প্রতিবেদন : কয়েক মাস আগে পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যপাল হিসেবে জগদীপ ধনকড় যেভাবে রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকে পদে পদে সমস্যায় ফেলার চেষ্টা করতেন ঠিক সেই একই ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান। ধনকড়ের অনৈতিক ও অসাংবিধানিক হস্তক্ষেপে তিতিবিরক্ত হয়ে জুন মাসে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালকে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদ থেকে সরানোর জন্য বিধানসভায় একটি বিল পাশ করিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন-দেবদেবীর পরিবর্তে টাকায় মনীষীদের ছবি ছাপার দাবি নেটিজেনদের
মমতা সরকারের পাশ করানো সেই বিল খুঁটিয়ে দেখছে কেরলের পিনারাই বিজয়ন সরকার। কারণ বাংলার মতোই বামশাসিত কেরলেও মোদি সরকারের এজেন্ট হিসাবে রাজ্যপাল আরিফ প্রতিদিনই কোনও না কোনও বিষয় নিয়ে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে অকারণ ঝামেলা পাকাচ্ছেন। মমতা সরকার যেভাবে বিধানসভায় বিল পাশ করিয়ে ধনকড়ের ডানা ছেঁটেছিল, বামশাসিত কেরলও সেই পথেই এগোতে চাইছে।
সাধারণত রাজ্যের অনুদানপ্রাপ্ত সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে আচার্য পদে থাকেন সংশ্লিষ্ট রাজ্যের রাজ্যপাল। প্রথম সেই নিয়মের বদল ঘটানোর চেষ্টা শুরু হয় বাংলায়। চলতি বছরের জুন মাসে পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্যপালের বদলে মুখ্যমন্ত্রীকে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য করার প্রস্তাব সম্বলিত একটি বিল বিধানসভায় আনে। বাংলার মতো একই সমস্যায় ভুগছে কেরল। সে রাজ্যেও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে বাম সরকারের সঙ্গে ঝামেলা বাঁধিয়েছেন রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ। রাজ্যের নয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে প্রথমে তিনি ২৫ অক্টোবরের মধ্যে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে সংশ্লিষ্ট উপাচার্যরা আদালতে যাওয়ায় হাইকোর্টে জোরদার ধাক্কা খান রাজ্যপাল। তারপর অবশ্য সুর কিছুটা নরম করে তিনি ওই নয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেন।
আরও পড়ুন-নতুন কমিটি গড়লেন খাড়গে
রাজ্যপালের এই পদক্ষেপেই ক্রুদ্ধ বিজয়ন সরকার। রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদ থেকে আইনিপথে কীভাবে রাজ্যপালকে সরানো যায়, সরকারের অভ্যন্তরে তা নিয়ে জোরদার আলোচনা চলছে। এ জন্যই পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় পাশ হওয়া বিলটি খুঁটিয়ে দেখছেন কেরলের মন্ত্রী, আমলারা। এই বিলে রাজ্যপালের বদলে রাজ্যের নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য করার কথা বলা হয়েছে।