আসক্তি যখন অশান্তি

ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ট্যুইটার... আরও কত কী! সোশ্যাল মিডিয়াই এখন জীবনের সিংহভাগ জুড়ে। ৬-৭ ইঞ্চির স্ক্রিনেই দিনের বেশিরভাগ সময়টা কাটান সকলে। বিশেষ করে গৃহবধূরা। ডিজিটাল ডেমোক্র্যাসির পৃথিবীতে নেটিজেনশিপ এখন তাঁদের প্রাত্যহিকতার অঙ্গ। ফলে সেই আসক্তি ডেকে আনছে পরিবারে নানান অশান্তি। ধরছে ভাঙন। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন প্রয়োজন ‘সোশ্যাল মিডিয়া ডিটক্স’-এর। স্মার্ট ফোন বা সোশ্যাল মিডিয়ায় অতিরিক্ত আসক্তির ফলে কী কী সমস্যা তৈরি হয়েছে? কী করলে উপকার পাবেন? এই নিয়ে আলোচনা করলেন শর্মিষ্ঠা ঘোষ চক্রবর্তী সঙ্গে বিশেষজ্ঞের টিপস

Must read

আন-ই-স্মার্ট থেকে ই-স্মার্ট
‘আকাশবাণী কলকাতার সেই স্বর্ণালি ভোর, ময়দানে কাদা মাখামাখি বিকেলের ফুটবল ম্যাচ, নন্দনের ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, চড়ুইভাতি, সাহিত্যসভা, বইমেলা, সুযোগ পেলেই কু-ঝিক-ঝিক পাহাড়ে, সমুদ্দুরে, জঙ্গলে ছু-মন্তর। চায়ের টেবিলে তুফান তোলা সেইদিন আর নেই। স্মার্ট ফোনের দাক্ষিণ্যে আমরা এখন ডিজিটালই আপডেটেড। সবে আন ই-স্মার্ট থেকে হয়েছি ই-স্মার্ট। বন্দি হয়েছি মুঠোফোনের আলিঙ্গনে। করোনা আর লকডাউনের প্রভাবে গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সোশ্যাল মিডিয়া তথা স্মার্ট ফোনে আসক্তি অনেকটা বেড়েছে বিশেষ করে গৃহবধূদের মধ্যে। ডিজিটাল ডেমোক্র্যাসির পৃথিবীতে নেটিজেনশিপ হয়ে উঠেছে তাঁদের প্রাত্যহিকতার অঙ্গ।

আরও পড়ুন-দোলে কুঞ্জবনে তুঁহু রঙ্গে বিভোর…

সম্প্রতি দুটো খবর চমকে দিয়েছে সকলকে।
ঘটনা ১ : গেমিং অ্যাপ পাবজি খেলতে গিয়ে দু’জনের মধ্যে আলাপ। পাকিস্তানের সীমা গুলাম হায়দার আর ভারতের নয়ডার শচীন। পাবজির প্রবল আসক্ত দু’জনেই, এই আসক্তি থেকেই একে অপরের প্রেমে পড়া। সেই প্রেম ধীরে ধীরে আরও গভীর হয়। আর কী! শেষমেশ পাকিস্তানে না থাকতে পেরে প্রেমিকের উদ্দেশ্যে বেপরোয়া প্রেমিকার ভারত পাড়ি। সঙ্গে চার চারটে ছেলেমেয়ে। অবৈধ সম্পর্কের আকর্ষণে কিছু না জেনে বুঝে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেন সীমা। কার্যত তাকে অনুপ্রবেশ বলা যায়। নেপাল হয়ে তিনি ভারতে চলে আসেন। এদিকে ভারতে অধীর অপেক্ষায় প্রেমিক শচীন। ভালবাসলে বিয়ে করতেই হবে এমন দিব্যি কে দিয়েছে! তাঁরা একসঙ্গে থাকতে শুরু করে দেন গ্রেটার নয়ডাতে। কিন্তু সেই সুখ সইল না সীমা আর শচীনের। পুলিশের কাছে ততদিনে খবর পৌঁছে গিয়েছে যে, পাকিস্তান থেকে অবৈধভাবে সীমা এসে শচীনের সঙ্গে বসবাস করছেন। পুলিশের খবরটা কানে আসতেই শচীন সীমার ৪ সন্তান ও সীমাকে নিয়ে পালিয়ে যান। শেষমেশ পুলিশের জালে ধরা পড়েন তাঁরা। পাবজির নেশায় সীমার ভারতে আসা তাঁর কপালে জোটাল প্রবল বিপত্তি! আসক্তি হয়ে উঠল তাঁর সারাজীবনের অশান্তির কারণ।

