জামিন পেয়েই টুইটারে বিজেপিকে নিশানা সাকেত গোখলে, কৃতজ্ঞতাজ্ঞাপন তৃণমূল কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বকে

ভয়াবহ মোরবি সেতু নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ট্যুইট করাতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এরপরই তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে সবটা অবহিত করা হয়

Must read

দিন চারেক আগে দিল্লি থেকে রাজস্থান যাওয়ার পথে বিমানবন্দরেই সাকেতকে গ্রেফতার করে গুজরাত নিয়ে যাওয়া হয়। ভয়াবহ মোরবি সেতু নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ট্যুইট করাতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এরপরই তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে সবটা অবহিত করা হয়। তৃণমূলের কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সাকেতের গ্রেফতারের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ট্যুইট করেন। তিনি লিখেছেন, তিনদিনের ব্যবধানে দু’বার সাকেত গোখেলকে গ্রেফতার করল গুজরাত পুলিশ। যেখানে এখনও আদর্শ আচরণ বিধি কার্যকর রয়েছে। নির্বাচন কমিশন পুরোপুরি আত্মসমর্পণ করেছে এবং বিজেপির আজ্ঞাবহ হিসেবে কাজ করছে। গণতন্ত্রকে হত্যা করা হচ্ছে। এর আগে সাকেতের গ্রেফতারের নিন্দা করেছিলেন দলনেত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার দলের তরফে কমিশনে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, অবিলম্বে সাকেত গোখেলকে মিথ্যা ভয় দেখিয়ে গ্রেফতারের ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিতে হবে৷ এইভাবে তাঁকে মানসিক ও শারীরিকভাবে হেনস্তা করার প্রবণতা বন্ধ করতে হবে। একইসঙ্গে বাহুবল কাজে লাগিয়ে এই ঘটনায় যুক্ত পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ করতে হবে। স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেছেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং মুখ্যসচেতক সুখেন্দুশেখর রায় এবং রাজ্যসভার সাংসদ মৌসম বেনজির নুর, লোকসভার মুখ্যসচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়।

আরও পড়ুন-প্রেমের টানে রাশিয়া থেকে বরমাল্য হাতে মুর্শিদাবাদে

প্রসঙ্গত শুক্রবার সকালে পাঁচ সদস্যের একটি ডেলিগেশন টিম গুজরাত পৌঁছে যায়। সঙ্গে ছিলেন একজন আইনজীবী ও সাকেতের মা। এদিন গুজরাতের আমেদাবাদ আদালতে দলের জাতীয় মুখপাত্র সাকেত গোখেলের জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক। এর আগে তিনদিনে দু’বার সাকেতকে গ্রেফতার করা হয়। কেন এই গ্রেফতার মোদি-শাহর পুলিশ তার কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি বলে জানান সাংসদ ডাঃ শান্তনু সেন, যিনি এই ডেলিগেশন টিমের সদস্য। বাকিরা হলেন সাংসদ দোলা সেন, খলিলুর রহমান, অসিত মাল ও সুনীল মণ্ডল।

