কেক সম্রাজ্ঞীরা

রান্নাঘরকে যিনি নিমেষে রেঁস্তোরা বানান, তিনিই পারেন কেক বেকিংয়ে জাদু দেখাতে। বড়দিনের বড় কেক হোক বা ছোট্ট কুকিজ— সবকিছুতেই সিদ্ধহস্ত তাঁরা। এ-শহরে বেকিং বিপ্লব এনেছেন সেই মেয়েরাই। গড়ে তুলেছেন নামী কনফেকশনারি বা বেকারি, দিচ্ছেন প্রশিক্ষণও। ক্রিসমাস ইভে তাঁদের নিয়ে লিখছেন শর্মিষ্ঠা ঘোষ চক্রবর্তী

Must read

বড়দিনের বড় কেক হোক বা ছোট। কেক বেকিংয়ের মাস্টার মাইন্ড যদি হয় নারী তাহলে সেই কেকের স্বাদ বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়। রান্নাঘরকে যিনি রেঁস্তোরা বানান তিনিই পারেন চোস্ত কেক বেকার্স হতে। সেই কারণে এই শহরে বেশ কিছু নামী বেকারির মালকিন হলেন মহিলা। যাকে বলে পুরোদস্তুর উদ্যোগপতি। তাঁদের মধ্যে কেউ কেক বেকিং শিখিয়ে আর্থিকভাবে সাবলম্বী করে তুলছেন মহিলাদের, আবার কেউ তৈরি করেছেন নিজস্ব কনফেকশনারি, কেউ বা বজায় রেখে চলেছেন একশো বছরের ইতিহাস।

