প্রতিবেদন : কংগ্রেসকে ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকে সমর্থন করা। মেঘালয়ের মাটিতে দাঁড়িয়ে সতর্ক করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনই উত্তর-পূর্বের তিনটি রাজ্যে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে গেল। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি ৬০ আসনের মেঘালয়ে ভোট। তাই এদিন অভিষেক বলেন, আগামী ৪৫ থেকে ৫০টি দিন আপনাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই সময়ের মধ্যেই নির্বাচন ও ফলাফল ঘোষণা হয়ে যাবে। বুধবার উত্তর গারো পাহাড়ের মেন্দিপাথারের জনসভা থেকে মেঘালয়বাসীকে আশ্বস্ত করলেন— কেন্দ্রের বঞ্চনার শিকার উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে সোনালি দিন ফেরাতে পারে একমাত্র তৃণমূল। পাশাপাশি অভিষেক সতর্ক করে দিলেন, বিজেপি ও এনপিপিকে হারাতে কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ার অর্থ হল ঘুরিয়ে বিজেপিকে সমর্থন করা। বিজেপিকে যদি কেউ হারাতে পারে তবে সেটা একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেস।
আরও পড়ুন-পুরুলিয়ায় বড় বিনিয়োগ
গারো পাহাড়ের প্রত্যন্ত এই অঞ্চলের জনসভায় সাংঘাতিক উপচে পড়া ভিড় দেখে অভিষেক বলেন, আজ এই সভা ঐতিহাসিক হতে চলেছে কারণ, মাত্র ১৫ দিন আগে এই জনসভার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। আর আজ এই অনুষ্ঠান থেকেই এনপিপি ও দুর্নীতিগ্রস্ত এনডিএ সরকারের পেরেক পোঁতা হবে। তাঁর কথায়, সময় যত গড়াচ্ছে মেঘালয়ে ততই শক্তিশালী হয়ে উঠছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপি ও এনপিপিকে তোপ দেগে অভিষেক বলেন, গত ৫ বছরে মেঘালয়ে কোনও উন্নয়ন করেনি বিজেপি ও এনপিপির সরকার। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, উন্নয়ন— সমস্ত দিক থেকে মেঘালয় পিছিয়েছে। সাধারণ মানুষকে লুঠ করেছে ডবল ইঞ্জিনের সরকার। এই পরিস্থিতি থেকে মেঘালয়ে সোনালি দিন ফেরাতে পারে একমাত্র তৃণমূল। মেঘালয়ে তৃণমূল ক্ষমতায় এলে কোনও মানুষ বঞ্চিত হবে না।
আরও পড়ুন-পঞ্চায়েত ভোটের জন্য নতুন ব্যালট বক্স কিনছে কমিশন
মেঘালয়বাসীকে আশ্বস্ত করে অভিষেক বলেন, মেঘালয় শাসন করবে মেঘালয়ের ভূমিপুত্ররাই বাইরের কেউ নয়। গুয়াহাটি থেকে মেঘালয় পরিচালিত হবে না। এ ছাড়াও বিজেপি দ্বারা কেন্দ্রীয় এজেন্সির রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, বিজেপিকে আটকাতে সবরকম শক্তি ব্যবহার করছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে ব্যবহার করা হচ্ছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তবে ইডি, সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সির কাছে তৃণমূল মাথা নত করবে না। পাশাপাশি লোকসভা নির্বাচনকে নজরে রেখে অভিষেক বার্তা দেন, কথায় বলে সূর্য পূর্বদিক থেকে ওঠে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনেও সূর্য পূর্বদিক থেকে উদিত হবে। বাংলা, ত্রিপুরা, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড— এই রাজ্যগুলিই ঠিক করে দেবে দিল্লির মসনদে কে বসবে।
আরও পড়ুন-শুরু হল জঙ্গলমহল উৎসব
এরপরই অভিষেক বলেন, আমার প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমাকে, নিজের রিপোর্ট কার্ড নিয়ে বেরোচ্ছেন না কেন? আমি সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসাবে বেরোচ্ছি। মুকুল সাংমা তার আগে বেরোবে। ওরা ওদের রিপোর্ট কার্ড দেখাক। উই কার্ড ইতিমধ্যেই সাড়ে তিন লাখ রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেছে। মাই কার্ড গত দু’সপ্তাহে প্রায় ২ লাখ রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেছে৷ আমরা এখানে সরকার গঠন করবই। প্রত্যয়ী ঘোষণা অভিষেকের। তাঁর কথায়, উত্তর-পূর্ব ভারতে ২৫ লোকসভা আসন আছে। এই রাজ্যে ২ আসন আছে মনে রাখবেন। লড়াই শুরু করুন মেঘালয় থেকেই। বিজেপি শুধু ব্যবহার করবে কেন্দ্রীয় এজেন্সি৷ আমরা একমাত্র দল, যারা বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছি। আগামী একমাসে এনপিপি সরকারের পতন হবে৷ মেঘালয়বাসীকে অভিষেকের বার্তা, নিজেদের সম্মান ফিরিয়ে আনুন৷ মনে রাখবেন, প্রতিবাদে তৃণমূল কংগ্রেস আপনাদের সঙ্গে থাকবে। এই যে পুলিশ কথায় কথায় গুলি চলায়। এটা এখানে হয়, এটা বাংলায় হয় না। এই সরকারের বদল এখানে সময়ের অপেক্ষা।