বিজেপির ডবল ইঞ্জিন কী বস্তু, বুঝেছে পারশোলা

ভোটের সময় নেতারা এসে গালভরা প্রতিশ্রুতিও দিয়ে যান। কিন্তু বারাবাঁকি জেলার বাসিন্দারা স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও চরম অনুন্নয়নের অন্ধকারে ডুবে।

Must read

নবনীতা মণ্ডল, নয়াদিল্লি : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের দাবি করা তথাকথিত ডবল ইঞ্জিন সরকারের ‘ভুয়ো’ উন্নয়নের নজির উত্তরপ্রদেশের বারাবাঁকি জেলার পারশোলা গ্রাম। তবে শুধু এই গ্রামই নয়, পুরো উত্তরপ্রদেশ জুড়ে এইরকম প্রায় ৫০টি গ্রামের চরম অনুন্নয়নের চিত্র তুলে ধরলেন রাজ্যের সমাজবাদী পার্টির নেতা বিনয় সিং। বিজেপি নেতাদের উন্নয়নের ফাঁকা আওয়াজের প্রমাণ উত্তরপ্রদেশের দারিয়াবাদ বিধানসভা এলাকার পারশোলা গ্রাম। বর্তমানে এখানে বিজেপিরই বিধায়ক সতীশচন্দ্র শর্মা। পঞ্চম দফায় আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি ভোট হবে এখানে।

আরও পড়ুন:পদ্মে বরুণ কাঁটা

উত্তরপ্রদেশের পারশোলা গ্রামটি রাজধানী লখনউ থেকে মাত্র ৮০ কিলোমিটার দূরে। কিন্তু প্রদীপের নিচেই অন্ধকার। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও উন্নয়ন থমকে গিয়েছে এখানে। সাধারণ মানুষের জীবন ধারণের জন্য ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা নেই, স্বাধীনতার সাত দশক পরেও নেই স্কুল, কলেজ, বিদ্যুৎ, প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র, পানীয় জলের ব্যবস্থা। প্রাথমিক ওষুধপত্রের প্রয়োজনেও গ্রামবাসীদের যেতে হয় ১০ কিলোমিটার দূরের গ্রামে। কিন্তু দূরে যেতে হলেও কোনও সড়ক ব্যবস্থা নেই। ছোট ডিঙি নৌকায় ঘাগরা নদী পেরিয়ে পাশের গ্রামে যেতে হয় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস আনতে। ডবল ইঞ্জিন দূরের কথা, সভ্য জগতের ন্যূনতম প্রয়োজন মেটানোর জন্যও চেষ্টা নেই প্রশাসনের। ভোট আসে-ভোট যায়।

আরও পড়ুন:পুড়ছে বাড়ি

ভোটের সময় নেতারা এসে গালভরা প্রতিশ্রুতিও দিয়ে যান। কিন্তু বারাবাঁকি জেলার বাসিন্দারা স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও চরম অনুন্নয়নের অন্ধকারে ডুবে। প্রবীণ গ্রামবাসী নন্দলাল রাওয়াত বললেন, আজ পর্যন্ত এলাকার বিজেপি বিধায়ক সতীশচন্দ্র শর্মাকে চোখে দেখেননি তিনি। এখনও পর্যন্ত গ্রামে নেই বিদ্যুতের কোনও পোস্ট। বিদ্যুৎ সংযোগ আসা তো অনেক দূরের কথা। বারাবাঁকি জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি কিসানলাল যাদব জানালেন, শুধু এই একটা গ্রামই নয়, এটাই উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন গ্রামের বাস্তব চিত্র।

আরও পড়ুন:একসঙ্গে ৩৮ জনকে ফাঁসির সাজা, আমেদাবাদে ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণ মামলা

নির্বাচন মিটে গেলে নেতারা কোনওদিন ফিরেও তাকান না এই সমস্ত গ্রামের দিকে। জীবনধারণের জন্য ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধাগুলি থেকেও বছরের-পর-বছর বঞ্চিত সাধারণ মানুষ। একই কথা শোনা গেল লখনউয়ের সমাজবাদী পার্টির নেতা বিনয় সিংয়ের মুখে। তিনি জানালেন, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ গোরক্ষপুরের বাইরে কিছু চেনেনই না। বিজেপি সরকার শুধুমাত্র মিথ্যে স্বপ্ন ফেরি করতে পারে। সমাজবাদী পার্টির জমানায় ইলেকট্রিকের পোস্ট লেগেছিল এই সমস্ত গ্রামগুলিতে। যদিও বিদ্যুৎ সংযোগ তখন দেওয়া সম্ভব হয়নি।

আরও পড়ুন:এক ম্যাচ বাকি রেখেই সিরিজ ভারতের, বিরাট-মঞ্চে রুদ্ধশ্বাস জয়

কিন্তু যোগী আদিত্যনাথ ক্ষমতায় আসার পর বিদ্যুৎ, সড়ক, পানীয় জল, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সবদিক থেকেই বিপুলভাবে বঞ্চিত উত্তরপ্রদেশের বেশিরভাগ গ্রাম। দরিয়াবাদ বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক সতীশচন্দ্র শর্মা বিরোধীদের অভিযোগ নিয়ে সাফাই দিলেন, আমরা সবরকম চেষ্টা করছি উন্নয়নের। কিন্তু আগের সরকার কোনও কাজই করেনি। তাই দেরি হচ্ছে।

Latest article