আরও পড়ুন-রাখিবন্ধন নিয়েই বাঙালির মুক্তির স্বাদ

ঘটনা ২ : অনলাইন লুডো খেলায় চার লক্ষেরও বেশি টাকা লোকসানের পর সন্তানদের নিয়ে ঘর ছাড়লেন এক মহিলা। স্বামীর কাছে ক্ষমা চেয়ে একটি চিঠিও লিখে গিয়েছেন তিনি যাওয়ার আগে। ওই মহিলা এবং তাঁর দুই সন্তানের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। ঘটনাটি বেঙ্গালুরুর। অনলাইন গেমের প্রতি আসক্ত ওই মহিলা। অতীতেও অনলাইন গেমে অংশ নিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা খুইয়েছেন তিনি। এমনকী সোনার গয়নাও বন্ধক রেখে খেলেছিলেন। কিন্তু তার পরও হেরে গিয়েছিলেন। অনলাইন খেলার জন্য আত্মীয়দের কাছ থেকে লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন ওই মহিলা। এসব তাঁর স্বামী জানতেন না বলে দাবি।

আরও পড়ুন-প্রয়াত ‘ম্যায়নে প্যয়র কিয়া’ গীতিকার দেব কোহলি

এই ঘটনা দুটি কোনওটাই গালগল্প নয়। গত জুলাই এবং চলতি মাসেই খবরের কাগজে প্রকাশিত হয়েছে এই দুটো নিউজই। হাতে গরম এই ঘটনাদুটো প্রমাণ করে আমরা স্মার্ট হইনি মোটেও বরং জড়িয়ে পড়ছি এক আসক্তির চক্রব্যূহে, যার নাম স্মার্ট ফোন। যার বিষ ছোবলে নিও নর্মাল লাইফ। যে আসক্তির শিকার আজ প্রত্যেকেই। উল্লেখযোগ্য ভাবে বিবাহিত মহিলারা। সমীক্ষা অনুযায়ী জনসংখ্যার নিরিখে ভারতীয় গেমারদের মধ্যে ৪০ শতাংশ মহিলা।
এ তো গেল শুধু গেমের কথা। আসক্তির প্রসঙ্গ এলে সেই তালিকায় কী নেই! ফেসবুক, ইনস্টা, রিলস তৈরি, সোশ্যাল মিডিয়ায় সারাক্ষণ লাইক, কমেন্টস, শেয়ার নিয়ে অবসেশন, নতুন নতুন বন্ধু, অবৈধ প্রেম, অনলাইন শপিং ইত্যাদি।

আরও পড়ুন-কবি মধুমিতা খুনে ২০ বছর পর মুক্তি সস্ত্রীক প্রাক্তন মন্ত্রীর

রিলস আর রিয়েল লাইফ এক নয়
তামিলনাড়ুতে সারাক্ষণ রিলসে ডুবে থাকা চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রী— যাকে রিলস কুইন বলতেন পড়শিরা আর বন্ধুরা— তার আত্মহত্যার ঘটনা থেকে ফোনে নিমগ্ন হয়ে রেলওয়ে ট্র্যাকে হাঁটা মহিলার অ্যাক্সিডেন্ট— সবটাই বিপদসঙ্কেত। রিলসের গ্রাসে এখন রিয়েল লাইফ। এই আসক্তি শুধু মৃত্যুই ডেকে আনছে এমন নয়, বহু মহিলা হয়ে যাচ্ছেন পরিবারবিচ্ছিন্না। বেপরোয়া হয়ে উঠছেন তাঁরা। রিলসের ক্রিয়েটার আর ভিউয়ার্স— দুইই এই আসক্তির শিকার। যাঁরা দেখছেন কিছুদিন পর থেকে তাঁদের মনঃসংযোগে অভাব ঘটছে আর যাঁরা করছেন তাঁদের তৈরি রিলস কেউ না দেখলে আসছে অবসাদ। ইদানীং ট্রেন্ডিং গানের সঙ্গে নাচের ধুম লেগেছে মধ্যবয়সি এমনকী বয়স্ক মহিলাদের মধ্যেও।

