প্রতিবেদন : মাত্র ১৯ দিনে দ্বিতীয়বার খুন দেশের রাজধানীর হাই সিকিউরিটি জেল তিহারে। মঙ্গলবার সকালে সেখানেই প্রতিদ্বন্দ্বী গ্যাংয়ের বন্দিদের আক্রমণে মৃত্যু হল গ্যাংস্টার তিল্লু তাজপুরিয়া ওরফে সুনীল মানের। এই ব্যক্তি দিল্লির রোহিণী আদালতে গুলিচালনার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত। জেলের ভিতর হামলায় রোহিত নামে আরও এক বন্দি জখম হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। দিল্লির এই তিহার জেলেই বন্দি আছেন অনুব্রত মণ্ডল এবং তাঁর কন্যা সুকন্যা। সংশোধনাগারের ভিতর সংঘর্ষে বিচারাধীন বন্দির মৃত্যুর পর স্বাভাবিকভাবেই তিহার জেলের নিরাপত্তা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছে। অন্য বন্দিরাও শঙ্কিত। মাত্র ১৯ দিন আগেই এখানে এক বন্দিকে পিটিয়ে মারা হয়। ফের একইরকম ঘটনা। এদিনের সংঘর্ষের পর তিহারে বন্দিদের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
আরও পড়ুন-কর্নাটকের এক-তৃতীয়াংশ জেলাই দারিদ্র আর অপুষ্টির শিকার
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে তিহার জেলের ভিতর বন্দিদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। অভিযোগ, তিল্লুর উপর হামলা চালায় প্রতিদ্বন্দ্বী যোগেশ টুন্ডার লোকজন। ২০২১ সালে দিল্লির রোহিণী আদালতে হামলার প্রধান অভিযুক্ত ছিলেন তিল্লু তাজপুরিয়া। তিহার জেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এদিন সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে৷ তিল্লু ও রোহিতকে জখম অবস্থায় দীনদয়াল উপাধ্যায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে চিকিৎসকরা তিল্লুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন৷ অতিরিক্ত ডিএসপি অক্ষত কৌশল জানিয়েছেন, হামলার পরই সকাল ৭টা নাগাদ আহত দুই বিচারাধীন বন্দিকে দীনদয়াল হাসপাতালের বহির্বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। এদের মধ্যে তিল্লুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন-নাগরিকদের উপর নজরদারির চেষ্টা?
পুলিশ জানিয়েছে, উচ্চ নিরাপত্তার জন্যই তিল্লুকে তিহারে রাখা হয়েছিল। যদিও এদিনের ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে তিহার জেলে নিরাপত্তার বহর। এই জেলের ৯ নম্বর সেলে বন্দি ছিল তিল্লু। তার পাশের ৮ নম্বর সেলে ছিল যোগেশ। লোহার গ্রিল টপকে রড নিয়ে যোগেশ ও তার সহকারীরা তিল্লুর ওপর চড়াও হয়। তিল্লু ও রোহিতকে প্রতিপক্ষ দলের সদস্যরা লোহার রড দিয়ে প্রবল মারধর করে। তিল্লুর শরীরে রড ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। গুরুতর জখম অবস্থায় তিল্লুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন-সুপ্রিম ধাক্কা দিল্লি পুলিশকে
তিল্লুর বিরুদ্ধে খুন, অবৈধ দখল, তোলাবাজি-সহ একাধিক অপরাধের মামলা রয়েছে। গত বছর দিল্লির রোহিণী আদালতের মধ্যে গ্যাংস্টার জিতেন্দ্র যোগীর ওপর গুলি চালানোর অভিযোগ উঠে গ্যাংস্টার তিল্লুর বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই জিতেন্দ্র যোগী গোষ্ঠীর লোকজন তিল্লুকে খুন করাল বলে পুলিশের অনুমান। ১৯ দিন আগেও তিহার জেলে এক বন্দিকে পিটিয়ে মারা হয়েছিল। পরপর দুই খুন প্রশ্ন তুলেছে এখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। বর্তমানে তিহার জেলে রয়েছেন দিল্লি সরকারের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া, প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈনের মতো হাইপ্রোফাইল রাজনীতিবিদরা। প্রশ্ন উঠছে তাঁদের নিরাপত্তা নিয়েও।