মুহূর্তম্ জ্বলিতম্ শ্রেয়ঃ/ন তু ধূমায়িতম্ ক্রোরম্ । ধোঁয়া কালি মাখানো দীর্ঘ জীবনের বদলে ক্ষণিক স্ফুলিঙ্গ নিশ্চয় শ্রেয়। এক্ষেত্রে ঈশ্বরের পরম মমতায় এক ক্ষণিক স্ফুলিঙ্গের চেয়ে বেশি পেয়েছেন, এক আলোকিত দীর্ঘজীবন। পায়ের তলায় চাকা লাগিয়ে ঘুরেছেন নিজের দেশের কত জায়গা, ভুবন গ্রামের কত পাড়া। ভালোবাসার বারান্দায় বসে উপচে পড়া জীবনীশক্তি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন ফুরফুরে হালকা অথচ ওজনদার সাহিত্য। মহিলা কলমজীবীদের নিয়ে গড়েছেন ‘সই’। কৌতুকময় এক ছদ্ম গাম্ভীর্যের আড়ালে কখনও তাঁর সেই বিখ্যাত কাঁচা-পাকা চুলের আর বড় টিপের সাজে চশমার মধ্যে দিয়ে বুদ্ধিদীপ্ত ঝকঝকে দুটি চোখ তুলে তাকিয়েছেন নবনীতা। কবি-দম্পতি নরেন্দ্রনাথ ও রাধারাণী দেবের একমাত্র কন্যা নবনীতা দেব— নবনীতা দেবসেন (Nabaneeta Dev Sen)।
যাদবপুরে বুদ্ধদেব বসুর হাতে গড়া ভারতবর্ষের প্রথম তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের প্রথম বছরের রোল নম্বর এক ছাত্রী নবনীতা। পড়াতেন বুদ্ধদেব, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, গৌরী শাস্ত্রী, ফাদার আনতোয়ানের মতো দিকপালেরা। ১৯৫৮ সালে এমএ পরীক্ষায় শুধু তুলনামূলক সাহিত্য নয়, মেয়েদের মধ্যে প্রথম স্থানাধিকারীর স্বর্ণপদক। পরের বছরই তাঁর প্রথম কবিতার বই ‘প্রথম প্রত্যয়’।
নবনীতার (Nabaneeta Dev Sen) মধ্যে সৃষ্টির উন্মাদনার প্রথম বীজ যদি জিনের প্রবাহে আসে তাহলে সে-চারাগাছ বেড়ে ওঠে যাদবপুরের ছোঁয়ায়। যাদবপুরের পড়ুয়াদের তিনি বলতেন যদুবংশ। শিল্পে, সমালোচনায়, অনুবাদে সদা সাহিত্য পরিবৃত নবনীতা তখন সবে টিন পেরিয়েছেন। গাড়ি চালানো, বাস্কেটবল, সাঁতার, ডিবেট— জীবনের আনন্দ তখন আকাশ ছুঁতে চাওয়া উত্তাল। অর্থনীতি বিভাগের তরুণ অধ্যাপক অমর্ত্য সেনের সঙ্গে একসঙ্গে পথচলার শপথ নেওয়ার শুরু। হাভার্ড-কেমব্রিজের সাহিত্য পড়ুয়া ছাত্রী হাত ধরেন অর্থনীতির। দু’জনেরই নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেওয়া। বেশ কিছুটা পথ একসঙ্গে চলাও হয়। অন্তরা ও নন্দনার আগমন পূর্ণ করে জীবন। কিন্তু জগতের আনন্দযজ্ঞে একবার যাঁর নেমন্তন্ন এসে যায়, তাঁর কিন্তু সংসার সুখের পঙ্ক্তি ভোজে আর নেমন্তন্ন থাকে না। তাই দেড় দশকের একসঙ্গে চলার পথ দুটো বিপরীত দিকে ঘুরে যায়। একটা পশ্চিমে একটা পুবে।
