বাম জমানায় উন্নয়ন বলতে কিছুই ছিল না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার গড়ার পরই উন্নয়নের দ্বার খুলে গিয়েছে। বিশেষ করে গ্রামীণ সড়কের উন্নয়নে শহর-গ্রামে মেলবন্ধন ঘটেছে, গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হয়েছে। বেড়েছে পর্যটনের সম্ভাবনা। গত পাঁচ বছরের সেই উন্নয়নেরই খতিয়ান
যোগাযোগ : ১৩৫১ কোটি টাকায় বড় রাস্তা হয়েছে ৯৮টি। রাস্তাশ্রী পথশ্রী প্রকল্পে ১৫৪ কোটির বেশি খরচে ৪২৪টি রাস্তা হয়েছে। দৈর্ঘ্য ৫৪৩.২৯ কিলোমিটার। সেতু হয়েছে ১৬টি। ৭২৭২ কোটি খরচে।
আরও পড়ুন-যে উন্নয়ন করেছে তাকেই ভোট, বললেন ত্বহা সিদ্দিকি
চিকিৎসাক্ষেত্র : দুটি মেডিক্যাল কলেজ— কলেজ অফ মেডিসিন সাগর দত্ত হাসপাতাল ও বারাসাত সরকারি মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল। সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল দুটি। তাতে মধ্য বনগাঁর ডক্টর জে আর ধর মহকুমা হাসপাতাল নবতম সংযোজন। এসএনসিইউ সংখ্যা পাঁচ, শয্যা একশোর উপরে। বনগাঁ জেলা হাসপাতাল, বারাকপুর জেলা হাসপাতাল, সল্টলেক মহকুমা হাসপাতাল, হাবড়া, বরানগর, পানিহাটি, শ্রীবলরাম, নৈহাটি, অশোকনগর, ভাটপাড়ায় স্টেট জেনারেল হাসপাতাল রয়েছে। বাগদা ও আমডাঙায় গ্রামীণ হাসপাতাল, বসিরহাট মহকুমা হাসপাতাল। সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সংখ্যা ৮৭৩।
আরও পড়ুন-শহরে এলেন মার্টিনেজ
শিক্ষা : নতুন মডেল স্কুল একটি, বারাসাত ১ নম্বর ব্লকের কদম্বগাছিতে উত্তর ২৪ পরগনা মডেল মাদ্রাসা। সাত নতুন আইটিআই— হালিসহর, বারাসাত ১, গাইঘাটা, বাগদা, হাড়োয়া, আমডাঙা ও হিঙ্গলগঞ্জে। নতুন পলিটেকনিক তিনটি— গাইঘাটা পলিটেকনিক কলেজ, স্যার রাজেন্দ্র পলিটেকনিক কলেজ, বসিরহাট ভ্যাবলা গভর্নমেন্ট স্পন্সরড আদ্যাপীঠ। নতুন প্রাথমিক স্কুল ১৭টি। আপার প্রাইমারি ২০৮টি। হাইস্কুলে উন্নীত ১১, হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে উন্নীত ১১৪টি।
পাট্টাবিলি : জমির পাট্টা পেয়েছেন ১০,৫৩৭ জন (এগ্রি ৩,৮৬৮, এনজিএনবি ৬,৬৬৯)। উদ্বাস্তু পাট্টার উপভোক্তা ৬,৬৩০ জন।
শিল্পসাহায্য : এমএসএমইটি বা মাইক্রো, স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড টেক্সটাইলস ইউনিটের সংখ্যা ৭২,০০৫। কর্মরত ৭,৬০,৩৫৭ জন, ক্লাস্টারের সংখ্যা ২৭।
আরও পড়ুন-খোয়াজা-কাণ্ডে এমসিসির কড়া শাস্তি, সিরিজে নেই লিওন সাসপেন্ড তিন সদস্য
জল : জলস্বপ্ন সুবিধা পেয়েছে ১৪,৯৪,৯২২টি বাড়ি। এ বছরে আরও ৫,৭৬,৩৯৩টি বাড়িতে এই সুবিধা পৌঁছবে। অন্যান্য বড় জলপ্রকল্প থেকে উপকৃত হয়েছে হাবড়া গাইঘাটার পাঁচটি ব্লক ও চারটি পুরসভার মানুষ।
ভাতা প্রাপক : পেনশন উপভোক্তার সংখ্যা, বার্ধক্যভাতা ১,৭৮,৩৬০ জন, বিধবাভাতা ১,৬৭,৩৪১ জন, মৎস্যজীবী ভাতা ১,৮৩১ জন। জয় জোহার পেয়েছে ৩,৮৪৮ জন। তফসিলি বন্ধু পেয়েছেন ৮৮,১৪০ জন।
