প্রাক্কথন
বাঙালি খাদ্যরসিক। শুধুমাত্র উদরপূর্তি নয়, বাঙালির কাছে খাওয়ার একপ্রকার বিলাসও বলা যায়। সে-অর্থে বাঙালি খাদ্যবিলাসীও। নানারকম খাবার খেতে তারা ভালবাসে। বাঙালির এই খাদ্যবিলাসিতার বড় অংশ পূরণ করে স্ট্রিট ফুড বা রাস্তার খাবার। রাস্তার খাবার বললে কথাটি কেমন কেমন শোনায়। শুনলেই মনের মধ্যে যেন অবজ্ঞার ভাব ফুটে ওঠে। রাস্তার খাবার! সে কোনও ভদ্রমানুষ খায়? কিন্তু রাস্তার খাবার না বলে যদি স্ট্রিট ফুড বলা হয়? ‘স্ট্রিট ফুড’ শব্দ দুটির মধ্যে যেন আভিজাত্যের ছোঁয়া। আমাদের রসনায় বৈচিত্র দিতে স্ট্রিট ফুড মুখ্য ভূমিকা পালন করে চলেছে। বেশিরভাগ মানুষের পক্ষে নামীদামি হোটেল কিংবা রেস্তোরাঁয় গিয়ে রকমারি খাবারের স্বাদ নেওয়া সম্ভব নয়। তাদের রসনার তৃপ্তি মেটায় স্ট্রিট ফুড। নামে স্ট্রিট ফুড হলেও, এই খাবারগুলি স্বাদে ও গুণে অতুলনীয়। সাধারণ মানুষ থেকে উচ্চবিত্ত, স্ট্রিট ফুডের গ্রাহক তালিকায় সকলেই বিদ্যমান।
আরও পড়ুন-কালজয়ী সাহিত্যিক বিমল কর
প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল থেকে শুরু করে শহর কিংবা মহানগর— সর্বত্রই স্ট্রিট ফুডের রমরমা। স্ট্রিট ফুডের বৈচিত্রের বিচারে গ্রামাঞ্চলের থেকে অনেকটা এগিয়ে শহরগুলি। তবে শহুরে স্ট্রিট ফুডগুলো বর্তমানে গ্রামাঞ্চলেও সহজলভ্য হয়ে উঠেছে। এই খাবারগুলি দশকের পর দশক ধরে বাঙালির খাদ্যবিলাসিতাকে প্রশ্রয় দিয়ে চলেছে।
রাজধানী শহর কলকতা। নামীদামি হোটেল, ঝাঁ-চকচকে রেস্তোরাঁর পাশাপাশি এখানে রয়েছে স্ট্রিট ফুডের বিশাল সম্ভার। তূল্যমূল্য বিচার করলে দেখা যাবে বৈচিত্র এবং বিক্রির নিরিখে নামকরা হোটেল-রেস্তোরাঁকে তারা টেক্কা দিয়ে চলেছে। সে-কারণেই বলা হয়ে থাকে কলকাতা হল স্ট্রিট ফুডের স্বর্গরাজ্য।
আরও পড়ুন-রাজ্যের উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে অচলাবস্থা তৈরি করছেন কে?