আরও পড়ুন-যোগীরাজ্যে মুসলিম শিশুকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অপমান, ভাইরাল ভিডিও, নিন্দায় সরব তৃণমূল কংগ্রেস

ফেসবুক আসক্তি = মাদকাসক্তি
ফেসবুকের আসক্তি আর মাদকাসক্তি যে এক সে আর বলে দিতে হবে না। ফেসবুকই জীবন, ফেসবুকই যৌবন। ঘুমভাঙা থেকে ঘুমোতে যাওয়া মানুষের কোনও জীবনই আর ব্যক্তিগত নেই। লাইক, কমেন্টস, শেয়ার, ইমোজিতে অবসেসড তাঁরা। ফেসবুক এখন ফ্যাশন, আড্ডা, সমালোচনার, রাজনীতির, ট্রোলিং, বন্ধুত্ব, দোকান, বাজার, শপিং, ব্যবসার, গালাগালির প্রেমের, পরকীয়ার সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে গেছে। এই সামাজিক যোগাযোগের সাইটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পার করছেন বহু মহিলাই। পিছনে পড়ে থাকছে সংসার, সন্তান পরিবার। কোথাও একটা একঘেয়ে হয়ে যাওয়া জীবন যেখানে প্রতি মুহূর্তের অবহেলা, অনাদরের মাঝে বেঁচে থাকার রসদ হয়ে উঠছে ফেসবুক।

আরও পড়ুন-দেশে ‘রেপ ক্যাপিটাল’ ইউপি, হিংসায় অশান্ত মণিপুর

ডিজিটাল মাদক-গেমিং
গেমিং অ্যাপ যেমন বেড়েছে পাশাপাশি বেড়েছে গেম খেলার নেশাও। অনলাইন গেমিং শুধু পুরুষের জন্য, এই লিঙ্গ-বৈষম্যের ট্যাবু ভেঙে দিয়েছেন মহিলারাই। গত কয়েক বছরের গবেষণা তাক লাগার মতো। ভারতের অর্ধেকেরও বেশি গেমার ছোট শহরগুলি থেকে আসছে, যার অধিকাংশই মহিলা। নিও নর্মাল জীবনে শহর থেকে গ্রামাঞ্চলে ছড়াচ্ছে এই ব্যাধি। ‘স্টেট অফ ইন্ডিয়া গেমিং’-এর একটি রিপোর্ট অনুসারে, মহিলারা, প্রকৃতপক্ষে পুরুষদের তুলনায় বেশি সময় ব্যয় করছেন। যেখানে পুরুষেরা গড়ে ১০.২ ঘণ্টা অনলাইন গেম খেলছেন, মহিলারা সেখানে প্রতি সপ্তাহে ১১.২ ঘণ্টা ব্যয় করছেন। অনলাইন গেমিংয়ের ফাঁদে পা দিয়ে দেনার দায়ে জড়িয়ে গেছেন এমন মহিলা ভূরি ভূরি। মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে কোনও ভার্চুয়াল মিডিয়ামের প্রতি আসক্তির ফলে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কথাবার্তা কমে আসে এবং ধীরে ধীরে তারা বিচ্ছিন্ন হতে থাকে।

