ক্ষুদ্র সেচ ব্যবস্থার উন্নয়নে সহযোগিতার হাত, রাজ্যকে বিশ্বব্যাঙ্কের ১৫০০ কোটি ঋণ

প্রাকৃতিক জলাশয়-সহ মানবসৃষ্ট জলাশয় যেমন পুকুর, দিঘি, সরোবর প্রভৃতি সহ দেশের জলসম্পদের এক সর্বাত্মক চিত্র এই গণনায় ধরা পড়েছে

Must read

প্রতিবেদন : রাজ্যের ক্ষুদ্র সেচ ব্যবস্থার উন্নয়নে বিশ্বব্যাঙ্ক আরও ১৫০০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করেছে। ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যাকসিলারেটেড ডেভেলপমেন্ট অফ মাইনর ইরিগেশন প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজের জন্য ওই টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ের কাজ সফল ভাবে শেষ করার জন্য ৬ বছরের মেয়াদে দ্বিতীয় কিস্তির ওই ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে বলে ওই প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্বে থাকা জলসম্পদ দফতর সূত্রে জানা গেছে। রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের পর বিশ্বব্যাঙ্কের সঙ্গে রাজ্যের এই সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।

আরও পড়ুন-বাতিল ৩১৬৪ মনোনয়নপত্র

প্রকল্পের দ্বিতীয় দ্বিতীয় পর্যায়ে সেচ খাল খননের মাধ্যমে একফসলি জমিগুলোকে বহুফসলি করে তোলার কাজ করা হবে। উপকূল এলাকা, পাহাড় ও তরাই এলাকার ক্ষুদ্র সেচ ব্যবস্থার উপর বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। ২০১২-২০১৯ সাল পর্যন্ত চলা ডব্লিউবিএডিএমআইপি প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে বিশ্ব ব্যাঙ্কের দেওয়া ১১০০ কোটি টাকা ঋণে সুন্দরবনে ৬৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ সেচ খাল খনন-হ ৩০০০ ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পের কাজ করা হয়েছে। জলাভূমি রক্ষা ও সংখ্যাবৃদ্ধিতে রাজ্য সরকারের উদ্যোগের সুফল ফলল। দেশের জলাশয়ের সংখ্যার নিরিখে শীর্ষস্থান দখল করল বাংলা। শহরাঞ্চল, গ্রামাঞ্চল, ব্যক্তিগত অধিকারে থাকা জলাশয় ও মৎস্যচাষের ক্ষেত্রে প্রথম সারির পাঁচটি রাজ্যের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের স্থান প্রথম। কেন্দ্রের সমীক্ষা রিপোর্টে পাওয়া গেছে এই তথ্য। সেচ-এর ক্ষেত্রে গোটা দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের স্থান চতুর্থ। অন্য চারটি রাজ্য হল ঝাড়খন্ড, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা ও গুজরাট।

আরও পড়ুন-শান্তি বজায় রাখতে বাগনানে সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর রুটমার্চ

দেশের জলাশয় গণনায় আরও প্রকাশ, শহরাঞ্চলের জলাশয়গুলির ক্ষেত্রে প্রথম পাঁচটি রাজ্যের মধ্যে ত্রিপুরা পঞ্চম স্থান অধিকার করে রয়েছে। দেশে সর্বমোট ২৪ লক্ষ ২৪ হাজার ৫৪০টি জলাশয় রয়েছে। এর মধ্যে ৯৭.১ শতাংশ অর্থাৎ, ২৩ লক্ষ ৫৫ হাজার ৫৫টি জলাশয় রয়েছে গ্রামীণ এলাকায় এবং কেবলমাত্র ২.৯ শতাংশ অর্থাৎ, ৬৯ হাজার ৪৮৫টি জলাশয় রয়েছে শহরাঞ্চলে। জলাশয়ের নিরিখে প্রথম পাঁচটি রাজ্য হল পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা ও আসাম। জলাশয়গুলির মধ্যে ৫৯.৫ শতাংশ পুকুর, ১৫.৭ শতাংশ ডোবা, ১২.১ শতাংশ জলাধার, জল সংরক্ষণ প্রকল্প ও বাঁধ রয়েছে ৯.৩ শতাংশ, সরোবর ০.৯ শতাংশ এবং বাকি ২.৫ শতাংশ অন্য ধরনের জলাশয় রয়েছে। দেশের ইতিহাসে এই প্রথমবার জলশক্তি মন্ত্রক দেশ জুড়ে জলাভূমির গণনা করা হল।

আরও পড়ুন-পথশ্রী-রাস্তাশ্রী প্রকল্পে বিশেষ সাফল্য দক্ষিণ ২৪ পরগনার, ১০১৪ কিমি রাস্তা তৈরি করল রাজ্য

প্রাকৃতিক জলাশয়-সহ মানবসৃষ্ট জলাশয় যেমন পুকুর, দিঘি, সরোবর প্রভৃতি সহ দেশের জলসম্পদের এক সর্বাত্মক চিত্র এই গণনায় ধরা পড়েছে। এর পাশাপাশি, জলাশয় অধিগ্রহণের সমষ্টিগত পরিসংখ্যানও এতে পাওয়া যায়। এই গণনা শহর এবং গ্রামাঞ্চলের বৈষম্যকে একদিকে যেমন তুলে ধরেছে, অন্যদিকে তেমনই জলাশয় অধিগ্রহণের বিভিন্ন প্রকার চিত্রও এর মাধ্যমে ফুটে উঠেছে যাতে করে দেশের জলসম্পদের এক গুরুত্বপূর্ণ দিক প্রকাশিত হয়েছে।

Latest article