আরও পড়ুন-নন্দীগ্রামের ভেটুরিয়ায় আহত কর্মীদের দেখে কর্মসূচি ঘোষণা কুণাল ঘোষের

দীপান্বিতা ভাটিয়া
ডেলিশিয়াস কেক বেকিংয়ে এবং ট্রেনিংয়ে নজির গড়েছেন এ শহরের মাইক্রোওয়েভ কুকিং এবং বেকিংয়ে সিদ্ধহস্ত দীপান্বিতা ভাটিয়া। খুব ছোট্টবেলায় মায়ের কেক বেক করা দেখতেন। মায়ের মধ্যে পেশাদারিত্বের লেশটুকু ছিল না তাও অনায়াসে অজস্র কেক বানাতেন। আট পাউন্ড, দশ পাউন্ড পর্যন্ত কেক তৈরি করেছেন অনায়াসে পরিবার, বন্ধুবান্ধবদের জন্য। ওটাই ছিল তাঁর প্যাশন। সেই প্যাশনই কোথাও দীপান্বিতার শিরায়-উপশিরায় ঢুকে গিয়েছিল। ইস্টার্ন কোল্ডফিল্ডের কোলিয়ারিতে বাবা তখন আসানসোলে পোস্টেড। খুব বড় পদাধিকারী ছিলেন। ওখানে মেমসাহেবরা ছিলেন সেই সময়। তখনও কেকের ন্যাশনালাইজেশন হয়নি। মার সঙ্গে কলকাতাতেও চলে আসত সেই কেক কারণ এখানেই ছিল দীপান্বিতার মামারবাড়ি। এরপর তিনিও চলে আসনে কলকাতা, এখানেই কলেজে পড়া। বড় হয়ে মায়ের হাতে হাত মিলিয়ে কেক বেক করতেন। এরপর বিয়ে। তখনই একটু একটু করে রান্নায় হাতেখড়ি। যদিও ততদিনে বেকিং বিষয়টা তাঁর অনেকটাই দখলে। ওভেনে কী করে তুখড় কেক বেক করতে হয় সেটা জেনে গেছেন। একটু একটু কেক বেকিং শুরু করছেন। বিয়ের পর দীপান্বিতা যখন চেন্নাই গেলেন স্বামীর সঙ্গে তখন প্রথম কনভেকশন মাইক্রোওভেন এল তাঁর বাড়ি। এই সময় একটি নামী কোম্পানি মাইক্রোওভেন লঞ্চ করে। সেই মাইক্রোওভেন কিনে দিলেন স্বামী। এরপর থেকেই পুরোদস্তুর মাইক্রো কুকিং এবং বেকিংয়ের শুরু। ভালবাসার টানে প্রতিবেশী, বন্ধুদের কেক বানিয়ে দিতেন। পরবর্তীতে কলকাতায় ফিরে চাইছিলেন একটা কিছু করতে অথচ বাড়ির বাইরে গিয়ে ধরাবাঁধা চাকরি করার ইচ্ছে ছিল না তেমন। কারণ তখন ছেলে খুব ছোট। নিজের চেষ্টায় কিছু করা সঙ্গে অর্থ উপার্জনের স্পৃহাটাও ছিল প্রবল। তাহলে আর দেরি কেন, বাড়িতে থেকেই কিছু করতে হলে কেক বেকিং এবং মাইক্রো কুকিং-এর চেয়ে আর ভাল কী হতে পারে। যদিও তখনও ভাবেননি যে তাঁর মাইক্রোওয়েভ কুকিং আর বেকিং ক্লাস এতটা সফল হবে বা কুকিং ক্লাস খুলবেন। ওই সময় এদেশে বিভিন্ন কোম্পানি নতুন নতুন মাইক্রোওভেন লঞ্চ করছে। অথচ তার ব্যবহার সকলের অজানা। একটি নামী কোম্পানির অধিকর্তাকে চিঠি লিখলেন যে তিনি মাইক্রোকুকিং-এর ব্যবহার শেখাতে চান। অর্থাৎ হাউ টু ইউজ মাইক্রোওভেন। ব্যস, পরের দিনই ডাক পড়ল এবং রাতারাতি শুরু হল বহু মানুষকে প্রশিক্ষণ দেওয়া। এরপর আর পিছন ফিরে দেখেননি। নামী চ্যানেলে মাইক্রোকুকিং ক্লাস করিয়েছেন। যেসব মেয়ে বা গৃহবধূ কেক তৈরি ও বিক্রি করে আর্থিক উপার্জন করতে চান তাঁদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠান, পুজোআর্চা, ক্রিসমাস— প্রতিটা উপলক্ষকে কেন্দ্র করে নতুন নতুন কেক তৈরি করা শেখাচ্ছেন তিনি। বেঙ্গলি ডেলিকেসি যেমন নলেন গুড়ের কেক, রাবড়ি কেক, বিভিন্ন থিম কেক, ডিজাইনার কেক, রেনড্রপ কেক সিনামন কেক তার সিগনেচার আইটেমগুলির অন্যতম। কোনও কনফেকশনারি খোলার স্বপ্ন দেখেন না কিন্তু ডিজাইনার কেক বানাচ্ছেন। উইন্টার কেকের অপশনে ফিউশন ফ্লেভারটাও রাখছেন। সারাক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছেন পরীক্ষা-নিরীক্ষা। দীপান্বিতার দৌলতে ট্রেন্ডিং কেক শেখা এখন আর কোনও কষ্টের বিষয় নয়।
ডেব্রা ও আলিশা আলেকজান্ডার

আরও পড়ুন-রাজ্যকে নিশানা করতে গিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে বিপাকে দিলীপ ঘোষ

