আজ জিতলেই ইতিহাস

চাই আর ৮ উইকেট, রাহুলদের সামনে সিরিজ জয়ের হাতছানি

Must read

জোহানেসবার্গ, ৫ জানুয়ারি : শেষ আধ ঘণ্টায় ওয়ান্ডারার্সের গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের উপর দিয়ে একদলা মেঘ ঘুরপাক খাচ্ছে দেখে কমেন্টেটরদের মধ্যে একজন বলে উঠলেন, এই যা, কাল বৃষ্টি না বাগড়া দেয়!
ততক্ষণে এটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে, দ্বিতীয় টেস্ট (India vs South Africa) পাঁচ দিনে যাচ্ছে না। এটাও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে ঠিক যে কারণে সনাতন ক্রিকেট আজও লোকপ্রিয়তায় এক নম্বরে, সেটাই গত কয়েকদিনে ছত্রে ছত্রে প্রদর্শিত হয়েছে জোহানেসবার্গে। তবু প্রশ্ন হল, কার ভাগ্যে ঝুলে আছে বৃহস্পতিবারের ওয়ান্ডারার্স? না, এর কোনও উত্তর নেই! আপাতত একসুতোয় ঝুলে আছে এই টেস্টের ভাগ্য।

স্কোরবোর্ড বলছে তৃতীয় দিনের শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা (India vs South Africa) ১১৮-২। জিততে চাই আরও ১২২ রান। আর ভারতের চাই আট উইকেট। কিন্তু এত সহজে এমন রোমহর্ষক লড়াইয়ের ব্যাখ্যা করা যাবে না। পিটারসেনকে (২৮) অশ্বিন ফিরিয়ে দেওয়ার পর এলগার (ব্যাটিং ৪৬) ও ভ্যান ডার ডুসেন (ব্যাটিং ১১) মাটি কামড়ে যে লড়াই দিয়ে গেলেন, সেটাই টেস্ট ম্যাচ স্পেশাল। ব্যাট-বলের রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে দৃষ্টিনন্দন ক্রিকেট উঠে এল ওয়ান্ডারার্স মাঠে। ভারত জিতলে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথমবার টেস্ট সিরিজ জয় হবে। কিন্তু তাও যেন এসব তথ্য পিছনে চলে যাচ্ছে ক্রিকেটের আরও এক মহাকাব্যিক ম্যাচে। আর তাও কিনা অতিমারির ভয়াল আবহে।

রাহানে-পূজারা যতক্ষণ ছিলেন, ভারত কিন্তু ম্যাচের উপর জাঁকিয়ে বসেছিল। দুজনের ব্যাটে রান না থাকায় হালফিলে প্রচুর কথা উঠেছে। কিন্তু ওয়ান্ডারার্সের এই কঠিন উইকেটে ভীষণ দামি দুটি হাফ সেঞ্চুরি করে গেলেন এই দুজন। ৪৪ রানে দ্বিতীয় উইকেট চলে যাওয়ার পর অনেকটা সময় অবিচ্ছেদ্য থেকে গেলেন রাহানে ও পূজারা। দুজনের জুটিতে উঠে এল ১১১ রান। পরিস্থিতির বিচারে যেটা বহুমূল্য। নাহলে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের ২৬৬ রান হত কিনা সন্দেহ।

আরও পড়ুন-এগিয়ে থেকেও জয় অধরা বাগানের

রবাডা, এনগিডি আর জেনসেন তিনটি করে উইকেট নিয়ে গেলেন। এই উইকেট থেকে দেদার পেস-বাউন্স আদায় করে নেন দক্ষিণ আফ্রিকার তিন সিমার। প্রথম সেশনে ১০৩ রান তোলার পর দ্বিতীয় সেশনে ভারত তুলেছে ৭৮ রান। পূজারা নিজের পরিচিত খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে এসে এদিন অনেক বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন। তাঁর ৫৩ রানের ইনিংসে বাউন্ডারি ছিল দশটি। তাঁর পাশে রাহানের ৫৮ রানে ছিল আটটি বাউন্ডারি ও একটি ওভার বাউন্ডারি।

কিন্তু এই দুজন ফিরে যাওয়ার পর ভারতীয় ব্যাটিং কার্যত হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছে। ঋষভ পন্থ (০) যেভাবে উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে গেলেন, তাতে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, স্পেশ্যালিস্ট কিপার ঋদ্ধিমান সাহাকে আর কতদিন ঋষভের ব্যাটিংয়ের কথা বলে বাইরে রাখা হবে! তবু শেষদিকে হনুমাবিহারী (৪০) আর শার্দূল ঠাকুর (২৮) ভারতকে টানলেন। দুজনে মিলে ৩৮ রান যোগ করেছেন। না হলে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে ২৪০ রানের টার্গেট ঝুলিয়ে দেওয়া যেত না।

Latest article