‘বিস্মৃত অরণ্যে যখন বিষাদিত শীতেরা নেয় বিদায়’- এর মালার্মে থেকে রিলকের দুইনো এলিজির পথ স্বচ্ছন্দে পেরোনো নবনীতার (Nabaneeta Dev Sen) চরিত্রে কিন্তু কোথাও বিষাদের ছোঁয়া নেই। তাঁর নিজের ভাষায়— এদিকে আমার চরিত্রে একটা প্রবল দুর্বলতা আছে, আমি পজিটিভ থিঙ্কিংয়ে বিশ্বাস করি। নেগেটিভ ভাবনায় জীবনের রং যেন আরও ময়লা, আরও ঘোলাটে হয়ে যায়। মনেরও এখন ভাল থাকার উপায় নেই, যা মনোদূষণ চলছে জগৎজুড়ে। আলগা হওয়া সম্পর্ক ভেঙে গেছে কিন্তু পরস্পরের মধ্যে শ্রদ্ধাবোধের অভাব হয়নি। এটাই নবনীতার চরিত্রের পজিটিভ ভাইভস।
আসলে জীবনকে নবনীতা উপভোগ করেছেন প্রতিটি পলে— প্রেমে, বিরহে, সুখে, দুঃখে। এমনকী নিজের অসুস্থতাকে সযত্নে রসসিক্ত করে পরিবেশন করতে যিনি পারেন তিনি একমাত্র নবনীতা। গত শতাব্দীর সাতের দশকে একা বাঙালি মহিলা কুম্ভমেলা যাচ্ছে কিংবা তাওয়াং যাচ্ছে তাও রেশন ট্রাকে চড়ে এটা ভাবতে পারলে, সে মহিলার নাম নিশ্চয়ই ড. নবনীতা দেবসেন। ভাবতে পারা যায় কি মাছধরাপ্রিয় শ্বশুরকে চারসমেত বউমা ভোর চারটেয় উঠে, গাড়ি চালিয়ে নামিয়ে দিয়ে যাচ্ছে মিরাটের কোনও জলাশয়ে কিংবা দিল্লির বাইরে যমুনার কোনও অংশে এবং ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সন্ধ্যাবেলায়!
ভাবতে কি এটাও পারা যায় নাকি, ১৯৩১ সালে, স্বাধীনতার দেড় দশক আগে লিলুয়ার দেবালয়ে এমন একটি বিবাহ ঘটবে যা সবদিকে বৈপ্লবিক! বিয়ের কনে আসছে বরের বাড়ি বিয়ে করতে। কনে সম্প্রদান করছেন পাত্রী নিজেই— আত্মসম্প্রদান। মেয়ে বিয়ে করতে আসছে তার শ্বশুরবাড়ি থেকে। বিদ্যাসাগরের প্রচেষ্টা সফল। এর প্রায় অর্ধশতক পরে স্বাধীন ভারতে এক কালজয়ী সিনেমাতেও নির্দেশক সাহস করে তার এক নায়ক চরিত্রকে বাঁচিয়ে রাখতে পারেননি কারণ নায়কের একজন বিধবাকে ভাল লেগেছিল। সেই একই দেশে সেই যুগে কবি রাধারাণী আর কবি নরেন্দ্র দেবের বিবাহ সময়ের থেকে যথেষ্টই এগিয়ে ছিল।
নবনীতার মা রাধারাণীর জীবন একেবারেই অন্যরকম, পুরোপুরি সাহসী উপন্যাসের চরিত্র। বিংশ শতকের শুরুর দিকেই এসেছেন পৃথিবীতে। সাহিত্য পরিবেশে বড় হয়েছেন, কলমও ধরেছেন। তেরোয় বিয়ে, কিছুদিনের মধ্যেই স্বামীর মৃত্যু। মায়ের গোঁড়ামিতে কঠোর বৈধব্য পালন। শাশুড়ির সান্নিধ্যে স্বাভাবিক জীবন যাপনের আশকারা, যেন উল্টো পুরাণ। সাহিত্যচর্চায় বিশেষ অগ্রগতি। রবীন্দ্র, শরৎ স্নেহধন্য রাধারাণীর