হোন আসল মাস্টারমাইন্ড

হোমমেকার হোন বা ওয়র্কিং উওমেন— সবকিছু মাথা দিয়েই সামলাতে হয়। কারণ ভাললাগা, মন্দলাগা, নেগেটিভিটি, পজিটিভিটি— সবকিছুর এপিসেন্টার হল আমাদের ব্রেন বা মস্তিষ্ক। তাই মস্তিষ্কের স্ফূর্তি ও উদ্যম ধরে রাখার দায়িত্ব কিন্তু তাঁদেরই। হাতের কাছেই রয়েছে এমন অনেক রসদ যা আপনার ব্রেনকে বুস্ট-আপ করবে নিমেষে। লিখছেন শর্মিষ্ঠা ঘোষ চক্রবর্তী

Must read

সংসার সামলাতে আর পরিবারের সদস্যদের সুস্থ রাখতে যাঁদের চেষ্টার অন্ত নেই সেই গৃহিণীদের সবচেয়ে যত্নের জায়গা হল মাথা। মাথা দিয়েই সব সামলাতে হয় তাঁদের। তাঁদের যদি কাজে উদ্যম না থাকে তবে সব বৃথা। কারণ ভাললাগা, মন্দলাগা, নেগেটিভিটি, পজিটিভিটি— সবকিছুর এপিসেন্টার আমাদের ব্রেন বা মস্তিষ্ক। তাই নিজের মাথা এবং মনের স্ফূর্তি ও উদ্যম ধরে রাখার দায়িত্ব তাঁদেরই। এর জন্য চাই কিছু হেলদি অভ্যেস, টুকরোটাকরা রদবদল, ঠিকঠাক পুষ্টিগুণে ভরা খাবার। ভাবছেন ঝকমারি? না চারপাশে তাকালেই পেয়ে যাবেন ব্রেনকে বুস্ট-আপ করার হরেক উপায়৷

আরও পড়ুন-ধনকড় ও রিজিজুর বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা শুনানিতে রাজি বম্বে হাইকোর্ট

অন্য পথে চাঙ্গা মন
মগজাস্ত্রে শান দিতে নিজের স্মৃতিশক্তিকে ঝালিয়ে নিন। রোজ এক কাজ একটানা করতে করতে মরচে ধরে মনে। সেই একটানা কাজে বা রুটিন ওয়ার্কে একটু বদল আনুন। অন্যভাবে শুরু করুন দিন। রোজ একপাক ঘুরে আসুন ভোরবেলা। বাজার করতে ভালবাসেন। রোজ এক জায়গায় যান। কাল থেকে একটু অন্যপথে অন্য ডেস্টিনেশনে বাজার সারুন। রোজ একপথে বাড়ি ফেরেন অফিস থেকে। ক’দিন অন্যপথে বাড়ি ফিরুন। গবেষণা বলছে এতে নাকি স্মৃতিশক্তি বাড়ে আর মস্তিষ্ক ঊর্বর হয় আর আশ্বাস দেয় সুস্থতার।

আরও পড়ুন-নৌশাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বিপুল টাকা নিয়ে প্রশ্ন, ধর্মগুরুরা ধর্মেই থাকুন রাজনীতিতে আসছেন কেন?

সূর্যের আলো মন ভাল
জানেন কি সূর্যের আলো অনেক সমস্যার সমাধান আর মগজের সেরা দাওয়াই? সারাদিনের হাজার কাজের মাঝে এটা কিন্তু একটা বড় কাজ। অন্তত পনেরো মিনিট সূর্যস্নান। গবেষণা বলছে সূর্যের আলো বাড়িয়ে দেয় ডোপমিন হরমোনের মাত্রা তাই মস্তিষ্কের শক্তি বৃদ্ধি হয়, মন চনমনে থাকে, প্রাণে আসে স্ফূর্তি। প্রত্যেকদিন সকালে অবশ্যই একটু রোদে হেঁটে আসুন। নিজের ছাদেই রোদে পায়চারি করতে পারেন তাতেই ব্রেন আর মন দুই তরতাজা থাকবে।

আরও পড়ুন-নৌশাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বিপুল টাকা নিয়ে প্রশ্ন, ধর্মগুরুরা ধর্মেই থাকুন রাজনীতিতে আসছেন কেন?