কী রয়েছে স্ট্রিট ফুডের তালিকায়? উত্তরে বোধহয় এটা বলা ভাল হবে কী নেই? ফুচকা, ঝালমুড়ি, ঘুগনি, তেলেভাজা, আলুর দম, সিঙাড়া, লুচি, পরোটা, রোল, চাউমিন, পাস্তা, মোগলাই, দইবড়া থেকে শুরু করে ইডলি, ধোসা, পাপড়িচাট, পাওভাজি, কুলফি, লস্যি, বিরিয়ানি, মোমো— তালিকা বেশ দীর্ঘ। তালিকায় নিত্যনতুন খাবার সংযোজিত হচ্ছে। এককথায় বলা যায় ফুচকা থেকে বিরিয়ানি কিংবা তেলেভাজা থেকে মোমো— রাজধানীর রাস্তা জুড়ে স্ট্রিট ফুডের রমরমা। নিত্যদিন সেখানে ভিড় জমায় খাদ্যরসিক মানুষ।
রাজধানী কলকাতায় রয়েছে রকমারি স্ট্রিট ফুড, অসংখ্য জনপ্রিয় দোকান। তাদের মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু খাবারের কথা তুলে ধরার প্রয়াস এই নিবন্ধে।
আরও পড়ুন-লজ্জায় ফেলে দিল ওপেন থিয়েটার
আঞ্চলিক স্ট্রিট ফুড
প্রথমেই বলি বাংলার সেইসব জনপ্রিয় স্ট্রিট ফুডের কথা যেগুলি দামে খুব সস্তা, সহজলভ্য এবং গ্রাম-শহর সর্বত্রই পাওয়া যায়। এই দোকানগুলো খুব বড় হয় না। এদের মধ্যে রয়েছে তেলেভাজা, ফুচকা, ঝালমুড়ি, ঘুগনি, চুরমুর, সিঙাড়া প্রভৃতি।
তেলেভাজা ভালবাসে না এমন মানুষের সংখ্যা বোধহয় খুব কমই আছে। তেলেভাজা বললে আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে চপ, বেগুনি, পিঁয়াজি প্রভৃতি। একসময় চপ বললে কেবল আলুর চপ বোঝাত। এখন আলুর পাশাপাশি মোচা, পটল, ফুলকপি, হিংচা, ডিম, মাংস, চিংড়িমাছ প্রভৃতির চপ পাওয়া যায় এবং সেগুলি বেশ সুস্বাদু এবং জনপ্রিয়।
আরও পড়ুন-পাঞ্জাবে বিবাদ চরমে: রাষ্ট্রপতি শাসনের হুমকি রাজ্যপালের!
তেলেভাজার কোনও ঋতু হয় না। এটি সবসময়ই জনপ্রিয়। তবে তুলনামূলকভাবে বর্ষাকালে তেলেভাজার জনপ্রিয়তা কিছুটা বেশি। বৃষ্টিঝরা দিনে তেলেভাজা সহযোগে চা কিংবা মুড়ি, সঙ্গে যদি যোগ হয় নির্ভেজাল আ়়ড্ডা তাহলে তার থেকে সুখকর কিছু হয় না। তেলেভাজা বাঙালির এতটাই প্রিয় যে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের রাস্তাঘাটেও এটি পাওয়া যায়। কলকাতার অলিগলি থেকে শুরু করে প্রায় সব জায়গায় তেলেভাজা পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন-গণপিটুনি, ঘৃণাভাষণ: কেন্দ্রের কাছে রিপোর্ট তলব সুপ্রিম কোর্টের
কলকাতায় অসংখ্য নামকরা তেলেভাজার দোকান আছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল বাগবাজারের পটলার দোকান, হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের নরেনদার দোকান, বিডন স্ট্রিটের কাশীরামের তেলেভাজা, কলেজ স্ট্রিটের কালিকা, বিধান সরণির লক্ষ্মীনারায়ণ অ্যান্ড সন্স প্রভৃতি। শেষোক্ত দোকানটির সঙ্গে দেশের এক বিখ্যাত স্বাধীনতা সংগ্রামীর নাম জড়িয়ে। ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে বিহারের গয়া থেকে কলকাতায় এসে এই দোকানটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ক্ষেদু সাউ। প্রথম থেকেই এই দোকানের তেলেভাজার স্বাদ ছিল অতুলনীয়। বলা হয়, স্কটিশ চার্চে পড়ার সময় নেতাজি এই দোকানের তেলেভাজা খেতেন। দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দিয়ে একসময় নেতাজি হয়ে ওঠেন বিশ্ববরেণ্য নেতা। ক্ষেদু সাউ-এর মধ্যে ছিল গভীর দেশপ্রেম। তিনি ছিলেন নেতাজির ভক্ত। তথাকথিত বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যুর পর ক্ষেদু সাউ তাঁর জন্মদিন অর্থাৎ ২৩ জানুয়ারি বিনে পয়সায় মানুষকে তেলেভাজা খাওয়াতেন। তাঁর পরবর্তী প্রজন্ম সেই রীতি আজও ধরে রেখেছেন। এখনও প্রতি বছর নেতাজির জন্মদিনে এই দোকানে বিনে পয়সায় চপ বিতরণ করা হয়।
আরও পড়ুন-মিজোরাম থেকে ফিরল আরও চার শ্রমিকের দেহ
ফুচকা এই সময়ের অতি জনপ্রিয় মুখরোচক খাবার। ফুচকার নাম শুনলেই অনেকের জিভে জল চলে আসে। গ্রামের অলিগলি থেকে শুরু করে শহরের রাজপথ, সব জায়গায় ফুচকার উজ্জ্বল উপস্থিতি। রাজ্যভেদে এর নাম বিভিন্ন। উত্তর ভারতে গোলগাপ্পা, পশ্চিম ভারতে পানিপুরী, বিহার-ওড়িশায় গুপচুপ প্রভৃতি নানান নাম। আটা-সুজি দিয়ে তৈরি ফুলুরির মধ্যে মশলা-যুক্ত আলুমাখা ভরে, টক জলে ডুবিয়ে ফুচকা পরিবেশন করা হয়। অসাধারণ এর স্বাদ। শিশু থেকে বয়স্ক, ধনী থেকে গরিব ফুচকাপ্রেমীর তালিকায় সবাইকে দেখা যায়। বর্তমানে দই-ফুচকা, চিকেন-ফুচকা প্রভৃতি নানারকমের ফুচকাও পাওয়া যায়। কলকাতার কিছু বিখ্যাত ফুচকার দোকান হল আলিপুরের প্রবেশের ফুচকা, ঢাকুরিয়ার রাজেন্দ্রর ফুচকা, বরদান মার্কেটের কৃষ্ণকান্ত শর্মার ফুচকা, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের রাম গুপ্তার ফুচকা, রাসেল পার্কের নানকুরামের ফুচকা প্রভৃতি।
আরও পড়ুন-সমস্তিপুর: কোর্ট-চত্বরে বিচারাধীন ২ বন্দিকে গুলি
ঝালমুড়ি প্রায় সকলেরই পছন্দ। মুড়ির সঙ্গে তেল, আচার, চানাচুর, বাদাম, ছোলা, পেঁয়াজ, শসা প্রভৃতি মিশিয়ে যে ঝালমুড়ি তৈরি করা হয় তা সত্যিই খুব সুস্বাদু। বানাতে কম সময় লাগে। পেটও ভরে। লোকাল ট্রেনে এই দোকানের রমরমা। শোনা যায় বলিউডের বাদশা অমিতাভ বচ্চনের খুব প্রিয় এই খাবার। একসময় যখন তিনি কলকাতায় স্বল্প বেতনের চাকরি করতেন তখন এই ঝালমুড়ি খেয়ে পেট ভরাতেন। সিঙাড়া খেতে ভালবাসে না এমন মানুষের সংখ্যা খুব কম আছে। এটি সামোসা নামেও পরিচিত। তেলেভাজার মতো এটিও খুব মুখরোচক। ময়দার লেচির মধ্যে আলু, মটর প্রভৃতির পুর ভরে মুচমুচে করে ভাজা ত্রিকোনাকার খাবারটি চায়ের সঙ্গে খেতে দুর্দান্ত লাগে। সিঙাড়া প্রায় আমাদের আঞ্চলিক খাবারে পরিণত হলেও আসলে এটি বিদেশি খাবার। এর জনপ্রিয়তা এত বেশি যে প্রত্যেক বছর ৫ সেপ্টেম্বর দিনটি বিশ্ব সামোসা দিবস হিসেবে পালিত হয়। কলকাতার প্রায় সর্বত্র সিঙাড়া পাওয়া যায়। উল্লেখযোগ্য কিছু দোকান হল কলেজ স্ট্রিটের পুঁটিরাম, ভবানীপুরের বলরাম মল্লিক অ্যান্ড রাধারমণ মল্লিক, শ্যামবাজারের ভবতারিণী মিষ্টান্ন ভাণ্ডার ও দ্বারিক গ্র্যান্ড সন্স প্রভৃতি।