আরও পড়ুন-চন্দ্রযান নিয়ে বিরাট কথা! কুস্তির লজ্জা আপনার অপদার্থতা

শপাহলিক
কেনাকাটার বিষয়টা প্রায় পুরোটাই থাকে বাড়ির মেয়ে-বউদের এক্তিয়ারে আর ইন্টারনেটের ও মুঠো ফোনের কল্যাণে সেই এক্তিয়ার এখন লাগামহীন। অনলাইন শপিং-এর দৌলতে কেনাকাটা এখন হাতের মুঠোয়। ফলে সেই ঝোঁকটাই কখন আসক্তিতে পরিণত হচ্ছে মহিলারা তা বুঝতেই পারছেন না। এই আসক্তির অন্য নাম শপাহলিক। ফেসবুক স্ক্রল করতে গিয়ে শপিং ওয়েবসাইটের বিজ্ঞাপন হামেশাই ভেসে ওঠে নিউজফিডে। আর প্রলোভনে পা দেন তাঁরা। দশ থেকে পঞ্চাশ শতাংশ ছাড়, বাই ওয়ান গেট ওয়ান এবং ডেলিভারি চার্জ ফ্রি-এর চক্করে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে পকেট থেকে পার্স। সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে প্রচুর জিনিসপত্র কিনে ফেলে চরম অশান্তি ডেকে আনছে সংসারে। ডিভোর্স পর্যন্ত গড়াচ্ছে সম্পর্ক। তাহলে আসক্তির ডুবন্ত তরীকে পাড়ে আনতে কী করণীয়? আসক্তি মাত্রা ছাড়াবার আগে সংযত হোন। প্রয়োজনে পরিবারের সাহায্য নিন অথবা সমস্যা অতিরিক্ত মনে হলে দেরি না করে মনোবিদের কাছে যান।

আরও পড়ুন-অঙ্কের শিক্ষক থেকে সিনেমার পরিচালক

আসক্তির হাত থেকে মুক্ত হতে কী করবেন, জানালেন
মনোবিদ রিমা মুখোপাধ্যায়

যে কোনও ডিজিটাল আসক্তির মূলে স্মার্ট ফোন। ডিপ্রেসন, অ্যাংজাইটি, অবসাদ, একাকীত্ব এবং একঘেয়েমি থেকে বেরনোর এর চেয়ে ভাল অপশন আর নেই।
এর পাশাপাশি অনেক মহিলাই নতুনত্বের প্রলোভনে ফাঁদে পা দেন। চটজলদি অনেক কিছু পেয়ে যাওয়ার ইচ্ছে। বাড়ির মহিলারা, যাঁরা সারাটা দিন চার দেওয়ালেই আবদ্ধ, বাইরের জগতের থেকে দূরে, পরিবারের প্রত্যাশা পূরণ করতে করতে খানিক ক্লান্ত। সেই একটানা একঘেয়েমি জীবন, অবহেলা, কখনও কখনও হেনস্তা, প্রতি মুহূর্তের চ্যালেঞ্জ থেকে বীতশ্রদ্ধ হয়ে সোশ্যাল মিডিয়া এবং রিলস, অনলাইন গেম, শপিং-এর মধ্যে খুঁজে নিচ্ছেন শান্তি, যা অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

আরও পড়ুন-তল্লাশির সময় লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের তথ্যের হেরফের করার অভিযোগ ইডির বিরুদ্ধে লালবাজারে

স্মার্ট ফোন এবং সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে মহিলাদের ক্ষেত্রটা বেড়েছে। এই কারণে একদিকে যেমন তাঁরা বাড়ি বসে রোজগার করতে সক্ষম হচ্ছেন। পরিচিতি বাড়ছে যা কয়েকবছর আগেও ভাবা যেত না। অপরদিকে কুপ্রভাবও পড়ছে মারাত্মক। সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে ২৪x৭ কানেক্টেড থাকতে থাকতে গভীর আসক্তির শিকার হচ্ছেন তাঁরা।
ইদানীং অনেক মহিলাই নিজের সঙ্গে শিশুসন্তানকে নিয়েও ভিডিও বা রিলস করছেন এবং পরোক্ষ ভাবে তাদেরও আসক্ত করে তুলছেন। বহু বাচ্চারই ফেসবুক পেজ রয়েছে। এখান থেকেই ছোটদের সঙ্গে ক্রাইম হওয়ার বড় ধরনের সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে। কোনও কিছু প্রাইভেট নেই।
লাইক, কমেন্টস, শেয়ার, ইমোজিতে আসক্তি একটা ক্রেজি ফিলিং থেকে আসে মহিলাদের। কারণ এতদিন তাঁদের কেউ চিনত না। আচমকা পাত্তা পেতে শুরু করেন, ফলে নড়ে যায় ব্যক্তিত্বের ভিত। সারাক্ষণ সেই দিকেই চোখ দিয়ে বসে থাকতে থাকতে অ্যাডিকশন তৈরি হয়।
মধ্যবয়সি মহিলারা হয়তো পরিবারে ব্রাত্য। ছেলেমেয়েরা বড়, ফলে কেউ সময় দিতে পারছে না। তখন নিজেদের ব্যস্ত রাখতে তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ছেন।

