সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি : নদীর চরই বিক্রি করে দিয়েছে সিপিএম। শিলিগুড়ির ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের হাতা দিয়ে বয়ে গিয়েছে মহানন্দা। নদীর তীরে ঘিঞ্জি জনবসতি। বালিমাখা চরেই মাথা তুলেছে দোতলা-তিনতলা বাড়ি। ৩৪ বছর রাজ্যের ক্ষমতায় ছিল বামফ্রন্ট। তারপরেও বাড়তি ১০ বছর শিলিগুড়ি চালিয়েছে বাম পুরবোর্ডই। সিপিএমের নেতাদের প্রশ্রয়ে ও মদতে গোটা শিলিগুড়িই প্রায় বিক্রি হয়ে গিয়েছে বেআইনিভাবে। রেললাইনের পার থেকে নদীতট, জঙ্গল থেকে জলাভূমি— বাদ পড়েনি কিছুই।
আরও পড়ুন-দাবা অলিম্পিয়াডে ভারতীয় দলের মেন্টরের দায়িত্ব পালন করবেন পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বিশ্বনাথন আনন্দ
তৃণমূল কংগ্রেস প্রথমবার শিলিগুড়ি পুরসভা পরিচালনার ভার পেয়েই চালাচ্ছে মহানন্দার পারে অবৈধ দখলদার মুক্ত করার কাজ। মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশ, জমি মাফিয়াদের বরদাস্ত করা হবে না। নদীর চরে দখলদারি চলবে না। কঠোর পদক্ষেপ করতে হবে। সেই মতো পুলিশ দখলদার হঠানোর কাজ শুরু করতেই কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়ে পড়েছে কেউটে। আদর্শের বুলি কপচানো নীতিবাগীশ সিপিএমের পোড়খাওয়া নেতা জীবেশ সরকারের নাম জড়িয়েছে জমি কেলেঙ্কারিতে। জীবেশ সরকার প্রাক্তন পুরমন্ত্রী, শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। সম্প্রতি দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীরও সদস্য করা হয়েছে তাঁকে। মহানন্দার চর বেচে দেওয়ার অভিযোগে ইতিমধ্যেই নিউ জলপাইগুড়ি থানায় জীবেশ সরকার সহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন-আজ সামনে হার্দিকের গুজরাট টাইটান্স
তদন্তের স্বার্থে পুলিশ ডেকে পাঠিয়েছে জীবেশকে। অভিযোগ, শিলিগুড়ি শহরের বিভিন্ন নদীর চরগুলি কোটি কোটি টাকায় বিক্রি করে সেখানে জনবসতি গড়ে তুলেছে সিপিএম। পুলিশ কমিশনার গৌরব শর্মার নজরদারিতে মহানন্দার পাড় দখলমুক্ত করা কাজ চলছে। শিলিগুড়ি পুলিশ প্রায় কুড়িজনকে গ্রেফতার করেছে। এই সূত্রেই ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা, শিলিগুড়ি পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার অংশুমান বিশ্বাস জীবেশ সরকার এবং আরও কয়েকজনের নামে এনজিপি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। জীবেশের এক আত্মীয় দীপু সরকারের নামেও অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এই বিষয়ে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার গৌরব শর্মা জানিয়েছেন, সিপিএম নেতা জীবেশ সরকারের বিরুদ্ধে জমি সংক্রান্ত মামলায় এনজিপি থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
আরও পড়ুন-রিয়ালে ফিরতে পারেন রোনাল্ডো
শিলিগুড়ি পুরসভার ডেপুটি মেয়র, তৃণমূল নেতা রঞ্জন সরকারের তোপ, শিলিগুড়িকে বিক্রি করে দিয়েছে বাম ও কংগ্রেস। জমি কেলেঙ্কারিতে নাম উঠেছে জীবেশ সরকারের। উনি যদি কোনও দোষ না করে থাকেন তবে ভয় পাচ্ছেন কেন! এই প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা জীবেশ সরকারের বক্তব্য, মিথ্যা অভিযোগ উঠছে তাঁর বিরুদ্ধে। যদিও দার্জিলিং জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষের দাবি, বাম আমলে প্রচুর দুর্নীতি হয়েছে, যা এখন প্রকাশ্যে আসছে। যারা দোষী, তারা প্রত্যেকেই শাস্তি পাবে।