প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে, ইজরায়েলি জনগণের অসংখ্য প্রাণহানি ও গোয়েন্দা ব্যর্থতায় প্রশ্ন

ইজরায়েলের সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, সামরিক ক্ষমতায় এগিয়ে থাকা দেশ হয়েও কেন সম্ভাব্য জঙ্গি হামলা নিয়ে কোনও খবর পায়নি দেশের গোয়েন্দা বিভাগ?

Must read

প্রতিবেদন : গাজায় ‘যুদ্ধ’ পরিচালনার ক্ষেত্রে ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ভূমিকায় ক্ষোভ বাড়ছে তাঁর নিজের দেশেই। হামাসের হাতে যেভাবে অসংখ্য ইজরায়েলির মৃত্যু হয়েছে এবং একাধিক মানুষ এখনও পণবন্দি, তার পিছনে নেতানিয়াহু সরকারের ব্যর্থতাই দায়ী বলে মত সিংহভাগ জনতার। গত ৭ অক্টোবর হামাসের অতর্কিত হামলার বহর যা ছিল, তা চমকে দিয়েছে গোটা বিশ্বকে। আচমকা সেই ভয়াবহ হামলায় কয়েক হাজার ইজরায়েলি প্রাণ হারান। তারপরেই শুরু হয় যুদ্ধ পরিস্থিতি।

আরও পড়ুন-উৎসব মরশুমে ১২৫ ডেসিবেল পর্যন্ত শব্দের বাজিতে ছাড় পর্ষদের

ইজরায়েলের সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, সামরিক ক্ষমতায় এগিয়ে থাকা দেশ হয়েও কেন সম্ভাব্য জঙ্গি হামলা নিয়ে কোনও খবর পায়নি দেশের গোয়েন্দা বিভাগ? এই হামলার পর প্রধানমন্ত্রীর সঠিক কৌশল প্রণয়নের ক্ষেত্রেও ঘাটতি আছে বলে মনে করেন অনেকে। সাধারণ মানুষের ক্ষোভ এতটাই যে হাসপাতালে আহতদের দেখতে যাওয়া ইজরায়েলি মন্ত্রীকে প্রবেশে বাধা দেয় তাঁদের আত্মীয়স্বজন। এই সংক্রান্ত একটি ভিডিওতে দেখা যায় মন্ত্রীর দেহরক্ষীদের গায়ে ক্ষুব্ধ মানুষ প্রতিবাদে কফি ছুঁড়ে দিচ্ছেন। ইজরায়েলের হাজার হাজার মানুষকে সাময়িক আশ্রয় শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে তাদের খোঁজ নিতে গেলে এক মন্ত্রীকে বিশ্বাসঘাতক ও মূর্খ বলে স্লোগান দিতে থাকেন মানুষজন।
ইজরায়েলের মাটিতে যেভাবে হামাস গোষ্ঠী ব্যাপক আক্রমণ সংগঠিত করেছে তা ইজরায়েলি জনগণের আত্মাভিমানে বড় আঘাত। এই সংঘাত কবে মিটবে বলা কঠিন।

আরও পড়ুন-খানাকুলের ৩৫০ বছরের দু’হাতের দুর্গা প্রতিমা অসুরহীন

কিন্তু দেশের জনতা নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার আলোচনা শুরু করে দিয়েছে। গাজা সংঘাতে গোটা ইজরায়েলের জনগণকে জনগণকে জড়িয়ে ফেলার জন্য প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু দেশবাসীর চক্ষুশূল হয়ে উঠেছেন। প্রায় ১৪০০ ইজরায়েলি প্রাণ হারিয়েছেন এই সংঘাতে। ফলে মানুষের ক্ষোভ চরমে। ধর্মীয়-জাতীয়তাবাদী জোট সরকার মেরুকরণের হাওয়া তৈরি করে সুবিধা পাওয়ার চেষ্টা করলেও প্রশ্ন উঠছে, নজিরবিহীন গোয়েন্দা ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধানে আদৌ কোনও তদন্ত হবে কি না? ১৯৭৩ সালের অক্টোবরে মিশর এবং সিরিয়ার জোড়া আক্রমণের পূর্বাভাস দিতে ব্যর্থ হয়েছিল ইজরায়েল। এরপরই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী গোল্ডা মেয়ারকে পদত্যাগ করতে হয়। সেই ইতিহাস মনে করিয়ে জেরুজালেমের শালম হার্টম্যান ইনস্টিটিউটের রিসার্চ ফেলো অ্যামোটজ আসা-এল জানিয়েছেন, নেতানিয়াহুর জন্য সেই পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে। সরকার তদন্ত কমিশন গড়ল কি না তাতে কিছু যায়-আসে না। আসল কথা হল, ইজরায়েলিরা কী ভাবছে। তারা যদি প্রধানমন্ত্রীকে দায়ী মনে করে তাহলে একসময় পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হবেন নেতানিয়াহু।

Latest article