প্রতিবেদন : সদর দফতরে কামান দাগলেন দলের কমরেডরাই। বিদ্রোহ আলিমুদ্দিনে, তোপের মুখে নেতৃত্ব। কামান দাগার কারণ কী? কমরেডরা মনে করছেন, রাজ্য নেতারা তৃণমূল কংগ্রেসের অন্ধ বিরোধিতা করতে গিয়ে খুল্লাম খুল্লা বিজেপির দালালি শুরু করেছেন। এতে দলের চরম ক্ষতি হচ্ছে। শূন্যয় থাকা সিপিএম ক্রমশ মহাশূন্যে যাওয়ার অপেক্ষায়। দলের নির্ভরযোগ্য নেতৃত্বের এহেন প্রকাশ্য বিদ্রোহে বেকায়দায় আলিমুদ্দিন।
আরও পড়ুন-জোর ধাক্কা বিরোধীদের, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার জরুরি শুনানি নাকচ কোর্টের
ভোটের দিন দুয়েক আগে আলিমুদ্দিনের সামনে বিরাট জমায়েত। জমায়েতে এলাকার পরিচিত নেতৃত্ব ছাড়াও জেলার নেতারাও ছিলেন। মুখে স্লোগান— ‘বিজেপির দালালি মানছি না মানব না।’ আলিমুদ্দিনে অবরোধ। অবস্থা বেগতিক দেখে বাইরের গেটে তালাও লাগিয়ে দেওয়া হয়। ভাবা যায়! দলের বিদ্রোহে নাকাল হয়ে সিপিএম সদর দফতরে তালা? সকলের মুখেই রাজ্য সম্পাদক সেলিম-বিরোধী স্লোগান। অবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাচ্ছে দেখে বিক্ষোভকারীদের চারজনকে ডেকে বৈঠকে বসতে বাধ্য হয় নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন-প্রয়াত প্রাক্তন বার্সেলোনা তারকা লুইস সুয়ারেজ
বৈঠকে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে দেন বিদ্রোহী কমরেডরা৷ তাঁদের স্পষ্ট কথা––
তৃণমূলের অন্ধ বিরোধিতা করতে গিয়ে বিজেপির দালালি করছে পার্টি।
কিছু নেতা ২০১১ সালে হারের ব্যথা ভুলতে পারছেন না। সেই হারের জ্বালা থেকে তৃণমূলকে বেকায়দায় ফেলতে
গিয়ে বিজেপির সুবিধা করে
দিচ্ছেন।
পার্টি বেলাইন হয়ে গিয়েছে। আসল শত্রু বিজেপি। তার বিরুদ্ধে লড়াই করার বদলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করছে পার্টি। ফলে ভোট গিয়ে জমা হচ্ছে বিজেপির বাক্সে। বাড়ছে তাদের, কমছে সিপিএমের।
আরও পড়ুন-বিজেপি-বাম হার্মাদের আক্রমণ তৃণমূলকে
মুখে বলা হচ্ছে, বিজেপি-তৃণমূল দুজনেই শত্রু, অথচ ভোটের ময়দানে বহু জায়গায় প্রকাশ্যে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভোট করা হচ্ছে। এর ফলে সমর্থকেরাও কনফিউজড। দলের ভোট কমছে।
পার্টিকে বিজেপির এই দালালি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
আরও পড়ুন-ভারী বর্ষণ উত্তরে, দক্ষিণে গরমের অস্বস্তি অব্যাহত
পার্টিতে দীর্ঘদিনের কর্মীদের বিক্ষোভ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছিল। কিন্তু এমন বিদ্রোহের আগুন কি ধামাচাপা থাকে! আলিমুদ্দিনের নেতারা মুখে কুলুপ আঁটলেও, দলের পুরনো কর্মীরা বলছেন, এ তো আমাদেরই কথা। ওরা সাহস করে বিক্ষোভ দেখিয়েছে, এবার আমাদের পালা। সদর দফতরে বিদ্রোহের ছাইচাপা আগুন কিন্তু ধিকি-ধিকি করে জ্বলতে শুরু করেছে। বুঝতে পারছেন কমরেড!