জীবনে প্রেম আরও একবার এসেছিল রীতিমতো সরবে। আত্মীয় কবি নরেন্দ্র দেবকে বিবাহ করলেন। কবি রাধারাণী দেবী অপরাজিতা দেবী ছদ্মনামে অনেক ক’টি কাব্যগ্রন্থ রচনা করেছিলেন। উজ্জ্বল নীলমণি থেকে অষ্টনায়িকাকে বেছে নিয়ে তিনি ড্রামাটিক মনোলগে তাদের অবস্থা বর্ণনা করেছিলেন। বাংলা সাহিত্যে এমন কাজ এখনও কেউ করেনি। কবি-দম্পতির বালিগঞ্জ প্লেসের ভালোবাসা নামক বাড়িতে ১৯৩৮-এর ১৩ জানুয়ারি এলেন খুকু। বিয়ের সময় রবীন্দ্রনাথের দেওয়া নবনীতা (Nabaneeta Dev Sen) নামটি রাধারাণী প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। এখন খুকু হল নবনীতা— সম্ভবত তিনি পেন হাতে নিয়েই জন্মেছিলেন।
নবনীতার বাড়ির নামটি ছিল ভালোবাসা। আর ভালোবাসা নামক বাড়ির বারান্দায় নবনীতার কলমে ঝরেছে মুক্তো কখনও ঝরেছে রক্ত। কলম কখনও শাণিত তরবারি হয়ে আঘাত করেছে চেতনাকে। মারাত্মক একটা টপিক, ধর্ষণের প্রেক্ষাপটে লেখা। লেখকের সমাজচেতনা কীভাবে মেয়েদেরকে হীনমন্যতার থেকে বাঁচাছেন তাঁর দলিল তাঁর কলম। ‘ধর্ষণ তোমার নিজের অপরাধ নয় তার দায় নিয়ে তোমার মৃত্যুবরণ করার কোনো প্রয়োজন নেই। তোমার আত্মপরিচয় এতে এতটুকুও বদলে যায়নি। গাড়ি চাপা পড়েও মানুষ বেঁচে ওঠে, সুস্থ হয়ে কাজে ফিরে যায়। ও বেদনার স্মৃতি তুমি যত তাড়াতাড়ি পারো ভুলে যাও।’
১৯৫৬-তে যেখানে ছাত্রী ছিলেন তিনি, সেই যাদবপুরের তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের প্রধান হয়ে ফিরেছেন তিনি তিন দশক পরে। কবিতার পথে তিনি হেঁটেছেন দশকের পর দশক। কিন্তু কবি যখন গদ্যের সভায় গেছেন, তখন একটুও বেমানান লাগেনি। বরং গদ্যের জগতে বিস্তার করেছেন নিজের আভিজাত্য। ষাটের দশকের নকশাল আন্দোলনে উত্তাল বাংলা নাড়িয়ে দিয়েছিল তাঁর কবিমনকে। সেই পটভূমিতেই নবনীতার প্রথম উপন্যাস আমি অনুপম। কবিতার নরম কলম সরিয়ে তখন যেন গদ্যের ধারালো তরোয়াল। বয়স হলেও প্রতিবাদ করে গেছেন। কয়েক বছর আগে যখন মুক্তমনা সাহিত্যিকদের ওপর হামলা হয়েছে, তখনও তিনি গর্জে উঠেছিলেন। জ্বলন্ত পাখনা থেকে আগুন ঝেড়ে ফেলে আবার আকাশ স্পর্শ করার সাহস পেয়েছিলেন ব্যদালিয়র থেকে, বুদ্ধদেবের হাত ধরে।
আরও পড়ুন- ভিন্নধর্মী ওয়েব সিরিজ
‘পিঙ্গল আকাশে ঝড়ের বীজ বেড়ে ওঠে,
পান করি, কম্পিতবিহবলমোহময় কোমলতা,
আর এক মর্মঘাতী সুখ।
রশ্মি জ্বলে… রাত্রি ফের!
মায়াবিনী, কোথায় লুকোলে?