দরকার খুব ভাল ঘুম
শুধু আমাদের মস্তিষ্ক নয়— সম্পূর্ণ শরীরকে সুস্থ রাখতেই জরুরি হল পর্যাপ্ত ঘুম। ঘুম মস্তিষ্ককে অ্যাক্টিভ করে তোলে। দিনে অন্তত সাত ঘণ্টা ঘুম মাস্ট। তবে অনেকেই অনেক রাত অবধি জেগে তারপর শুতে যান এবং বেলা পর্যন্ত বিছানায় থাকেন এটা কিন্তু ব্রেন বুস্টিং-এর পরিপন্থী। ঘুমের সময় একটা বড় ফ্যাক্টর। অসময় ঘুম বা ডিসটার্ব ঘুম আমাদের এনার্জি এবং কাজের স্পৃহায় ব্যাঘাত ঘটায়। মস্তিষ্কের চনমনে ভাব কমতে থাকে। তাই ঘুমের ভুল প্যাটার্ন বদলান।
বাদ যাক চিনি
জানেন কি চিনি আর নুন আমাদের খিদে বাড়িয়ে দেয়, আত্মাকে অতৃপ্ত রাখে? তাই ডেজার্ট আর চিপস আমাদের বারবার খেতে ইচ্ছে করে এবং এগুলোই আমরা বেশি-বেশি খেয়ে ফেলি। এই দুটোই আমাদের মস্তিষ্কের ক্রিয়াশীলতা কমিয়ে দেয়। রিফাইন্ড শুগার সবসময় আমাদের সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কাজেই বদলে ফেলি না এই অভ্যেস! ওয়র্কিং তো কী হয়েছে হোমমেকারও তো আপনিই, তাই নিজের খেয়াল রাখতে হবে সবচেয়ে আগে। আর ব্রেন চনমনে সুস্থ থাকলে সব ঠিক থাকবে, তাই আজ থেকে আমরা নিই চিনির স্বাস্থ্যকর বিকল্প যেমন অর্গানিক মধু এবং গুড়। সেই সঙ্গে সকালে প্রোটিন খাওয়াটা একটু বাড়িয়ে দিলেই কমে যাবে মিষ্টির ক্রেভিং— ব্যাস ব্রেন তো বুস্ট হবেই সঙ্গে নিয়ন্ত্রিত হবে ব্লাড শুগার লেভেলও।

আরও পড়ুন-কেশপুরে আজ সভা অভিষেকের

হাইড্রেটেড থাকুন
একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের শরীর ৬০% জল দিয়ে তৈরি। তেমনই আমাদের মস্তিষ্কের ৭৫ শতাংশ সক্রিয়তা নির্ভর করে জলের উপরেই। জল উজ্জীবিত করে ব্রেনকে। তাই যদি সারাদিন আমরা পর্যাপ্ত জল না পান করি দেখা যাবে মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষগুলো ঠিকমতো কাজ করবে না, কমতে থাকবে আমাদের এনার্জি লেভেল। ব্রেনকে বুস্ট-আপ করতে জল অন্যতম একটি উপাদান। তাই সারাদিনে যখনই কোনও মিল নেবেন তার আগে এক গ্লাস জল খান এবং রাতে শোবার আগে পাশে এক লিটার জল রেখে শুতে যান এবং ঘুম থেকে উঠে ওই জল খেয়ে নিন। যদি একবারে এক লিটার জল না খেতে পারেন দুবারে খেয়ে নিন। এরপর সারাদিন এবং রাত মিলিয়ে তিন লিটার জল পান করুন।

