সংসদে নিরাপত্তা দিতে পারে না, দেশের সুরক্ষা কীভাবে দেবে কেন্দ্র? প্রশ্ন তুলল তৃণমূল

লোকসভার অধিবেশনকক্ষের ভিতরে বুধবার হামলার প্রেক্ষিতে সংসদের দুই কক্ষেই বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিবৃতি দাবি করল বিরোধীরা।

Must read

প্রতিবেদন : লোকসভার অধিবেশনকক্ষের ভিতরে বুধবার হামলার প্রেক্ষিতে সংসদের দুই কক্ষেই বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিবৃতি দাবি করল বিরোধীরা। সংসদে হামলার প্রতিবাদে এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দিল্লির বিজয়চকে সাংবাদিক সম্মেলন করেন লোকসভার সাংসদ ডাঃ কাকলি ঘোষদস্তিদার এবং রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেন। অন্যদিকে কলকাতায় এই ইস্যুতে সাংবাদিক সম্মেলন করেন রাজ্যের মন্ত্রী ডাঃ শশী পাঁজা ও দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রশ্ন, মহুয়া মৈত্রকে বহিষ্কার করা হলে প্রতাপ সিমহাকে ছাড় কেন? কেন তাকে এখনও বহিষ্কার না করে জামাই আদর করা হচ্ছে? উল্টে সংসদকাণ্ড নিয়ে যাঁরা প্রতিবাদ করছেন, তাঁদেরই শাস্তির মুখে পড়তে হচ্ছে! তৃণমূলের বক্তব্য, সংসদ তো বিরোধীদের কথা বলার জায়গা, তাহলে এখানে কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে কেন? তাহলে সংসদকে মগের মুল্লুক বানিয়ে শুধু বিজেপির থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে? তৃণমূলের দাবি, নতুন ভবনের নিরাপত্তাহীনতার দায় ও গোয়েন্দা সার্বিক গোয়েন্দা ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদত্যাগ করুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর মুখ লুকিয়ে না থেকে প্রকাশ্যে বিবৃতি দিন প্রধানমন্ত্রী।

আরও পড়ুন-বেকারত্ব, মগজধোলাই ও ষড়যন্ত্র : নানা ব্যাখ্যা পরিবারের সদস্যদের মুখে

লোকসভার সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার ও রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেন সরাসরি প্রশ্ন করেন, যদি সংসদে ঢুকে সাংসদদের নিরাপত্তায় ব্যাঘাত ঘটানো হয় তাহলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হাতে গোটা দেশের সুরক্ষা কতটা নিশ্চিত? সংসদ ভবনকে সুরক্ষিত করতে না পারলে জাতীয় নিরাপত্তা তাঁরা দেবেন কীভাবে, সেই প্রশ্ন উঠবেই। সেইসঙ্গে তাঁরা প্রশ্ন তোলেন বিপুল অর্থ ব্যয়ে নির্মিত নতুন সংসদ ভবনের নিরাপত্তা এবং পরিকাঠামো নিয়ে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে মোদি সরকারের কীসের এত তাড়াহুড়ো যে নিরাপত্তার যথাযথ বন্দোবস্ত না করেই নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন করে দিতে হল!
তৃণমূলের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়, এখন এথিক্স কমিটি কোথায় গেল? মহুয়া মৈত্রর ইস্যুতে জাতীয় নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে যদি এথিক্স কমিটি সক্রিয় হতে পারে তাহলে খোদ বিজেপি সাংসদের সুপারিশের ভিত্তিতে সংসদকক্ষে ঢুকে নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার পরে এথিক্স কমিটি সেই বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে না কেন?

আরও পড়ুন-বেনজির তামাশা! লোকসভায় অনুপস্থিত থেকেও বহিষ্কৃত সাংসদ!

সাংবাদিকদের সামনে দোলা সেন বলেন, বুধবারের ঘটনা একদিনের আকস্মিক কোনও ঘটনা নয়। সম্পূর্ণ রেইকি করে দীর্ঘ পরিকল্পনার পর তা ঘটানো হয়েছে। সেই কারণেই যারা গ্যালারি থেকে ঝাঁপ দিয়েছে তারা অন্য কোথাও নয়, একেবারে সটান কার্পেটের উপর ঝাঁপ দিয়েছে, যাতে নিজেদের শরীরে কোনও আঘাত না লাগে। বিরোধীদের অভিযোগ, নতুন সংসদ ভবনে সম্পূর্ণ বাইরে থেকে আসা দুই যুবক কীভাবে অবলীলায় একের পর এক ধাপ অতিক্রম করতে পারল? কেমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা? কোথায় নজরদারি? এই ঢিলেঢালা ব্যবস্থার সুযোগ নিয়ে আরও ভয়ঙ্কর কিছু ঘটানো হলে কী হত? তৃণমূলের অভিযোগ, এই ঘটনা ঘটানোর আগে যথেষ্ট হোমওয়ার্ক করা হয়েছে। হতেই পারে, ভিতর থেকে তাদের কেউ সাহায্য করেছে। তৃণমূলের দাবি, সঠিক তদন্ত করতে হবে। যাঁরা দেশের নিরাপত্তা নিয়ে বড় বড় কথা বলেন, সেই প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এই ঘটনার দায় দায়িত্ব নিতে হবে। যিনি হামলাকারীদের সংসদে ঢোকার পাস ইস্যু করেছিলেন তিনি একজন বিজেপি সাংসদ। তাঁর বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া দরকার এবং তাঁকে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা দরকার। কারণ ওই দুই যুবক প্রায় তিনমাস ধরে বিজেপি সাংসদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল পাস পাওয়ার জন্য। যারা সংসদ ভবনকেই সুরক্ষিত রাখতে পারছে না তারা দেশের ২২ হাজার কিলোমিটার সীমান্ত অঞ্চলের সুরক্ষা কীভাবে নিশ্চিত করবে?

আরও পড়ুন-ফুলকপিতে ধসা রোগ, মাথায় হাত সুতির চাষিদের

রাজ্যসভায় তৃণমূলের মুখ্যসচেতক সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, বুধবার যা ঘটল তারপরে ইন্ডিয়া জোট চেয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদে আসবেন এবং একটি বিবৃতি দেবেন। বিরোধীরা সম্মিলিতভাবে চেয়েছিলেন এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে সভায় আলোচনা হোক। এটা ন্যায্য দাবি। অথচ সরকার কোনও বিবৃতি না দিয়ে বহিষ্কারের পথে হাঁটল!

Latest article