আমাকে নতুন জন্ম দিলো যার দৃষ্টির প্রতিভা—
আর কি হবে না দেখা ত্রিকালের সমাপ্তি না হলে
অন্য কোথা, বহু দূরে! অসম্ভব!
নেই আর সময় বুঝি বা!
পরস্পর–অজ্ঞতায় সরে যাই–আমারই
যদিও কথা ছিলো তোমাকে ভালোবাসার, জানো তা তুমিও!’
পরস্পরকে জানার এই আকুলতা আসে তুলনামূলক সাহিত্যের আঙিনা থেকে। সাহিত্য দেশ কাল ছাপিয়ে যায়। অনুবাদ সাহিত্যে প্রসার ক্ষেত্রে বড় অবদান রেখে যায়। ব্যাপ্তি আর প্রসার না হলে বদ্ধ জলে মৃতপ্রায় হয়ে হাঁফিয়ে মরে ভাষা। তাই নবনীতা (Nabaneeta Dev Sen) বলেন— ভাষার কাজ ‘যথাযথ’র যতটা কাছাকাছি পৌঁছনো যায়। ভাষার চরিত্রই হল দিনে দিনে বদলে যাওয়া। সেই বদল কোন দিকে যাচ্ছে আমাদের খেয়াল রাখতেই হবে। নতুন ভাষা তৈরি করুন, মুক্ত ভাষা তৈরি করুন।
ক্রিয়েটিভিটি ছিল তাঁর জন্মলগ্নের নক্ষত্র। পশ্চিমবঙ্গের লেখিকা গোষ্ঠী সই পাতানো নবনীতা, সই বই প্রকাশক নবনীতা, সইমেলা-বইমেলার আয়োজক নবনীতা, সই-এর মুখপত্র সই-সাবুদ প্রকাশের জায়গাও নবনীতার ভালোবাসার বারান্দা। ঋতুপর্ণের ডাকে রবিবার নামক ম্যাগাজিনে লিখতেন ছোট্ট নিয়মিত কলম— ভালোবাসার বারান্দা। লেখক নবনীতার পাশে ব্যক্তি নবনীতাকে চেনার জন্য এই একটি লেখা একাই একশো। যেন রোজের লেখা ডায়েরি। দুনিয়ার মানুষ তাঁর বন্ধু। কত শত সাহিত্য সভায় ডাক এসেছে— ভালবেসে সেগুলোকে বলতেন সভাপর্ব। নিজেকে বলেছেন বাগ্মী নই বাচাল। এক অনন্য লেখক নবনীতা, যাঁর প্রতিটি লেখা পড়ার পর মন ভাল হয়ে যায়। তাঁর লেখার গুণে জটিল তত্ত্বকথাও হয়ে যায় সহজপাঠ। নিত্যদিনের কাহিনিরা হয় গল্প, আর পাশে থাকা মানুষেরা গল্পের চরিত্র। বন্ধু সুনীলের উপন্যাসের শিরোনাম সামান্য বদলে দিলেই নবনীতাকে সঠিক চেনা যায়— এক নারী, দুই হাতে তরবারী।
সবদিকে সেরা হওয়াটা নবনীতার ছিল মজ্জাগত। কৃত্তিবাস যুগের কবি হয়েও সবার থেকে আলাদা। নারীবাদ তাঁর অহঙ্কার নয়, অলঙ্কার। ভ্রামণিক নবনীতা সবার বিস্ময়। হায়দরাবাদের সেমিনার থেকে উঠেছে কুম্ভ-বাই তো একাই চললেন, রাতে তাঁবুতে থেকে সকালে স্নান করছেন, মনে মনে তর্পণ করছেন প্রয়াত পিতা ও শ্বশুরকে, হাতে ভেসে যাওয়া চপ্পল! এই অনন্ত রসবোধ থেকে জন্ম নেয়— হে পূর্ণ তব চরণের কাছে। তাঁর হালকা চালে লেখা জীবন কথা নটী নবনীতার জন্য অকাদেমি পুরস্কার পান। চিররুগ্ণ শরীরকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ঘুরেছেন সারা