আরও পড়ুন-কেশপুরে আজ সভা অভিষেকের

স্টে পজিটিভ
পজিটিভ থাকা মানে জীবনের অসুন্দর বা নেতিবাচক মুহূর্ত বা পরিস্থিতিকে এড়িয়ে যাওয়া নয়, পজিটিভিটি হল আপনার জীবনের অপছন্দের পরিস্থিতিকে কতটা সদর্থক ভাবে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন সেটা। গবেষণা বলছে, মস্তিষ্ককে উজ্জীবিত রাখার এবং তার কর্মক্ষমতা ধরে রাখা অন্যতম উপায় হল পজিটিভ থিঙ্কিং। যখন কোনও একটি বিষয়ে আমরা উদ্বিগ্ন থাকি তখন তা ব্রেন গ্রহণ করে এবং সেভাবেই সে প্রস্তুত হয়ে যায় এবং আমাদের নেগেটিভ চিন্তা মস্তিষ্কে স্থায়ী হয়ে যায়। যেই মুহূর্তে পজিটিভ থাকতে শুরু করবেন, স্ট্রেস লেভেল কমতে থাকবে, অবসাদ আসবে না, মস্তিষ্ক সক্রিয় থাকবে এবং অনেক বেশি কাজ করবে, ফলে আমরা অনেক বেশি সুস্থ থাকব। যে কোনও পরিস্থিতি সামাল দেবার ক্ষমতা, চাপ নেবার ক্ষমতা বেড়ে যাবে।

আরও পড়ুন-আদানি ইস্যু: উত্তাল সংসদ, সোমবার পর্যন্ত মুলতুবি লোকসভা

বসে নয় হেঁটে আসুন
সম্প্রতি শিকাগোর একটি সম্মেলনে নিউ মেক্সিকো হাইল্যান্ডস ইউনিভার্সিটির গবেষকরা দিয়েছেন নতুন তথ্য। তাঁদের মতে, হাঁটা, দৌড় এবং সাইক্লিং আমাদের মস্তিষ্ককে খুব ভাল রাখে। ব্রেনকে বুস্ট আপ করে। তাঁদের মতে, রাস্তায় হাঁটার সময় পায়ে চাপ পড়ে। আর ওই পায়ের চাপ থেকে ধমনীর মাধ্যমে রক্ত যায় আমাদের মস্তিষ্কে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এতে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য খুব ভাল থাকে। একইরকমভাবে, হাঁটার পাশাপাশি, দৌড়লে এবং সাইক্লিং করলেও ধমনীর মাধ্যমে বেশি রক্ত মস্তিষ্কে পৌঁছয়। সেক্ষেত্রে আমাদের মস্তিষ্ক বেশি সুস্থ, সবল, চনমনে থাকে। আর এক্সারসাইজ করলেও মগজের আকার বাড়ে। নতুন নতুন কোষ তৈরি হয়। শারীরিক কসরত, যোগাসন, নাচ ইত্যাদি নিয়মিত করলে ব্রেনের অক্সিজেনেটেড ব্লাড সার্কুলেশন বেড়ে যায় এবং নার্ভ-সেল উৎপাদন ভাল হয়। তাই নিয়ম করে অন্তত আধঘণ্টা হাঁটুন, দৌড়ন অথবা সাইক্লিং করুন। পাশাপাশি আধঘণ্টা ব্যায়াম করুন। ভাল থাকবে ব্রেন।

আরও পড়ুন-৪ বছরে ২১ বার বিদেশ ভ্রমণ মোদির, খরচ প্রায় ২৩ কোটি!

মাল্টি টাস্কিং নয়
আমরা অনেকেই একসঙ্গে অনেক কাজ করে ফেলতে চাই। নিজের দক্ষতা প্রমাণ করার চেষ্টা করি। কিন্তু বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে এই মাল্টি টাস্কিং বাস্তবে মস্তিষ্ককে ক্লান্ত করে দেয়। মানুষ ধীরগতির হয়ে যায়। মন বিক্ষিপ্ত হতে শুরু করে। এতে মনোযোগে ব্যাঘাত আসে আর ব্রেন বুস্ট-আপ হবার বদলে গুটিয়ে যেতে থাকে। উদ্যম চলে যায়। অপ্রয়োজনীয় সবকিছু একসঙ্গে জটলা পাকিয়ে যায়। এক এক করে কাজ শেষ করুন। ব্রেনকে ভাগ করে নিতে দিন কাজগুলোকে। কম্পিউটারের মতোই অপ্রয়োজনীয় তথ্য ডিলিট করতে থাকুন।
নতুন কিছু শিখুন
বহু গবেষণাতেই দেখা গেছে, শেখা মানসিক কার্যক্ষমতা ধরে রাখে। যত বেশি শিখতে থাকবেন ব্রেন ততই আনন্দে থাকবে, ফলে তার মানসিকতাও তত সমৃদ্ধ
হতে থাকবে। দেখা গেছে, অ্যালঝাইমার্স রোগ তাঁদের কম হয় যাঁরা বেশ পড়াশুনোর মধ্যে আছে বা নতুন নতুন জ্ঞান আহরণের মধ্যে দিয়ে দিন যাপন করছে। হলেনই বা হোমমেকার, সংসারই তো নতুন কিছু শিখে ফেলার
একনম্বর প্ল্যাটফর্ম, তা নতুন রান্না শেখা হোক বা সেলাই-ফোঁড়াই। শিখতে পারেন বিদেশি ভাষাও। ফিরিয়ে আনতে পারেন পুরনো হবি— ধরুন একটা সময় খুব ভাল আঁকতেন সেটা আবার শুরু করুন। এখনকার নতুন পেন্টিং টেকনিক শিখতে পারেন। ব্রেন গঠনমূলক কাজে ব্যস্ত থাকার মধ্যে দিয়েই উজ্জীবিত থাকবে।