আরও পড়ুন-চন্দ্রযান-৩ এর সঙ্গে যুক্ত জলপাইগুড়ির কৌশিক, ‘গর্বিত’ ধূপগুড়ির তৃণমূল প্রার্থী

একাকীত্ব থেকে অচেনা বন্ধু তৈরি করছেন, বিভিন্ন ধরনের সাইবার ক্রাইমের শিকার হচ্ছেন।
এই নিয়ে যখন পরিবারে অশান্তি চরমে তখন তাঁরা মনোবিদের দ্বারস্থ হচ্ছেন। আসলে এই সময় কথা বলাটা খুব জরুরি কারণ কমিউনিকেশন গ্যাপটাই এমন সমস্যা তৈরি করে। ছোট বাচ্চাদের মতো শাসন করলে হবে না, জানতে হবে কী কারণে তাঁর এই আসক্তি। পারস্পরিক সম্পর্কে ত্রুটিগুলো নিয়ে আলোচনা করতে হবে তারপর বোঝাতে হবে।
একই ধরনের বিষয় শপিং-এ আসক্তির ক্ষেত্রেও। কেনাকাটা করার সময় মস্তিষ্ক থেকে এন্ডোরফিন ও ডোপামিন নিঃসরণ হয় এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই অনুভূতিগুলোই আসক্তির রূপ নেয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপনের ঘনঘটাও এই ধরনের আসক্তি গড়ে তোলে। একই ধরনের পণ্য বারবার নিউজফিডে আসা, এসব পেজ বা গ্রুপে নির্দিষ্ট সংখ্যক সদস্যকে আমন্ত্রণ জানালে বিশেষ মূল্য ছাড়ের অফার ইত্যাদি কৌশলের কারণে মহিলারা যেন সারাক্ষণই বিজ্ঞাপনের চক্রে ঘুরপাক খেতে থাকেন।

আরও পড়ুন-আজ দেহ আনা হচ্ছে মালদহে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে স্বজনহারাদের পাশে পশ্চিমবঙ্গ সরকার

প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি আকর্ষণ নতুন ঘটনা নয়। এর জন্য সবার আগে দরকার সামাজিক যোগযোগের মাধ্যম থেকে একটু দূরে থাকা সাময়িকভাবে। তার জন্য মোবাইল ব্যবহার করব না এটা ভাবার পরিবর্তে ভাবা উচিত ওই সময়টা অন্য কী করতে পারি। বিনোদন বা টাইমপাসের জন্য একটু অন্য মাধ্যম বেছে নিন। অনলাইনে শপিংয়ের ক্ষেত্রে চটজলদি সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকুন। আবেগবশত পণ্য অর্ডার করবেন না। মন ভাল করতে অতিরিক্ত খাওয়া বা অতিরিক্ত কেনাকাটার বা গেম খেলা, রিলস করা— এগুলো মোটেও সুস্থতার লক্ষণ নয়। এ থেকে যথাসম্ভব বেরিয়ে আসতে হবে। মনোবিদের সাহায্য নিতে হবে। দরকারে স্বামী-স্ত্রী দু’জনকেই আসতে হবে কারণ স্ত্রীর আসক্তির পরোক্ষ কারণ হিসেবে পরিবার অবশ্যই মূখ্য ভূমিকায় থাকে। নানা ধরনের থেরাপি রয়েছে, তবে নির্ভর করছে আসক্তি কতটা সিরিয়াস পর্যায়ে গেছে তার ওপর। বেশি বাড়াবাড়ি হলে শুধু কাউন্সেলিং বা থেরাপিতে কাজ হয় না, সঙ্গে ওষুধও দিতে হয়।

Latest article