কলকাতায় থাকেন অথচ সালদানহার কেক খাননি এমন কেকপ্রেমী পাওয়া দুষ্কর। আর ইভ যখন ক্রিসমাস তখন সালদানহা বেকারি জুগ জুগ জিও। ১৯৩০ সালে তৈরি এই বেকারির শুরু উবেলিনা সালদানহার হাত ধরে। সঙ্গে স্বামী। সেই সময় বেকারির ব্যবসায় একজন মহিলার আসা সহজ কাজ ছিল না। কিন্তু উবেলিনার বেকিংয়ের প্রতি প্যাশন ছিল তীব্র। দারুণ ভাল কেক বেক করতে পারতেন, জানতেন অনেক কিছু। অদম্য উৎসাহ থেকে এই গোয়ানিজ পরিবার বেকারি কলকাতায় কেকের ব্যবসা শুরু করেছিলেন। তখন বাড়ি বাড়ি কেক পৌঁছতে হত কারণ এত আধুনিক ডেলিভারি সিস্টেম তখন ছিল না। বক্সম্যানরা সালদানহার কেক পৌঁছে দিতেন কেকমুখী মানুষের কাছে। ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয় সালদানহা বেকারি। উবেলিনার সালদানহার সাফল্যের ধারক পরবর্তীতে ছিলেন পুত্র ডেনজিল সালদানহা। এই বেকারির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি। এই মুহূর্তে তৃতীয় প্রজন্ম ডেনজিল-কন্যা ডেব্রা আলেকজান্ডার এবং চতুর্থ প্রজন্ম ডেব্রার কন্যা আলিশার হাত ধরে প্রায় ৯০ বছরের কেকজীবনে সালদানহা বেকারি প্রাজ্ঞ এবং পরিণত। আরও বেশি করে বঙ্গ জীবনের অঙ্গ। ড্রেবা প্রথমেই বেকারির ব্যবসায় ছিলেন না। সতেরো বছর ব্যাঙ্কে কাজ করেছেন এরপর চলে আসেন বেকারিতে। চেয়েছিলেন পারিবারিক ব্যবসার সুনাম এবং খ্যাতির ট্রাডিশনকে বজায় রাখতে। বাবা ডেনজিলের কাছে হাতেকলমে সব শিখলেন।

আরও পড়ুন-বাম বঞ্চনার জবাব মিলেছে

কোভিডের সময় থেমে থাকেনি সালদানহা বেকারি। হোম ডেলিভারি প্রচুর বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। তখন কেক থেকে শুরু করে ব্রেড, বার্গার, গার্লিক ব্রেড, মশালা ব্রেড ডেলিভারি করেছেন সর্বত্র। ওই সময় বাড়িতে কাজের লোক ছিল না অনেকের। ফলে এমন খাবারের চাহিদা ছিল যা খেলে বাসনকোসন ধোয়ার ঝামেলা থাকে না।
বর্তমানে লন্ডন থেকে রীতিমতো কেক, পেস্ট্রি তৈরির প্রশিক্ষণ নিয়ে এসছেন ডেব্রার কন্যা আলিশা। প্রচুর আধুনিক ভাবনার নতুন ফিউশন জুড়েছেন সিলদানহার কেক-এ। চিজ কেক, রামবল, ডোনাট, সেলিব্রেশন কেক, ডিজাইনার কেক, থিম কেক, ফিউশন কেক— সবকিছুই বানাচ্ছেন আলিশা। তা-ও সালদানহার ক্রিসমাস কেক একনম্বরে। ফ্রুট কেক, রিচ ফ্রুট কেক, ওয়ালনাট কেক— যা খেলে বারবার ইচ্ছে হবে খেতে।

আরও পড়ুন-বাম বঞ্চনার জবাব মিলেছে

সুপ্রিয়া রায়
কয়েক যুগ আগেও কোনও কাজই মেয়েদের জন্য সহজসাধ্য ছিল না। রক্ষণশীলতার বেড়াজালই ছিল তাঁদের অদৃষ্টে। আর সেই মেয়ে যদি হন কোনও সম্ভ্রান্ত পরিবারের পুত্রবধূ তাহলে তো কথাই নেই। মাত্র তেরো বছর বয়সে সুপ্রিয়া রায়ের বিয়ে হয় কাশিমবাজার রাজবাড়িতে। এক বছরের মধ্যে মা হন তিনি। অভিজাত ধনী পরিবারের বউ, আর কী চাই! সুখে ঘরকন্না করাটাই স্বাভাবিক ছিল কিন্তু তা হয়নি। সবসময় মনে হত কিছু একটা করতে হবে। শ্বশুরমশাইয়ের সাহায্যে আবার বাড়িতে থেকেই পড়াশুনোর শুরু। বৃত্তি পেয়ে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করলেন। কিন্তু তারপরেও সেই বাড়িতেই তাঁর জীবনযাপন। বাড়ির বাইরে একা বেরনোর অনুমতি ছিল না। ব্যবসায়ী পরিবারের বউ স্বপ্ন দেখতেন ব্যবসা করবেন। সেই স্বপ্ন সার্থক করতে শুরু করলেন কুকারি ক্লাস। কুকিং এবং বেকিংয়ে ডিপ্লোমা ছিল তাঁর। ১৯৯০ সালে নিজের উপার্জিত অর্থ দিয়ে শুরু করলেন কেক আর ফাস্ট ফুডের দোকান। একজন মহিলা হয়ে এমন একটা ব্যবসায় সফল হওয়ার লড়াইটা কিন্তু বেশ কঠিন ছিল।

