প্রতিবেদন : নতুন বছরে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কড়া নিয়মের বাঁধনে শিক্ষক, পড়ুয়া এবং শিক্ষাকর্মীরা। স্কুলে নিয়মানুবর্তিতা এবং শৃঙ্খলাপরায়ণতার প্রশ্নে পর্ষদের আপসহীন মনোভাব প্রতিফলিত হল প্রকাশিত নয়া নির্দেশিকায়। একদিকে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য, অন্যদিকে পড়ুয়া এবং শিক্ষাকর্মীদের জন্যও বেঁধে দেওয়া হয়েছে সুনির্দিষ্ট আচরণবিধি। দেওয়া হয়েছে সতর্কবার্তা এবং কিছু পরামর্শও। সচেতন করা হয়েছে শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের দায়িত্ব সম্পর্কেও।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
সবমিলিয়ে রাজ্যের স্কুলশিক্ষায় উজ্জ্বল ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে নতুন বছরে অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিচ্ছে রাজ্য। সোমবার নতুন শিক্ষাবর্ষের নতুন অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সেইসঙ্গে বিস্তারিত নির্দেশিকাও। কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছে হাজিরার ব্যাপারে। পর্ষদসূত্রে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের স্কুলে হাজির হতে হবে সকাল ঠিক ১০টা ৪০ মিনিটের মধ্যে। এরপর অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে ১০ মিনিটের প্রার্থনায়। ক্লাস চলবে বিকেল সাড়ে ৪টে পর্যন্ত। সবমিলিয়ে ৮টি পিরিয়ড। সকাল ১১টা ০৫ মিনিটের পরে স্কুলে ঢুকলে গরহাজির বলে গণ্য করা হবে। শিক্ষক-শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মীদের সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে ব্যবহারের প্রশ্নেও। বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে ক্লাসের মধ্যে মোবাইল ব্যবহারের ক্ষেত্রে। প্রকাশ করা হয়েছে ছুটির তালিকা। কিন্তু বিশেষ ছুটি দেওয়ার ক্ষমতা আর থাকছে না প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হাতে। এতদিন বছরে বাড়তি ৩ দিন ছুটি দেওয়ার ক্ষমতা ছিল তাঁদের হাতে। নতুন বছরের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডারের সঙ্গে এমন গাইডলাইন এককথায় অভূতপূর্ব উদ্যোগ।
আরও পড়ুন-কপালকুণ্ডলা মন্দির, তৎপর হেরিটেজ কমিশন
শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আচরণবিধি
শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স্কুলে ঢুকতে হবে সকাল ১০টা ৪০ এর আগেই।
১০-৫০ মিনিটের পর ঢুকলে লেটমার্ক।
শিক্ষক-শিক্ষিকারা ১১-০৫ মিনিটের পরে স্কুলে ঢুকলে অনুপস্থিত হিসেবে গণ্য হবেন।
১০টা ৪০ থেকে ১০ মিনিট প্রার্থনা। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সেখানে উপস্থিতি বাধ্যতামূলক।
১০টা ৫০ থেকে শুরু হবে ক্লাস। চলবে বিকেল সাড়ে ৪টে পর্যন্ত। মোট ৮টি পিরিয়ড।
ক্লাস চলার সময় কোনওভাবেই মোবাইলে কথা বলতে পারবেন না শিক্ষক-শিক্ষিকারা। মোবাইল ফোন বা স্মার্টফোন ব্যবহার করতে চাইলে লিখিত অনুমতি নিতে হবে প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকার কাছ থেকে।
বিশেষ ছুটি দেওয়ার ক্ষমতা থাকছে না প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হাতে।
প্রত্যেক শিক্ষক-শিক্ষিকাকেই প্রতিনিধিত্ব করতে হবে স্বাধীনতা দিবস, সাধারণতন্ত্র দিবস এবং স্কুলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলিতে।
শিক্ষক-শিক্ষিকারা কোনওরকম ব্যবসা বা আর্থিক সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন না।
পড়ুয়াদের সঙ্গে আচরণের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।
স্কুলে বা স্কুলের বাইরে এমন কোনও ব্যবহার করা চলবে না যাতে তাঁদের পদের মর্যাদাহানি হয়।
আরও পড়ুন-করফাঁকি! ২ কোটির নোটিশ তাজমহলকে
আচরণবিধি অশিক্ষক কর্মীদের জন্যও
স্কুলে অবশ্যই ঢুকতে হবে সকাল ১০টা ৪০ এর আগে।
উপস্থিতি জরুরি প্রার্থনা-সভায়।
১০টা ৫০ এর পর ঢুকলে পড়বে লেটমার্ক।
ঘড়ির কাঁটা ১১টা ০৫ মিনিট পার হলেই সেদিনের উপস্থিতি আর গণ্য করা হবে না। হাজিরা খাতায় তিনি অনুপস্থিত।
স্কুল ছুটি হওয়া পর্যন্ত থাকতে হবে সকলকেই।
কর্তৃপক্ষকে নির্ধারিত কাজ শেষ করতে হবে যথাসময়ে।
নিয়ম মেনে আবেদন মঞ্জুর হলে তবেই ছুটি নেওয়া যাবে। কর্তৃপক্ষকে অন্ধকারে রেখে খেয়ালখুশিমতো আচমকা গরহাজির থাকা চলবে না। জরুরি কারণে গরহাজির থাকলে নিয়ম মেনে সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা জানাতে হবে কর্তৃপক্ষকে। এবং পড়ুয়াদের জন্যও
নিয়মানুবর্তিতা এবং শৃঙ্খলাপরায়ণতা রক্ষায় যত্নশীল হতে হবে পড়ুয়াদের।
সঠিক সময়ে স্কুলে প্রবেশ করে প্রার্থনা এবং প্রতিটি ক্লাসে উপস্থিত থাকতে হবে ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে তাল মিলিয়ে।
স্কুলে অযথা অনুপস্থিতি চলবে না।
শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কথা শুনতে হবে মনযোগ দিয়ে।
সহপাঠীদের সঙ্গে আচরণেও হতে হবে যত্নশীল।