আরও পড়ুন-দিল্লির মেয়র পদে না লড়ার সিদ্ধান্ত বিজেপির

এরপরেই টুইটারে সরব হন সাকেত গোখেলে। তিনি টুইট করে লেখেন, ‘বিজেপির নির্দেশে আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, জামিন পেয়েছি, পুনরায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং আবার জামিন পেয়েছি – সবই ৪ দিনের ব্যবধানে। আমার স্বাধীনতা ধরে রাখার জন্য আমি মাননীয় বিচার বিভাগের কাছে কৃতজ্ঞ। বিজেপি হাস্যকরভাবে ভুল করেছে যদি তারা মনে করে যে এটি আমাকে ভেঙে ফেলবে। আমি কেবল তাদের কাছে আরও কঠোর হতে যাচ্ছি। আহমেদাবাদে একটি এফআইআর দায়ের করার পরে আমাকে ৫ দিন কোনও নোটিশ দেওয়া হয়নি। পুলিশ আমাকে বলেছে যে আইবি আমাকে ট্র্যাক করছে এবং সিআইএসএফকে বলেছে জয়পুর বিমানবন্দরে আমাকে আটকাতে। আমেদাবাদ পুলিশ যারা ভিন্ন মামলার জন্য দিল্লিতে ছিল তাদের আমাকে গ্রেপ্তার করতে জয়পুরে ছুটে যেতে বলা হয়েছিল। অন্য কারো করা একটি টুইট শেয়ার করার জন্য একটি তুচ্ছ মামলা দায়ের করা হয়েছে। মজার ব্যাপার হল ওই ব্যক্তি কে তা পুলিশের কাছে কোনো হদিশ নেই। উদ্দেশ্য ছিল আমাকে টার্গেট করা, আমাকে জেলে নেওয়া এবং আমাকে সেখানে রাখা। উত্তরপ্রদেশ ও গুজরাতে এটি মোদি ও শাহের পাঠ্যপুস্তক।’

আরও পড়ুন-দিল্লির মেয়র পদে না লড়ার সিদ্ধান্ত বিজেপির

তিনি আরও লেখেন, ‘হাস্যকরভাবে মোরবি ব্রিজ ভেঙে পড়ার বিষয়ে একটি টুইট করার জন্য আমাকে ৩ দিনের মধ্যে দুবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এবং আজ অবধি, ওরেভা কোম্পানির মালিক যারা ত্রুটিপূর্ণ ব্রিজটি তৈরি করেছিলেন তাদের এফআইআর-এ নামও দেওয়া হয়নি, গ্রেফতার করা ছাড়া। টুইট করে শোকার্ত হয়েছেন মোদী। ১৩৫ জন নিরীহ মানুষের মৃত্যুতে নয়।মোরবিতে দ্বিতীয় অভিযোগটি বিজেপির মিত্র নির্বাচন কমিশনের তরফে আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছিল। আশ্চর্যজনকভাবে, উভয় ধাপের ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরে “নির্বাচনী হস্তক্ষেপের” মামলা দায়ের করা হয়েছিল। নির্বাচনের দিনে মোদির সাম্প্রদায়িক বক্তৃতা এবং রোডশোতে ইসি ঠিক আছে।আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ আমার নেতাদের কাছে কৃতজ্ঞ এবং টিএমসি পরিবারের প্রত্যেক সদস্য যারা আমার এবং আমার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং আমাদের জন্য সবকিছু করেছেন। আমি আমার আইনজীবীর কাছে কৃতজ্ঞ যিনি আমাকে সম্ভাব্য সেরা উপস্থাপনা দিয়েছেন।’

আরও পড়ুন-দেশে বুস্টার ডোজ মাত্র ২২ কোটি

তিনি কৃতজ্ঞতা বোধ থেকে লেখেন ‘আমি আমাদের সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের জন্যও খুব কৃতজ্ঞ, তাদের প্রতিনিধি দল ডাঃ শান্তনু সেন,
সাংসদ দোলা সেন, খলিলুর রহমান, অসিত মাল ও সুনীল মণ্ডল যারা কয়েক ঘন্টার মধ্যে মোরবিতে এসেছিলেন আমার সাথে থাকতে এবং তাদের সমর্থন করতে। জহর সরকারকেও ধন্যবাদ আমার গ্রেফতারের বিষয়টি সংসদে উত্থাপন করার জন্য। এবং এখানে যারা সংহতি প্রকাশ করেছেন তাদের সবাইকে অনেক ধন্যবাদ। বিজেপির সমস্যা হল এটা খুব সহজে ছটফট করে। তাদের সবথেকে বড় সমস্যা হল আমাকে জেলে নিক্ষেপ করা কিন্তু সেটা আমাকে একটুও বিরক্ত করে না। এখান থেকে লড়াই আরও শক্তিশালী হয়।’

Latest article