আরও পড়ুন-পকেটে চাপ মধ্যবিত্তের! ফের বাড়ল দুধের দাম

গান শুনুন
কিছু গান বা সুর আছে যা ঝট করে মুড এবং মন দুটোই বুস্ট-আপ করে। আসলে গান মস্তিষ্ককে উত্তেজিত করে এবং উজ্জীবিতও করে, তাই মুড পাল্টে যায় মুহূর্তে। কিছু মিউজিক রয়েছে যার বিটগুলো খুব রিল্যাক্সেশন দেয়। গবেষণা অনুযায়ী— গানের সুর শুনলেই আমাদের ব্রেন সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং সংগীতের স্মৃতিও দীর্ঘদিন ধরে রাখে। নিয়মিত গান শুনলে ব্রেন থাকে এনার্জিটিক।
মুহূর্তের কাছেই থাকি ঋণী
মুহূর্তেরা মুহূর্তের কাছেই ঋণী হয়। আমাদের জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত খুব গুরুত্বপূর্ণ। বড় বড় খুশি নয়, ছোট্ট ছোট্ট হাসি, আনন্দ, ইচ্ছেপূরণের মুহূর্তগুলোই আসল। ছোট ছোট জিনিসে খুশি থাকুন— যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে ব্যালকনিতে বসে এক কাপ ধোঁয়া-ওঠা কফিতে চুমুক দিলেও পরম শান্তি মেলে। আপনি কীসে খুশি হন সেটা আপনার চেয়ে ভাল কেউ জানে না। জীবনে প্রতিটা মুহূর্তকে উপভোগ করুন। যা পেয়েছেন তার জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিন, কৃতজ্ঞতার ভাবনা মস্তিষ্কে বিকাশ ঘটায়। মন ভাল থাকলেই ব্রেন ভাল থাকে।

আরও পড়ুন-প্রয়াত দাদাসাহেব ফালকে জয়ী পরিচালক কে বিশ্বনাথ

মেডিটেশন করুন
মেডিটেশনে পরিস্রুত হয় মাথা। সারাদিনে অন্তত দশ মিনিট চুপ করে চোখ বন্ধ করে বসুন। চিন্তাশূন্য করে বসতে পারলে খুব ভাল, কিন্তু এতদিনের বদ অভ্যেস একদিনে যাবে কীভাবে! তাই চোখ বন্ধ করলেই যা চিন্তা আসে তাকে আসতে দিন। প্রথমে এসেই তারা জটলা পাকিয়ে যাবে একসঙ্গে। তারপর দেখবেন নিজে থেকে সেইসব ভাবনা সরে যাচ্ছে। এইভাবে রোজ প্র্যাকটিস করুন। গাইডেড কিছু মেডিটেশন মিউজিক রয়েছে সেইগুলোও ফলো করতে পারেন। এতে মস্তিষ্ক থাকবে রিল্যাক্স এবং সুস্থ।