আরও পড়ুন-আমেরিকায় প্রবল তুষারঝড়ের শঙ্কা, বাতিল হল চার হাজার উড়ান

যদিও স্বপ্ন ছিল তাঁর আকাশছোঁয়া। শুরু করলেন কনফেকশনারিজের ব্যবসা। গৃহবধূ থেকে ধীরে ধীরে হয়ে উঠলেন মহিলা উদ্যোগপতি। তাঁর সেই ব্যবসার ব্র্যান্ড নেম ‘সুগার অ্যান্ড স্পাইস’। বর্তমানে ২০০-র বেশি কর্মচারীর রুজিরুটির ঠিকানা এই সংস্থা। শহর থেকে মফসসল— সর্বত্র যার আউটলেট। এই সাফল্য তাঁকে এনে দিয়েছে জাতীয় পুরস্কারও। ২০০০ সালে স্মল স্কেল ইন্ডাস্ট্রির সেরা উদ্যোগপতি হিসেবে সুপ্রিয়া রায় পান এই পুরস্কার।

আরও পড়ুন-উপাচার্যের কুৎসার জবাবে ফিরহাদ, রবীন্দ্র নয়, আরএসএস আদর্শ আনছেন উপাচার্য

ফাতিমা বরোদাওয়ালা
হাজার তিক্ততা, যন্ত্রণা এবং জীবনের বিষময় অভিজ্ঞতাকে তুচ্ছ করে সফল হওয়ার নজির অনেক রয়েছে হয়তো কিন্তু স্মল স্কেল ইন্ডাস্ট্রির আর একজন মহিলা উদ্যোগপতি ফাতিমা বরোদাওয়ালার জীবনে লড়াই আর সাফল্য যেন পিঠোপিঠি সত্য। মুহূর্তে নিজের হেরে যাওয়াকে জয়ে পরিণত করতে পারেন এমন একজন ব্যক্তিত্ব হলেন ফাতিমা। তিনি একদিকে সন্তানসম্ভবা অপরদিকে অশান্ত বৈবাহিক জীবন। দুয়ের টানাপোড়েনে স্বামীকে ছেড়ে বেরিয়ে আসেন তিনি। জেদ সম্বল করে প্রথমে শুরু করেছিলেন ক্লাউড কিচেন। ওই শারীরিক অবস্থায় ফাতিমা দিনের আঠারো ঘণ্টা কাজ করতেন তাঁর স্বপ্নকে সফল করবেন বলে। সিঙ্গল পেরেন্ট তকমা নিয়েই হার না মানার যুদ্ধে নেমেছিলেন ফাতিমা। ক্লাউড কিচেনের পরবর্তীতে শুরু করলেন ডিজাইনার কেক, পেস্ট্রি, মাফিন, ফ্লাফিপাই, কুকিজের কমপ্লিট প্যাকেজ সমৃদ্ধ একটি ঝকঝকে আউটলেট যার নাম ‘কেকলিশিয়াস’। এর মাঝেই মেয়ে হয় ফাতিমার। আজ তাঁর দোকান এবং কফিশপ বেশ জনপ্রিয় এবং তাঁর তৈরি কেক-পেস্ট্রির চাহিদা কিছু কম নয়। ব্যবসায়িক সাফল্য হয়তো পেয়ে গেছেন কিন্তু তার চেয়ে বড় জীবনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে এগিয়ে যাওয়ার সাফল্য। এই সময় পাশে পেয়েছিলেন পরিবারকে, যাঁদের সাপোর্ট ছাড়া এতবড় পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং মহিলা উদ্যোগপতি হয়ে ওঠা অসম্ভব ছিল।