আরও পড়ুন-মুম্বই-কাঁটা সরাতে মরিয়া মোহনবাগান
ভিনরাজ্য থেকে আগত স্ট্রিট ফুড
নানাবিধ কারণে এক রাজ্যের মানুষ অন্য রাজ্যে যান। তাতে যেমন তাঁদের সংস্কৃতির আদান-প্রদান হয়, তেমনি প্রভাব পড়ে খাবারেও। স্ট্রিট ফুডের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নেই। বর্তমানে আমাদের রাজ্যে ভিন রাজ্যের অনেক খাবারের চাহিদা ও জনপ্রিয়তা ক্রমশ বাড়ছে। এই খাদ্য তালিকায় বৈচিত্রের অভাব নেই।
প্রথমেই বলা যাক পাওভাজির কথা। এটি মহারাষ্ট্রের জনপ্রিয় খাবার। পাওভাজি পাউরুটি আর তরকারি মিশ্রিত খাওয়ার। পাউরুটিকে ছোট ছোট করে কেটে ভাজা হয়। সঙ্গে মশলাদার তরকারি। খেতে দারুণ। অল্প সময়ে খাওয়া যায়। পেট ভরে। কলকাতার পাওভাজির কথা বললে অবশ্যই করে আসে আগরওয়াল পাওভাজির কথা।
আরও পড়ুন-বৃষ্টি উপেক্ষা করেই প্রচারে, পথসভায় নির্মলচন্দ্র
মোগলাই পরোটা মূলত মোঘল আমলের খাবার। বাংলায় এই খাবারের প্রচলন হয় মুর্শিদাবাদের নবাবের হাত ধরে। বর্তমান সময়ে এই খাবারটি আপামর বাঙালির খুব জনপ্রিয়। পরোটার সঙ্গে আলু কিংবা কষা মাংস, তার স্বাদ তুলনাহীন। কলকাতার সর্বত্র মোগলাই পরোটা পাওয়া যায়। উল্লেখযোগ্য কিছু দোকান হল নিউ মার্কেটের অনাদি কেবিন, ক্যামাক স্ট্রিটের এগলেসিয়াস, শোভাবাজারের মিত্র কাফে, বালিগঞ্জের দাস কেবিন প্রভৃতি।
আরও পড়ুন-মিজোরাম থেকে ফিরল আরও চার শ্রমিকের দেহ
ইডলি, ধোসা প্রভৃতি দক্ষিণ ভারতীয় খাবারগুলি বর্তমানে আমাদের রাজ্যে খুব জনপ্রিয়। বলা হয় এই খাবারগুলি স্বাস্থ্যের পক্ষে খুব ভাল। তাই দিন দিন এদের চাহিদা বাড়ছে। দক্ষিণ ভারতীয় খাবার পাওয়া যায়, কলকাতার এমন কিছু উল্লেখযোগ্য দোকান হল কালীঘাটের ট্যামারিন্ড, দেশপ্রিয় পার্কের রামাকৃষ্ণ লাঞ্চ হাউস, বাঙুর অ্যাভিনিউ-এর সাই জালপান জংশন, সার্দান অ্যাভিনিউয়ের ব্যানানা লিফ প্রভৃতি।
বর্তমানে বিরিয়ানি খুব জনপ্রিয় খাবার। শুধু কলকাতা নয়, ছোট-ছোট শহরেও আজকাল এর রমরমা। দোকানের সামনে লাল রঙের শালু বা কাপড় দিয়ে ঢাকা বড় হাঁড়ি। দূর থেকেই অপূর্ব ঘ্রাণ নাকে এসে লাগে। আপনা থেকেই জিভে জল চলে আসে। সরু চাল, আলু, ডিম, মাংস ও মশলা সহযোগে বানানো এই খাবারটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। আজকাল বড় বড় পার্টিতে, বিয়ের ভোজ কিংবা সভা-সমাবেশেও বিরিয়ানি পরিবেশিত