ইডেনে আজ শাহরুখ বনাম সৌরভ

রবিবার ছ’টা নাগাদ মাঠে এল দিল্লি। পন্টিং মাঠে ঢুকেই সোজা চলে গেলেন উইকেট দেখতে। তিনি জানেন ম্যাচের চাবিকাঠি বাইশ গজে।

Must read

অলোক সরকার: পৌনে ন’টা নাগাদ সৌরভ যখন বেরিয়ে গেলেন, বাদশা তখন নাইট ড্রেসিংরুমে। তার আগে দু’জনেই অনেকক্ষণ মাঠে কাটালেন। চিত্র সাংবাদিকরা অপেক্ষায় ছিলেন সেই মাহেন্দ্রক্ষণের। যখন দাদা-শাহরুখ মোলাকাত হবে। কিন্তু সেই মুহূর্ত আর এল না!
বাবা চণ্ডী গঙ্গোপাধ্যায়ের হাত ধরে প্রথম ইডেনে পা রেখেছিলেন সাত বছর বয়সে। আস্তে আস্তে ঘাসের সঙ্গে সখ্য। ইডেন ও সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় জড়িয়ে গেলেন অবিচ্ছেদ্য আত্মীয়তায়। বাকিটা ইতিহাস। বলার দরকার পড়ে না।

আরও পড়ুন-অবশেষে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পূর্বাভাস!

তবু যেটা বলার, দিল্লি ক্যাপিটালস শহরে পা রাখা ইস্তক  তিনি কলকাতার অতিথি। যে হোম ড্রেসিংরুমে গোটা জীবন কাটিয়েছেন, সেখানে তাঁর জায়গা নেই। সৌরভের জন্য বরাদ্দ বাঁদিকের ভিজিটার্স ড্রেসিংরুম!
আইপিএল নামক কঠিন চক্রব্যূহে এসবই বাস্তব। যেমন গৌতম গম্ভীর। কেকেআর মেন্টর দিল্লির লোক। শাহরুখ খানও আদতে তাই। কিন্তু কলকাতায় এই দিল্লি ম্যাচ তাঁদের হোম ম্যাচ। গম্ভীরের জন্য হোম ড্রেসিংরুম ও ডাগআউট। তিনি নাইটদের দু’বারের জয়ী অধিনায়ক। আর সৌরভের অ্যাওয়ে!
এক ম্যাচের জন্য তাই ভুলে যেতে হবে ইডেন সৌরভের মাঠ। তিনি সিএবির প্রাক্তন সভাপতি। ক’দিন আগেও বিশ্বকাপ কমিটির মাথায় ছিলেন। প্রশ্ন, ইডেন আজ দাদার পাশে নাকি গম্ভীর-শাহরুখের? ছোট্ট এক স্মৃতি। এই ইডেনে ২০১২-তে কেকেআর বনাম সৌরভ ম্যাচে মাঠ দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছিল। স্রেফ দাদার টানে।

আরও পড়ুন-আদিবাসীদের জন্য একের পর এক প্রকল্প, মনে করালেন নেত্রী

সোমবারের ম্যাচটা দুটো দলের কাছেই খুব গুরুত্বপূর্ণ। কেকেআর জিততে জিততে হঠাৎ খেই হারিয়ে ফেলেছে। রাজস্থান আর দিল্লি এখন থেকে যেভাবে ম্যাচ নিয়ে চলে গিয়েছে, তাতে ঈশান কোণে মেঘ দেখছেন অনেকে। শাহরুখ আগের ম্যাচে দুই ওভার আগেই মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। রাজস্থান ম্যাচে বাটলার আর পাঞ্জাব ম্যাচে বেয়ারস্টো তাঁর ধৈর্যের পরীক্ষা নিয়েছেন। ম্যাকগুর্ক সেটাই করেন কি না দেখার! তবে রবিবার মাঠে সবাইকে উৎসাহ দিয়ে গেলেন।
কাগজে-কলমে কেকেআর এখনও দুই। আট ম্যাচে ১০ পয়েন্ট। দিল্লির দশ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট। তারা পাঁচ। যেহেতু তারা দুটো ম্যাচ বেশি খেলেছে, তাই অ্যাডভান্টেজ কেকেআর। কিন্তু ব্যাপারটা এত সহজ নয়। নাইটদের বোলিং দুশ্চিন্তা ছড়াচ্ছে। পরিস্থিতি এমন যে, বেয়ারস্টোর হাতে চামিরা, বরুণরা যখন মার খাচ্ছেন, তখন রবিচন্দ্রন অশ্বিন পোস্ট করেন, বোলারদের বাঁচাও!

আরও পড়ুন-অবশেষে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পূর্বাভাস!

মিচেল স্টার্ক যখন রান দিয়েছেন, তখন বারবার তাঁর ২৪.৭৫ কোটির দাম সামনে এসেছে। এখন ঠেকায় পড়ে আবার তাঁর নাম স্মরণে আসছে। অন্তত চামিরার থেকে ভাল করবেন! স্টার্কের আঙুলে চোট আছে। ঠিক যে আঙুলে বলের গ্রিপ আঁকড়ে ধরেন সেখানেই। এটা শোনা যাচ্ছে। তাঁর চোটের তেমন আপডেট নেই। কেকেআর কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত মিডিয়াকে তথ্য দেননি। ফলে পরিষ্কার হয়নি দিল্লি ম্যাচে কেকেআর স্টার্ককে পাচ্ছে কি না। তবে নাইট প্র্যাকটিসে স্টার্ককে বল করতে দেখা গেল।
সমস্যা ব্যাটিংয়েও। সল্ট আর নারিন অসাধারণ খেলছেন।  দারুণ শুরু করছেন। কিন্তু তারপর ইনিংস টেনে নিয়ে যাওয়ার লোকের অভাব। ভেঙ্কটেশ, শ্রেয়স যে রানটা করছেন, তাতে নারিনদের শুরুর জোশ হারিয়ে যাচ্ছে। রান রেট পড়ে যাচ্ছে। তাও কেকেআর বোর্ডে রান তুলে দিচ্ছে। কিন্তু বোলাররা সেই রান রক্ষা করতে পারছেন না। একা নারিন। পাশে কেউ নেই।

আরও পড়ুন-চাকরিহারাদের অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু

মুম্বইকে ১০ রানে হারিয়ে কলকাতায় এসেছে দিল্লি। ফ্রেজার ম্যাকগুর্ক, স্টাবস এমন ব্যাট করছেন যে, এই দলকে দেখে মনে হচ্ছে না যে তারা প্রথমদিকে হারের মধ্যে ডুবে ছিল। পন্টিং ও সৌরভের মতো দুই মস্তিষ্ক এই দলের ডাগ আউটে। প্ল্যান এ কাজ না করলে দ্রুত প্ল্যান বি-তে চলে যাচ্ছেন এঁরা। এভাবেই ম্যাকগুর্ক এসেছে।
রবিবার ছ’টা নাগাদ মাঠে এল দিল্লি। পন্টিং মাঠে ঢুকেই সোজা চলে গেলেন উইকেট দেখতে। তিনি জানেন ম্যাচের চাবিকাঠি বাইশ গজে। ব্যাটার নয়, বোলারও নয়। ম্যাচ এখন জেতাচ্ছে উইকেট।

Latest article