প্রতিবেদন : তাজমহল ও কুতুবমিনার ভেঙে ফেলা হোক। নজিরবিহীন দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে আবেদন অসমের বিজেপি বিধায়ক রূপজ্যোতি কুর্মির। এর আগেও বিশ্বের বিস্ময় তাজমহল নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলেছে গেরুয়া শিবির। বেশ কিছু হিন্দুত্ববাদী সংগঠন তাজমহলের নাম পরিবর্তনের দাবিও তুলেছে। এবার তাদের সুরে সুর মিলিয়ে অসমের বিজেপি বিধায়ক রূপজ্যোতির দাবি, ভেঙে ফেলা হোক তাজমহল ও কুতুবমিনার। ওই বক্তব্যের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
আরও পড়ুন-স্যুভেনির প্রকাশ
বিজেপির বিধায়কের দাবি, তাজমহল বিশ্বজুড়ে প্রেমের সৌধ হিসাবে পরিচিত হলেও আদতে তা নয়। এ প্রসঙ্গে তিনি অদ্ভুত যুক্তির অবতারণা করে বলেছেন, মমতাজ ছিলেন তাজমহল নির্মাতা শাহজাহানের চতুর্থ স্ত্রী। মমতাজের মৃত্যুর পর শাহজাহান আরও তিনটি বিয়ে করেন। শাহজাহান যদি মমতাজকে প্রকৃতই ভালবাসতেন, তবে তিনি কি তাঁর মৃত্যুর পরেও ফের বিয়ে করতেন?
শুধু তাজমহল ভেঙে ফেলাই নয়, সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ করার উদ্দেশ্যে মুসলিম স্থাপত্যের পরিবর্তে সেখানে সুদৃশ্য মন্দির নির্মাণের দাবিও জানান বিধায়ক। তিনি বলেন, ওই মন্দির এমনভাবে করতে হবে যাতে তা পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ স্থাপত্যের শিরোপা পায়। এই মন্দির নির্মাণের জন্য তিনি বিধায়ক হিসেবে তাঁর পাওয়া এক বছরের বেতন ও ভাতা দান করবেন।
আরও পড়ুন-ছ’মাসে ফাইনালের পিচ বানিয়েছিলেন সুধীর
একইসঙ্গে, সুলতানি আমলে নির্মিত দিল্লির কুতুবমিনারও ভেঙে ফেলার দাবি করেছেন বিজেপি বিধায়ক। কুতুবমিনারের নির্মাণ নিয়েও নাকি সংশয় রয়েছে তাঁর। কুতুবমিনারের জায়গাতেও মন্দির নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
গত সপ্তাহেই একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পাঠক্রম থেকে মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাস বাদ দিয়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। যা নিয়ে গোটা দেশে নিন্দার ঝড় উঠেছে। কেন্দ্রের এই পদক্ষেপকে সমর্থন জানাতে গিয়েই বিতর্কিত মন্তব্য করেন অসমের ওই বিজেপি বিধায়ক। নেটিজেনরা ওই বিধায়কের প্রস্তাবের কড়া নিন্দা করেছেন। তাঁরা বলেছেন, বিধায়ক রূপজ্যোতি তাঁর মানসিক সুস্থতা হারিয়ে ফেলেছেন। যদিও এবিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন বিজেপির অন্য নেতারা।
আরও পড়ুন-র্যাশফোর্ডের গোলে জয়, চারে ফিরল ম্যান ইউ
প্রসঙ্গত, হিন্দুত্ববাদী কয়েকটি সংগঠনের দাবি, তেজো মহালয় নামে একটি শিব মন্দিরের উপরে তাজমহল গড়া হয়েছিল। পাশাপাশি তাদের দাবি, সুলতান কুতুবুদ্দিন আইবক নন, কুতুবমিনার তৈরি হয়েছিল গুপ্ত বংশের রাজা বিক্রমাদিত্যের আমলে।
আরও পড়ুন-শাহরুখ আসতেই গর্জে উঠল ইডেন
একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি কীভাবে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন
কথা বলতে পারেন? এই আচরণ চরম নিন্দনীয়। অসম তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপি বিধায়কের এই অন্যায় প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করছে। তাজমহল ও কুতুবমিনার ভারতের সভ্যতা ও সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের লক্ষ্যেই এই ধরনের অবাস্তব কথা বলা হচ্ছে, যা এদেশের গৌরবের প্রতি চরম অসম্মান। আমি মনে করি, ওই জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। তিনি উসকানিমূলক কথা বলেছেন। আদালতের উচিত বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।