থাকে। দুটোর সময় ‘লাইফ’ পত্রিকার চিত্রসাংবাদিক সাক্ষাৎকার নিলেন, অজস্র ছবিও তুললেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, আপনি বরাবর বলে এসেছেন ১২৫ বছর বাঁচবেন। কী আশায় এমন বলেন? গান্ধীজির বিষণ্ণ উত্তর, ‘‘তেমন কোনও আশা আর নেই। সারা বিশ্বে যা ঘটছে। এই আঁধারে আমি আর বাঁচতে চাই না।’’ দর্শনার্থীর ভিড় বেড়ে চলেছে। বিকেল চারটেয় আসবেন বল্লভভাই প্যাটেল, সন্ধেয় জওহরলাল। নেহরু-প্যাটেলের মতবিরোধের খবর রোজ কাগজে বের হচ্ছে। ওঁদের এই বিরোধ ঘোচাতেই হবে। ইতিমধ্যে বিড়লা ভবনের আবাসিকরা শুরু করেছেন সান্ধ্যপ্রার্থনার আয়োজন।
ততক্ষণে দিল্লি রেলস্টেশনে যাত্রী-বিশ্রামাগারের ছয় নম্বর ঘরে সম্পূর্ণ হয়েছে আরেক প্রস্তুতি। নাথুরাম গডসে, নারায়ণ আপ্তে, বিষ্ণু কারকারে ও তাদের পাঁচ সঙ্গী চুড়ান্ত করে ফেলেছে গোপন ছক। গত কয়েকদিনে তারা বারকয়েক বিড়লা ভবনের আনাচে-কানাচে ঘুরে এসেছে। কারা ভিতরে যাবে, কারা বাইরে থাকবে— সব ঠিক হয়ে গিয়েছে। বিকেল হতেই বিশ্রামাগার থেকে বেরিয়ে পড়ল ওরা।
আরও পড়ুন –এক জোড়া তরবারিতে হয় দেবীর ঐতিহ্যবাহী আরাধনা জঙ্গলমহলে
মন্দির মার্গের বিড়লা মন্দিরে বাকি সবাই পুজো দিল, গডসে দাঁড়িয়ে দেখল। সাড়ে চারটেয় পরনে খাকি পোশাক, প্রথম টাঙায় রওনা দিল নাথুরাম। পিছনের টাঙায় নারায়ণ আর বিষ্ণু। পরে অন্যরা। গন্তব্য বিড়লা ভবন, লক্ষ্য মোহনদাস। নির্ধারিত সময়ে বিকেল চারটেয় এসে পৌঁছেছেন সর্দার প্যাটেল, সঙ্গী কন্যা মীরাবেন। আলোচনায় গান্ধীজি প্যাটেলকে বললেন, ‘‘একথা ঠিক যে সব বিতর্কের অবসান ঘটাতে আমি চেয়েছিলাম, হয় তুমি নয় জওহর মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দাও। কিন্তু মাউন্টব্যাটেন তোমাদের দু’জনেরই অপরিহার্যতার কথা আমাকে বলেছেন। ভেবে দেখলাম, মাউন্টব্যাটেনের কথাই ঠিক। তোমরা দু’জনে বিবাদ-বিতর্ক এড়িয়ে চলো। সান্ধ্যপ্রার্থনার পরে জওহর আসবে। আমি তাকেও এ-কথা বলব। যদি প্রয়োজন হয়, আগামিকাল ওয়ার্ধায় যাওয়া আমি বাতিল করব।’’
আরও পড়ুন –এক জোড়া তরবারিতে হয় দেবীর ঐতিহ্যবাহী আরাধনা জঙ্গলমহলে
প্রতিদিন সন্ধে পাঁচটায় হয় প্রার্থনা। আলোচনা তখনও চলছে। আভা ইশারায় গান্ধীজিকে ঘড়ি দেখতে বললেন। তিনি খেয়াল করলেন না। বাধ্য হয়ে মনু তাই বললেন, আর দেরি করা যায় না। তড়িঘড়ি দাঁড়িয়ে পড়লেন গান্ধীজি। সকন্যা ফিরে গেলেন প্যাটেল। পায়ে চপ্পল, গায়ে শাল চড়িয়ে আভা ও মনুর কাঁধে হাত দিয়ে গান্ধীজি এবার ২০০ গজ দূরে প্রার্থনাসভার পথে এগিয়ে চললেন। সারাজীবন ধরে কত পথ হেঁটেছেন। পোরবন্দর থেকে রাজকোট, লন্ডন থেকে ডারবান, পিটারমরিৎজবার্গ থেকে জোহানেসবার্গ, প্রিটোরিয়া, নাতাল; টলস্টয় ফার্ম থেকে শান্তিনিকেতন, চম্পারণ, সবরমতী, ইয়েরাভদা, আগা খাঁ প্যালেসের বন্দিজীবন থেকে নোয়াখালি, সোদপুর, বেলেঘাটার ‘হায়দারি মঞ্জিল’…। এবার সুদীর্ঘ পথ পরিক্রমা শেষ হতে চলেছে। জীবনের প্রান্তরেখায় পৌঁছে গিয়েছেন এই মহাপথিক।