আরও পড়ুন-বন্ধুর টানে মেসির বাড়িতে সুয়ারেজ

শ্রীপ্রিয়া গুপ্তা
প্রিজারভেটিভ মুক্ত, হ্যান্ডমেড হাইকোয়ালিটি বেকিং-এর অন্যতম নাম আ লে কর্ডন ব্লিউ গ্র্যাজুয়েট পেস্ট্রি শেফ শ্রীপ্রিয়া গুপ্তা। ২০০৭ সালে তাঁর ছোট্ট বেকারি এনেছিল বেকিং বিপ্লব। তিনিই প্রথম এ-শহরে এনেছিলেন গ্লো ইন দ্য ডার্ক কেক। চকোলেট হ্যাজেলনাট, রেড ভেলভেট, বেলজিয়ান চকোলেট কেক ছিল তাঁর শুরুর দিকের বিখ্যাত কেকগুলো। ২০০৭ কলকাতাতেই শ্রীপ্রিয়া শুরু করেন ডেজার্ট বুটিক ‘লিটল প্লেজার’। যে নামটা শুনলে দ্বিতীয়বার বলতে হয় না। তিনিই সেই নারী যিনি ক্রিকেট সম্রাট শচীন তেন্ডুলকরের ৪৫তম জন্মদিনের কেক তৈরি করেছিলেন। কাস্টমাইজড কেক তৈরিতে পটু শ্রীপ্রিয়ার ক্লায়েন্ট গোটা ভারতে এবং দেশের বাইরেও রয়েছে। শুরুতে তাঁর কাস্টমার ছিলেন গৃহবধূ, সেখান থেকে নতুন আধুনিক প্রজন্ম, বড়, বুড়ো, মিলিওনেয়ার, নামী ব্যক্তিত্ব— কে নেই এখন তাঁর ক্লায়েন্ট তালিকায়!
লাভলি ও পূজা কাপুর
রান্নাঘরের চুলা থেকে ওভেনের জার্নিটা এক সুন্দর স্বপ্নময় অভিজ্ঞতা লাভলি কাপুর এবং পূজা কাপুরের জীবনে। স্বয়ং সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিনের কেক নিতে তাঁর স্ত্রী বিজয়া রায় একটা সময় প্রতিবছর আসতেন তাঁদের কনফেকশনারি শপে। কলকাতার কেউকেটা থেকে শুরু করে দেশের এলিট ক্লাস গোয়েঙ্কা, মিত্তল, আম্বানি— কে ছিল না তাঁদের কাস্টমারের তালিকায়! শুরুর দিন থেকেই আকাশছোঁয়া রেসপন্স পেয়েছিল তাঁদের কেক, কুকিজ, টার্ট।

আরও পড়ুন-গদ্দার, বেইমান-মুক্ত জেলা গড়ার ডাক

তাঁদের তৈরি কেক চাই-ই সবার। বাড়ির কিচেনেই একটা সময় বন্ধু-বান্ধব, প্রতিবেশী, পরিবার-পরিজনদের জন্য কেকের জোগান দিয়ে পেরে উঠছিলেন না লাভলি আর পূজা। তাই একটা ছোট্ট গ্যারেজে একটা ওভেন এবং একটা মিক্সার নিয়ে পাঁচজন কর্মচারীকে দিয়ে শুরু করেছিলেন অর্ডার নেওয়া এবং কমপ্লিট করা। একটা সময় তাঁর মনে হয় আরও অনেক লোক নিলেও সামাল দেওয়া সম্ভব হবে না। একটা আউটলেট তাঁদের চাই-ই। কিন্তু কোথায় সেই ব্যবসায়িক পরিকল্পনা। কোনওকিছু চিন্তা না করেই ১৯৮৫-তে তাঁরা শুরু করলেন ‘কুকিজার’। যা আজ একটা ব্র্যান্ডও বটে। কিছু পরিমাণে কুকিজ আর টার্ট নিয়ে শুরু এই বিখ্যাত আউটলেটে প্রথমদিনেই খোলার পরেই সব খাবার মুহূর্তে আউট অফ স্টক হয়ে যায়। সেই থেকে আজ কুকিজার-এ কোনও আইটেম পড়ে থাকে না পরের দিনের জন্য।

Latest article