হামাসের কবল থেকে মুক্ত মেয়ে, বন্দি এখনও ছেলে, খুশির সঙ্গে উদ্বেগে রেগেব দম্পতি

হামাস ১৩ জনকে মুক্তি দিলেও তাদের মধ্যে এমন অনেকেই রয়েছে যাদের পরিবারের অন্য সদস্যরা এখনও হামাসের হাতে বন্দি।

Must read

প্রতিবেদন : আশা আর আশঙ্কার দোলাচলের টুকরো ছবি। বন্দি হওয়ার প্রায় ৫০ দিন পর মিলেছে মুক্তি। হামাস জঙ্গিদের কবল থেকে বেরোতে পেরেছেন ২১ বছরের মায়া রেগেব। বন্দিমুক্তির দ্বিতীয় দিনে ইজরায়েলের তরফে পণবন্দিদের ফিরিয়ে আনতে যে ভ্যান পাঠানো হয়েছিল ক্র্যাচে ভর দিয়ে দুর্বল শরীরে তাতেই দেশে ফিরেছেন মায়া।

আরও পড়ুন-রাতেও চলবে জয়রাইড, চমক দার্জিলিঙে

গত ৭ অক্টোবর ইজরায়েলের নোভা মিউজিক ফেস্টিভ্যাল থেকে হামাস জঙ্গিদের হাতে অপহৃত হন তরুণী মায়া। একইসঙ্গে তাঁর ১৮ বছর বয়সি ভাই ইতাইও বন্দি হন। কিন্তু সেই কিশোরের কোনও খোঁজ নেই এখনও। ফলে মুক্তি পেয়েও স্বস্তি ফিরছে না মায়ার। ভাইয়ের জন্য প্রবল উদ্বেগ। ভাই বেঁচে আছেন কি না তাও জানেন না। এক সন্তানকে ফিরে পেলেও তাই আর একজনের জন্য দুশ্চিন্তায় মুহ্যমান রেগেব দম্পতিও। মেয়েকে ফিরে পাওয়ার খুশির সঙ্গে বন্দি ছেলের জন্য উদ্বেগ-আশঙ্কা বাড়ছে।

আরও পড়ুন-শীত পড়তেই শুরু গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি

গত ৭ অক্টোবর নোভা মিউজিক ফেস্টিভ্যালে ইজরায়েলের হামলার পর প্রাণ বাঁচাতে দৌড়চ্ছিলেন মায়া। সেই সময়ই বাবা ইলান রেগেবকে ফোন করেন তিনি। আতঙ্কিত কণ্ঠে ফোনে মায়া বলেন, ওরা আমাকে মারছে। আমাকে গুলি করেছে। আমি গাড়ির পিছনে লুকিয়ে আছি। ওরা আমাদের গুলি করে মারছে! ফোনে মেয়েকে বারবার লোকেশন জানাতে বলছিলেন তাঁর বাবা। যদিও মাঝপথেই ফোন কেটে যায়। সেই তাঁদের শেষ কথা। তারপর থেকে মায়া ও তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করতে পারেনি রেগেব পরিবার। সীমান্তবর্তী সমস্ত হাসপাতালে সন্তানদের খোঁজ করে গিয়েছেন মায়া ও ইতাইয়ের বাবা ইলান রেগেব। কোনও সন্ধান মেলেনি। এরপর সোশ্যাল মিডিয়াতে এক ভিডিও প্রকাশ্যে আসে, যেখানে দেখা যায় ট্রাকের পিছনে ইতাইককে বাঁধছে হামাস জঙ্গিরা। ছেলেকে যে হামাস বন্দি করেছে সে কথা জানতে পারলেও মেয়ে কী অবস্থায়, কোথায় আছেন, তা তখন জানতে পারেনি রেগেব দম্পতি। দীর্ঘ ৫০ দিন পর মেয়ে বাড়ি ফেরায় খুশি তাঁরা। পাশাপাশি ছেলের জন্য উদ্বেগ এখনও কাটছে না। মায়ার মা মিরিট রেগেব বলেন, শেষবার ওই ফোনকলে মেয়ের কণ্ঠস্বর শুনেছিলাম আমি। তারপর থেকে প্রতিটা মুহূর্ত আমাদের উদ্বেগ-শঙ্কায় কেটেছে। আমি অত্যন্ত খুশি যে আমার মেয়ে ফিরে আসছে। আমি ওকে জড়িয়ে ধরতে চাই। কিন্তু আমার ছেলে এখনও হামাসের হাতে বন্দি। সব বন্দির মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা চুপ থাকব না। দুই সন্তান যাতে বাড়ি ফিরে আসে তার জন্য বারবার ইজরায়েল সরকারের কাছে পণবন্দিদের মুক্তির বিষয়ে পদক্ষেপ করার আবেদন জানিয়েছেন ইলান রেগেব। এমনকী আমেরিকার ইজরায়েলি দূতাবাসও বাবার থেকে মায়ার বিচ্ছেদের একটি গ্রাফিক্যাল ভিডিও শেয়ার করেছিল।

আরও পড়ুন-আউশগ্রামে জমে উঠেছে বাউল ও ফকিরি মেলা

এদিকে মায়ার পাশাপাশি গত শনিবার আরও ১২ জন পণবন্দি হামাসের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে। যেখানে তিনটি শিশুও রয়েছে, যাদের বয়স ১০ বছরেরও কম। মায়ের সঙ্গে হামাসের হাতে বন্দি হয়েছিল ৫ বছর বয়সি রোজ ও তার ৩ বছর বয়সি বোন। শনিবার তিনজনকেই মুক্তি দিয়েছে হামাস। বাবার কাছে ফিরতে পেরে রোজ বলে, আমি বন্দি থাকাকালীন প্রতিদিন বাড়ি ফেরার স্বপ্ন দেখতাম। হামাস ১৩ জনকে মুক্তি দিলেও তাদের মধ্যে এমন অনেকেই রয়েছে যাদের পরিবারের অন্য সদস্যরা এখনও হামাসের হাতে বন্দি।

Latest article