প্রতিবেদন : রাজ্য নির্বাচন কমিশনার পদে রাজীব সিনহার নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে জনস্বার্থ মামলা সোমবার খারিজ করে দিল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের যুক্তি, আসলে মিডিয়ায় প্রচার পেতেই দায়ের করা হয়েছিল এই মামলা। মোটেই খর্ব হয়নি মানুষের স্বার্থ। স্পষ্টতই বিরক্তি প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চ। এদিন হাইকোর্টে একের পর এক ধাক্কায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে গভীর অস্বস্তিতে বিরোধী শিবির।
আরও পড়ুন-রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গের অভিযোগ, কমিশনকে চিঠি তৃণমূল কংগ্রেসের
একটি নয় পরপর ৪টি মামলাতেই প্রবল ঝাঁকুনি-বিরোধী শিবিরে। রাজীব সিনহার নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ জানানো জনস্বার্থ মামলার যে কোনও সারবত্তা নেই তা আদালতের পর্যবেক্ষণেই স্পষ্ট। এই মামলাটি ছাড়াও হাইকোর্ট এদিন খারিজ করে দিয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দফা বাড়ানোর জন্য বিরোধীদের আর্জি, ভাঙড়ে ১৯ সিপিএম প্রার্থীকে দ্বিতীয়বার মনোনয়নপত্র দাখিলের সুযোগ দেওয়ার জন্য একক বেঞ্চের নির্দেশ এবং পঞ্চায়েত ভোট বন্ধ রেখে রাজ্যে জরুরি অবস্থা জারির আর্জি।
আরও পড়ুন-দুর্নীতির মামলার ভয়েই দলবদল, ইডিকে ব্যবহার করে মহারাষ্ট্রে ‘অপারেশন কমল’ বিজেপির
রাজ্যে মোট ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকছে। সঙ্গে ৭০ হাজার রাজ্য পুলিশ। ৪৮৩৪টি বুথ স্পর্শকাতর। কমিশনের কন্ট্রোল রুম নম্বর : ১৮০০৩৪৫৫৫৫৩
এদিন হাইকোর্টে বিরোধী শিবিরে দ্বিতীয় জোরদার ধাক্কা, কমিশনের নির্দেশমতো এক দফাতেই হবে নির্বাচন। সোমবার শুনানির শেষে জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ। সেই সঙ্গে খারিজ হয়ে গেল বিরোধীদের দফা বাড়ানোর যাবতীয় আর্জি। এদিন মামলা চলার সময়ই কেন্দ্রের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় কমিশনের চাহিদামতোই ৩৩৭ কোম্পানির পর বাকি ৪৮৫ কোম্পানি বাহিনীও দেওয়া হবে। এরপরেই আদালত জানিয়ে দেয় তাহলে আর দফা বাড়ানোর প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ ৮২২ কোম্পানি বাহিনী দিয়েই হবে পঞ্চায়েত নির্বাচন। একই সঙ্গে স্পর্শকাতর বুথের তালিকাও আদালতে পেশ করে কমিশন। সোমবার সকালে কলকাতা হাইকোর্টে পঞ্চায়েত নির্বাচনে আদালত অবমাননার মামলার শুনানি শুরু হয়। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে হলফনামা জমা দেয় কমিশন।
আরও পড়ুন-হিংসার জন্য সোশ্যাল মিডিয়াকেই দায়ী করলেন ম্যাক্রোঁ
বিরোধী শিবিরে তৃতীয় ধাক্কা বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দিল ভাঙড়ের ১৯ সিপিএম পঞ্চায়েত প্রার্থী দ্বিতীয়বার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সুযোগ পাবেন না। প্রার্থীদের আবেদনের ভিত্তিতে বিচারপতি অমৃতা সিনহা রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে ১৯ জনকে দ্বিতীয়বার মনোনয়নপত্র পেশ করার সুযোগ দিতে হবে। এই নির্দেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। সোমবার বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ খারিজ করে দিল একক বেঞ্চের নির্দেশ। এদিনই হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিল আইএসএফের ৮২ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে না।
আরও পড়ুন-শহরে এলেন মার্টিনেজ
পঞ্চায়েত নির্বাচন বন্ধ করার আর্জি জানিয়ে দায়ের করা জনস্বার্থ মামলাও খারিজ করে দিয়েছে প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে শুধুমাত্র নির্বাচন বন্ধের আর্জি নয়, রাজ্যে জরুরি অবস্থা জারি করারও আবেদন জানিয়েছিলেন মামলাকারী। কিন্তু সেই আর্জিও খারিজ করে আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, আদালত এই সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।
আরও পড়ুন-উত্তর ২৪ পরগনায় উন্নয়নের ফ্লাডগেট খুলে গিয়েছে
এদিকে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ মামলায় আদালতের পর্যবেক্ষণের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে। বলা হয়েছে, হাইকোর্ট যদি মনে করে যে মিডিয়ায় প্রচার পেতেই এই জনস্বার্থ মামলা, তবে অবশ্যই শিক্ষা নেওয়া উচিত তা থেকে।