আরও পড়ুন –শুক্তো-চচ্চড়িতে জমে ওঠে সিডনির দুর্গাপুজো
পাঁচটার আগেই সদর দরজা দিয়ে বিড়লা ভবনে ঢুকে পড়ে নাথুরাম গডসে ও তার দুই সঙ্গী আপ্তে ও কারকারে। প্রতিদিনের মতো কয়েকশো মানুষ প্রার্থনাসভায় অপেক্ষা করছেন। মঞ্চে ওঠার সিঁড়িতে ছ’টি ধাপ। প্রথম ধাপের দিকে এগিয়ে আসছেন গান্ধীজি। সামনেই কয়েক হাত দূরে দাঁড়িয়ে যমদূত নাথুরাম। হাতজোড় করে সে বলল, গান্ধীজি নমস্তে। প্রতিনমস্কার জানালেন তিনি। এরপর গডসের দেহ সামনের দিকে খানিকটা ঝুঁকে পড়তেই মনু চেঁচিয়ে উঠল, না, না। এখন আর প্রণাম নয়। বড্ড দেরি হয়ে গেছে…। এক ঝটকায় গডসে সরিয়ে দিল মনুকে। থমকে দাঁড়ালেন গান্ধীজি। মুহূর্তে গডসের মুষ্টিবদ্ধ হাতে লুকোনো কালো ইতালিয়ন ‘বেরেটা’ পিস্তল গর্জে উঠল। পরপর তিনবার আলোর ঝলকানি, পটকা ফাটার আওয়াজ। গুলিবিদ্ধ হল গান্ধীজির তলপেট, বুক। শূন্য-দূরত্বে দাঁড়িয়ে গডসে যখন তৃতীয়বার ট্রিগারে চাপ দেয় তখনও হাতজোড় করে নমস্কারের ভঙ্গিতে গান্ধীজি নিশ্চল দাঁড়িয়ে আছেন। অস্ফুট কণ্ঠে উচ্চারণ করলেন, হে রাম…। তারপর ধপাস করে তাঁর দেহ মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। হিংসার কাছে পরাভূত হলেন অহিংসার পূজারি? যিশুর মতো তিনিও বলতে চেয়েছিলেন— ক্ষমা করো, প্রভু। তাই রামনাম উচ্চারণ করেছিলেন?
আরও পড়ুন –মহাষষ্ঠীতে বেলুড় মঠে শুরু পুজো ভিড় জমাচ্ছেন উচ্ছ্বসিত ভক্তরা
পাঁচটা সতেরো মিনিটে তাঁর ঘড়ির কাঁটা থেমে গিয়েছে। আভা, মনুর কোলে শুয়ে আছেন নিষ্প্রাণ গান্ধী।
তাঁর সাদা অস্ট্রেলীয় শাল রক্তে ভেসে যাচ্ছে। চারিদিকে ছোটাছুটি, কান্নার রোল। ততক্ষণে গডসেকে পিছন থেকে জাপটে ধরে ফেলেছেন মার্কিন দূতাবাসের জনৈক কূটনীতিক। দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ল খবর। জাতির উদ্দেশ্যে বেতার বার্তায় প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু বললেন, ‘‘আমাদের জীবন থেকে আলো নিভে গেল। বাপু আর নেই…।’’
এখন অ্যাটেনবোরোর ‘গান্ধী’ দেখে ইউরোপ কাঁদে। মার্টিন লুথার কিং-এর আত্মবলিদানের নেপথ্যে কাজ করে গান্ধীদর্শন। যে দর্শনকে মূলধন করে নেলসন ম্যান্ডেলা, বারাক ওবামা জীবনশৃঙ্গে আরোহণ করেন। আর আমাদের দেশে? তিনি আর দশটা স্বাধীনতা সংগ্রামীর মতো রাজনীতির পণ্যে পরিণত হয়েছেন। তাঁকে নিয়ে যতশত বুলি আওড়ানো হয় তা শুধুমাত্র ভোট কুড়োনোর তাগিদে। কারণ, তিনি যে আপামর জনসাধারণের কাছে একমাত্র আলোকস্তম্ভ। সত্যের ধ্রুবতারা।