হয়। এটি মুঘল আমলের খাবার। উত্তরপ্রদেশের নবাব ওয়াজেদ আলি শাহ কলকাতায় এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তাঁর হাত ধরেই এখানে বিরিয়ানির প্রচলন বলে মনে করা হয়। কলকাতার উল্লেখযোগ্য বিরিয়ানি দোকানগুলির মধ্যে রয়েছে পার্ক সার্কাসের আরসালান, সার্দান অ্যাভিনিউয়ের প্যারাডাইস, পার্ক স্ট্রিটের রহমানিয়া, রবীন্দ্র সরণির রয়্যাল ইন্ডিয়া রেস্টুরেন্ট, ফ্যান্সি মার্কেটের ইন্ডিয়ান রেস্তোরাঁ প্রভৃতি।
বিদেশ থেকে আগত স্ট্রিট ফুড
শুধুমাত্র ভিন রাজ্য নয়, সময়ের অগ্রগতিতে অনেক বিদেশি খাবার আমাদের খাদ্য-তালিকায় কেবল ঢুকেই পড়েনি সেগুলো খুব জনপ্রিয়ও হয়ে উঠেছে। এইসব খাবারের মধ্যে যে দুটির কথা না বললেই নয় সেগুলি হল চাউমিন ও মোমো।
চাউমিন একটি চাইনিজ খাবার। চাউ-এর সঙ্গে নানারকম মশলা মিশিয়ে এটি পরিবেশন করা হয়। এর অনেক রকমভেদ আছে। যেমন ভেজ চাউ, চিকেন চাউ, মাটন চাউ, পনির চাউ, মিক্সড চাউ প্রভৃতি। রাজধানীর অলিগলিতে অসংখ্য চাউমিনের দোকান দেখা যায়। তবে কলকাতার চাউমিনের কথা বলতে গেলে অবশ্যই করে বলতে হয় চায়না টাউনের কথা। ট্যাংরা এলাকায় এটি অবস্থিত। এখানে কেবল চাউমিন নয়, আরও নানারকমের চাইনিজ খাবার পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন-টালিগঞ্জকে সমীহ কিবুদের
চাউমিনের পাশাপাশি বর্তমানে খুব জনপ্রিয় মোমো। এটি তিব্বতীয় খাবার। তিব্বতে মোমো শব্দের অর্থ সেদ্ধ করা রুটি। মোমো সাধারণত দু’রকমের হয়। স্টিম মোমো আর ফ্রাই মোমো। ময়দার খোলের ভেতর মাংস, সবজি বা পনিরের পুর ভরে সেদ্ধ করে কিংবা তেলে ভেজে এটি তৈরি করা হয়। মুখরোচকের পাশাপাশি এটি পেট ভরানোর পক্ষে খুব উপযুক্ত। কলকাতার অলিগলিতে অসংখ্য মোমোর দোকান রয়েছে যেখানে সুস্বাদু মোমো পাওয়া যায়। উল্লেখযোগ্য কিছু দোকান হল এলগিন রোডের টিবেটিয়ান ডিলাইট, লেক গার্ডেন্সের মোমো আই অ্যাম, মোমো প্লাজা, হামরো মোমো, টালিগঞ্জের তেনজিং কিচেন প্রভৃতি।
আরও পড়ুন-জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা বাংলা ছবি কালকক্ষ
শেষ কথা
দশকের পর দশক ধরে স্ট্রিট ফুড মানুষের রসনার তৃপ্তি দিয়ে আসছে। জীবন থেকে সাহিত্য, সব জায়গায়া এদের উজ্জ্বল উপস্থিতি। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিখ্যাত মানুষ, সকলের কাছে স্ট্রিট ফুড খুব জনপ্রিয়। এই জনপ্রিয়তা ক্রমবর্ধমান। তাই দিনের পর দিন স্ট্রিট ফুডের দোকান যেমন বাড়ছে তেমনি করে বাড়ছে খাদ্যের বৈচিত্র। খাদ্যরসিক বাঙালির ভালবাসায় স্ট্রিট ফুডের বৈচিত্র এবং অগ্রগতির ধারা যেভাবে এগিয়ে চলেছে, তাতে কোনওদিন হয়তো দেখা যাবে শুধু রাজধানী কলকাতা নয়, গোটা রাজ্যটাই হয়ে উঠেছে স্ট্রিট ফুডের স্বর্গরাজ্য!