পৃথিবী। হুইলচেয়ার আর ইনহেলার ছিল তাঁর ভ্রমণসঙ্গী। মস্কো বইমেলায় গেলেন, নাকে অক্সিজেনের নল। এভাবেই অংশগ্রহণ করলেন বিতর্ক সভায়। সীতা থেকে শুরু হয়তো এই হার না-মানতে চাওয়া একবগ্গা জেদের ফল। সব এপিকের বাহুবলের কাছে সীতারা সব সময় বন্দিনী কিংবা ভোগ্যপণ্য। রাষ্ট্রের কাছে হার মেনে যায় সম্পর্ক। মেয়েদের কখনও হাতে গোনা ক’টি মেয়েদের চোখ দিয়ে দেখা হয়, তার শুরু চন্দ্রাবতী, মল্লা, রঙ্গনায়কাম্মা হয়ে পৌঁছে যায় নবনীতা কিংবা মল্লিকাদের কলমেও।
ভ্রমণে নবনীতার কলম কী অসামান্য জাদুতে সোনাবাঁধানো মঁ ব্লাঁ হয়ে ওঠে। ইউরোপ আমেরিকা যেন দিঘা-পুরী। চিন, উত্তমাশা অন্তরীপ, আফ্রিকা, আলাস্কার মতো স্থানও নবনীতা ঘুরে এসেছেন। তবে জীবনের সেরা ভ্রমণ করেছেন ট্রাকবাহনে, ম্যাকমোহন। কী অকুতোভয়, কী বিনম্র দম্ভ! গিয়েছিলেন অসমে সাহিত্যসভায়। বাই উঠল তাওয়াং যাওয়ার। ভারত-চিন সীমান্ত ম্যাকমোহন লাইন। তখন ১৯৭৫ সালে তাওয়াং সাধারণের প্রায় অগম্য এক স্থান। পরিচিত পরিবারের কাছে শীতবস্ত্র একপ্রকার ধার করে, নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে জোগাড় হয় ইনার লাইন পারমিট। রেশনের ট্রাকে একজন ডাক্তারবাবুকে যেতে দেখে জিদ করে উঠে পড়েন। তাওয়াং পৌঁছে কুড়ি টাকা পেয়ে ট্রাকড্রাইভার খুব খুশি। ব্যাচেলর ডাক্তার তাঁর বাড়িতে কিছুতেই মেয়ে নবনীতাকে থাকতে দেবেন না। নবনীতা জোর করে সেখানে থাকবেনই। গুন্ডার সঙ্গে কে-ই বা লড়াইয়ে পেরেছে! লেখার কিছু বিশেষ ভাললাগা— নারীসুলভ লজ্জার চিহ্নমাত্র নেই আমার শরীরে। আর এই ডাক্তার সব বাধা-বন্ধের দড়ি শেকলে হাত-পা বাঁধা হয়ে ছটফট করছে। আমার এখন বেজায় লোভ হচ্ছে ছেলেটিকে একটু খ্যাপাতে। আজ হোলি খেলব শ্যাম তোমার সনে, একলা পেয়েছি তোমায় নিধুবনে— বলে যদি যাই রোম্যান্টিকালি তেড়ে? কী করবে তাহলে ডাক্তার? জহরব্রত নেবে? কুকরি বের করে…। পুরুষ চরিত্র দেবসেন ন জানতি, ন চিন্তয়তি চ।… হাসি তো পেট থেকে এমনিই বুড়বুড়িয়ে উঠে আসবে!!
আশির বেশি প্রকাশিত বাংলা গ্রন্থ, কবিতা, উপন্যাস, ছোটগল্প, নাটক, সমালোচনা, ভ্রমণ, অনুবাদ সাহিত্য এবং শিশু সাহিত্য ঝরেছে নবনীতার কলম থেকে। পেয়েছেন পদ্মশ্রী, সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার। জিতেছেন সকল পাঠকের মন। হেরেছেন শুধু কর্কটের কাছে। হেরে যাওয়াটা ছিল দু’হাজার উনিশের সাতই নভেম্বর।