প্রতিবেদন : আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে বীরভূমে আরও বিপুল জয়ের শপথ নিল তৃণমূল কংগ্রেসের জনসমুদ্র। বৃহস্পতিবার নলহাটির হরিপ্রসাদ হাইস্কুলের মাঠে উপচে পড়া জনসভা থেকে এমনই শপথ নিলেন কয়েক হাজার মানুষ। সেই সঙ্গে এদিন সভামুখী মানুষের স্রোত বুঝিয়ে দিল বীরভূম আছে তার নিজের জায়গাতেই। মঞ্চ থেকে সেই জনসমুদ্রকে উদ্দেশ্য করে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে বীরভূমের মাটিতে আরও বড় জয়ের আহ্বান জানান দলীয় নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন-মাটি খুঁড়তেই উঠে এল প্রাচীন যুগের রুপোর মুদ্রা
সভার মূল বক্তা দলের রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, আমাদের সংগঠনের একজন নেতাকে ওরা ভয় পায়। তাঁকে ওরা আটকে রেখেছে। ভাবছে একজনকে আটকে রেখে পঞ্চায়েত নির্বাচনে জিতে যাবে। বাঘকে আটকে রেখে দুটো শিয়ালকে পাঠিয়েছিল। এভাবে হয় নাকি? কেষ্টদাকে আমি অনেকদিন চিনি। ওঁর মামলা নিয়ে আমার কোনও বক্তব্য নেই। কেষ্টদা ঠিক না ভুল ওটা আদালতে যা বলার বলবে। কিন্তু এটা সত্যি কেষ্টদাকে বিজেপি ভয় পায়। তাই আটকে রেখেছে। শুধু এই মাটিতে দেখিয়ে দিতে হবে একজনকে আটকে রেখে তোমরা যদি বীরভূমের দিকে চোখ তুলে তাকানোর সাহস দেখাও, এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে বীরভূম থেকে ওদের ধুয়ে মুছে সাফ করে শুভেন্দু অধিকারীর মতো একটা চোর, জোচ্চোর, গদ্দার, ঘুষখোরটাকে মুখের ওপর জবাব দিতে হবে। তৃণমূল থেকে উত্থান।
আরও পড়ুন-খেলার মঞ্চে আশ্চর্য সাফল্য
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দয়ায়, তৃণমূল কর্মীদের রক্তের বিনিময়ে শুভেন্দু মন্ত্রী, সাংসদ, ওর বাবা, ভাই সাংসদ, চেয়ারম্যান— কী পায়নি। কিন্তু যেই নারদায় ওকে টাকা নিতে দেখা গেল, সিবিআই ওর নামে এফআইআর করল তখনই গদ্দারি করে অমিত শাহের জুতো পালিশ করতে বিজেপিতে চলে গেল। কুণাল আরও বলেন, এখানে ও এসে চোর বলে আঙুল তুলছে। কিন্তু শুভেন্দুই তো প্রতিষ্ঠিত চোর। সিবিআইয়ের এফআইআর নেমড। তাহলে ওকে কেন গ্রেফতার করা হবে না? বিজেপি কি ওয়াশিং মেশিন? আমাদের দাবি, এখনই সিবিআইকে ওর কলার ধরে জেলে ঢোকাতে হবে। সেই সঙ্গে এদিন তিনি কন্যাশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো রাজ্য সরকারের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পগুলির কথা তুলে ধরেন। উল্টোদিকে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের জনবিরোধী নীতির কথা বলেন। কুণাল বলেন, শুভেন্দু এখন হঠাৎ হিন্দু হয়েছে। ওর থেকে নাকি এখন আমাদের হিন্দুত্ব শিখতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার অনেক ভাল কাজ করছে। তার মধ্যে কিছু ভুল হয়ে থাকতে পারে। ভুল হলে তা সংশোধন হবে।
আরও পড়ুন-সরকারি অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক স্লোগান, মঞ্চেই উঠলেন না মুখ্যমন্ত্রী
তবে ৯৯টাই ভাল কাজ হচ্ছে। দু’একটা ভুল নিয়ে বিজেপি কথা বলছে। আর যেখানে নিজেরা পারছে না সেখানে দুই ভাই সিপিএম আর কংগ্রেসকে এগিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু ভাববেন না, মাথার ওপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আছেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আছেন, আছেন অন্য নেতারা। তাই ভরসা রাখুন, আর পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসকে বিপুল ভোটে জেতানোর শপথ নিন। সভায় আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ভাষণে পরাধীন ভারতে বীরভূমবাসীদের সাহস ও দেশভক্তির কথা তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতিগুলির তীব্র সমালোচনা করেন। এছাড়াও সভায় উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, বিকাশ রায়চৌধুরী, অভিজিৎ সিংহ, সাংসদ অসিত মাল, ত্রিদিব ভট্টাচার্য, রাজু সিং, পিন্টু সিং, অশোক ঘোষ, মলয় মুখোপাধ্যায়, সৈয়দ জিম্মি-সহ তৃণমূল কংগ্রেসের জেলার প্রথম সারির নেতৃবৃন্দ।