চাপের মুখে পিছু হঠল কেন্দ্র

বস্ত্রশিল্পে জিএসটি বৃদ্ধি স্থগিতের পিছনে বাংলার প্রতিবাদ, ব্যবসায়ী ধর্মঘট, পাঁচ রাজ্যে ভোটের অঙ্ক

Must read

প্রতিবেদন : গত কয়েকদিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল, বস্ত্রশিল্পের (Textile Industry) উপর জিএসটির হার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২ শতাংশ করা হবে। কিন্তু কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। রাজ্য সরকারের আর্থিক উপদেষ্টা অমিত মিত্র কেন্দ্রকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বস্ত্রশিল্পে জিএসটির হার ১২ শতাংশ করা হলে অর্থনীতির পক্ষে তা অত্যন্ত ক্ষতির কারণ হবে। বহু মানুষ কর্মহীন হবেন৷ শেষ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যের আপত্তি, দিল্লিতে বস্ত্র ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট ও হুমকি এবং পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে জিএসটি সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে এল নরেন্দ্র মোদি সরকার। তবে রাজনৈতিক মহলের অনেকেই মনে করছেন, উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে ভরাডুবির আশঙ্কা থেকেই মোদি সরকার এখনই বস্ত্রশিল্পের উপর জিএসটির হার বাড়াচ্ছে না। কারণ এমনিতেই মোদি সরকার কৃষি আইন নিয়ে বড় মাপের ধাক্কা খেয়েছে। মাস দুই আগে দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে ৩০টি বিধানসভা ও কয়েকটি লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনেও মুখ থুবড়ে পড়েছে গেরুয়া শিবির। তাই আগামী বছরের শুরুতেই পাঁচ রাজ্যে নির্বাচনের আগে বাড়তি কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না কেন্দ্র।

আরও পড়ুন-চিরদিন মানুষের সঙ্গে মমতাদি

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের নেতৃত্বে জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠক হয়। এই বৈঠকে অর্থমন্ত্রী বলেন, বস্ত্রশিল্পের (Textile Industry)) উপর জিএসটির বর্তমান হার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২ শতাংশ করা হোক। কিন্তু বেশিরভাগ রাজ্যের পক্ষ থেকেই এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করা হয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকেও কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করা হয়। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আর্থিক উপদেষ্টা অমিত মিত্র কেন্দ্রকে চিঠি লিখে জানান, এভাবে বস্ত্রশিল্পের উপর জিএসটির হার দ্বিগুণেরও বেশি বাড়ানো হলে পোশাকের দাম অনেক বাড়বে। যা আমজনতাকে চরম সমস্যায় ফেলবে। বিশেষ করে করোনাজনিত পরিস্থিতিতে এমনিতেই মানুষ প্রভূত সমস্যায় আছে। তার ওপর নতুন করে সমস্যা আরও বাড়লে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠবে। বস্ত্রশিল্পের উপর জিএসটির হার বাড়লে গোটা সমাজে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বস্ত্রশিল্পে জিএসটির হার বাড়লে ছোট ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই বস্ত্রশিল্পে জিএসটির হার অপরিবর্তিত রাখা হোক। শেষ পর্যন্ত অমিত মিত্রর পরামর্শ এবং বিরোধীদের প্রবল আপত্তিতে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন পিছু হটতে বাধ্য হন। এরপর বস্ত্রশিল্পে জিএসটির হার ৫ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হল কেন্দ্রীয় সরকার৷

হিমাচল প্রদেশের শিল্পমন্ত্রী বিক্রম সিং বস্ত্রশিল্পের উপর জিএসটি হার অপরিবর্তিত রাখার কথাটি ঘোষণা করেছেন। তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, রাজ্যগুলি বিরোধিতা করেছে এটা যেমন ঠিক, তেমনই আগামী বছরের শুরুতেই পাঁচ রাজ্যের নির্বাচন বিজেপির মাথাব্যথার বড় কারণ। কৃষি আইন নিয়ে জেদাজেদির পরিণতি থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার আগেভাগেই কিছুটা সতর্ক কেন্দ্র৷

Latest article