দুয়ারে সরকার : মোট আবেদন জমা পড়েছিল ৬২,৯১,৫৩২। পরিষেবা দেওয়া হয়েছে ৫২,২২,২৯১টি। পাড়ায় সমাধানে মোট কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে ৪,১৪০। সমাধান হয়েছে ৩,৮৬৩, বাকিগুলি সমাধানের পথে।
আরও পড়ুন-বকেয়া আদায়ে মোদিকে চ্যালেঞ্জ করে অভিষেক জানলেন ‘দম হ্যায় তো রোখকে দিখাও’
স্পোর্টস কমপ্লেক্স : মাল্টিজিম ৩৮১, স্টেডিয়াম ৪, ট্রেনিং সেন্টার ১, মিনি ইনডোর কমপ্লেক্স ২৮ ও খেলার মাঠ ২৪টি।
জনমুখী প্রকল্প : লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পেয়েছেন ২০,২৩,৮০৬ জন, প্রদত্ত টাকার পরিমাণ ১১২ কোটি টাকার বেশি। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পেয়েছেন ২৩,৮৩,২২৩ জন। কৃষকবন্ধু পেয়েছেন ৪২,০৯,৯৭৩ জন উপভোক্তা। সমব্যথী ৬,২২৯ জন। কন্যাশ্রী প্রকল্পে উপকৃত ২৭,০৩,৫৭৩ জন ছাত্রী। সবুজসাথী সাইকেল পেয়েছে ১০,৯২,৯০৪ ছাত্রছাত্রী। জেলায় সবথেকে ভালো কাজ হয়েছে মহিলাদের স্বনির্ভর প্রকল্প আনন্দধারায়। এই প্রকল্পের সাফল্যে একাধিক পুরস্কার ছিনিয়ে এনেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা।
পর্যটন : ২৬টি হোমস্টে করা হয়েছে। জেলার বহু দর্শনীয় জায়গা পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় করে তোলা হয়েছে ২৮ কোটি টাকা খরচ করে। ফলে পর্যটকের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। ২০২৩-এর মে মাসে জেলায় পর্যটকের সংখ্যা ১,২৩,৯৫২। ফলে জেলার অর্থনীতি আরও চাঙ্গা হচ্ছে।
আরও পড়ুন-বকেয়া আদায়ে মোদিকে চ্যালেঞ্জ করে অভিষেক জানলেন ‘দম হ্যায় তো রোখকে দিখাও’
রাজস্ব : গত অর্থ বর্ষেই জেলা পরিষদের ভূমি দফতরের রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা।
সামাজিক কাজ : ১৫০ হেক্টর এলাকায় ম্যানগ্রোভ লাগানো হয়েছে। বৃক্ষরোপণ হয়েছে ২৬ হেক্টরে। ৫৬০৮০টি শৌচালয় হয়েছে। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ১০৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতে জায়গা চিহ্নিত হয়েছে। ৫৭ কমিউনিটি টয়লেট হয়ে গিয়েছে, ১০১টির কাজ চলছে। জেলায় প্রথম গোবরগ্যাসের জন্য হাবড়া ২ নম্বর ব্লকে কাজ চলছে। প্লাস্টিক ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টে একটির কাজ শেষ, আরেকটির কাজ চলছে। আরও ৬টির রূপরেখা তৈরি। সেপটিক ট্যাঙ্কের বর্জ্য থেকে সার তৈরি এফএসটিপি প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ রাজারহাটে হচ্ছে। গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়নে অর্থনৈতিক পরিকাঠামো আড়াই মাসে ২২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আনন্দধারা প্রকল্পে দলের সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়েছে। শেষ কয়েক মাসে দলগুলিকে হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। সংখ্যালঘু উন্নয়নে জোর দেওয়া হয়েছে। সংখ্যালঘু এলাকায় তৈরি কর্মতীর্থগুলি হস্তান্তর করা হয়েছে।