ব্রেনকে বুস্ট-আপ করতে কী কী খাবেন

ওমেগি থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড
মাথাকে সুস্থ এবং সতেজ রাখার ডায়েট ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে আপনারই আশপাশে। রোজকার খাদ্যতালিকায় রাখুন ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার। যেমন বাঙালির খুব চেনা রুই, পমফ্রেট, ইলিশ মাছেই কম পরিমাণে হলেও রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। তবে সামুদ্রিক মাছ বা খাবারে রয়েছে এর প্রচুর উৎস। যেমন টুনা বা সার্ডিন মাছ। অতদূরে যেতে হবে না সয়াবিন রয়েছে তো রান্নাঘরে! তাহলেই কেল্লাফতে । সয়াবিন হল ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের অন্যতম উৎস। রাজমা খান পাবেন প্রচুর ওমেগা থ্রি। কারণ এই ফ্যাটি অ্যাসিডে রয়েছে অ্যান্টিডিপ্রেশন্ট। ব্রেনকে উদ্দীপিত রাখতে এর জুড়ি নেই। এমনিতেও গবেষণা বলছে মাছ মস্তিষ্কের বিকাশে একনম্বর। তাই মাছ খান নিয়মিত।

আরও পড়ুন-লুকআউট নোটিশ জারি করে গৌতম আদানির গ্রেফতারি চাই: সুখেন্দুশেখর

কফি
দিনটা শুরু করুন এক কাপ কফি দিয়ে। কফির প্রধান দুটি উপাদান ক্যাফেইন এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট মস্তিষ্কের কোষগুলোকে উজ্জীবিত করে। প্রচুর এনার্জি দেয়। সারাদিন রাখে চনমনে। তাই মন এবং ব্রেনকে বুস্ট-আপ করতে নিয়মিত এক কাপ কফি সেরা উপায়।
গ্রিন টি
আজকের মহিলারা ব্ল্যাক টি পেরিয়ে চলে এসছেন গ্রিন টি-তে। সকালে এক কাপ গ্রিন টি আপনাকে সারাদিন এনার্জি সরবরাহ করবে। কারণ কফির মতো গ্রিন টি-তেও থাকে ক্যাফেইন যা মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। গ্রিন টি-ও মনোযোগ বৃদ্ধি করে এবং মন ভাল করে। এ ছাড়া কফিতে কিছু অ্যামিনো অ্যাসিড আছে যেগুলো মস্তিষ্কে রক্তস্বল্পতাজনিত অসুখ দূর করে এবং সমস্ত রকমের দুশ্চিন্তা দূর করতে সহায়তা করে। আর মাথা যদি ভাল থাকে তাহলে সব কাজ সহজ যায় নিমেষে।
হলুদ
যেটা ছাড়া রান্নাঘর কানা সেই হলুদের গুণের শেষ নেই। হলুদের আসল উপাদান কারকিউমিন যা মস্তিষ্কের কোষের ক্রিয়াশীলতা বৃদ্ধি করে। কোষের সরাসরি উপকার করে। মস্তিষ্কে বিকাশ, স্মৃতিশক্তির বিকাশ, মনোযোগ বৃদ্ধি, অবসাদ কমানো— কী করে না হলুদ! তাই রান্নায় হলুদ মাস্ট। গরম দুধে হলুদ দিয়েও খেতে পারেন।

আরও পড়ুন-৬ ফেব্রুয়ারি দিল্লির মেয়র নির্বাচন

পালং, মেথি আর ব্রকোলি
শীতকাল মানেই পালংশাক, মেথিশাক। আর এই পালংশাকে রয়েছে আয়রন, ফোলেট, বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন কে, লুটেইন আর মেথিশাকে রয়েছে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি৬, পটাশিয়াম, সোডিয়াম,
কার্বোহাইড্রেট যা আমাদের বুদ্ধির গোড়ায় শান দিতে একনম্বর। সেই সঙ্গে ব্রকোলি— যাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। আয়রন রক্তে অক্সিজেন সরবরাহ করতে সাহায্য করে। কারণ লোহা ছাড়া রক্তে লোহিত কণিকা তৈরি হয় না। যা মস্তিষ্কে চাপ বাড়ায়। তাই ব্রেনকে রিল্যাক্স রাখতে, বুস্ট-আপ করতে এই সবুজ সবজি খাওয়া জরুরি।
পিনাট বাটার
এই টেস্টি ব্রেড স্প্রেডটি এখন অনেকেরই ব্রেকফাস্টে থাকে। হেলদি তো বটেই এটি নিয়মিত খেলে মস্তিষ্কের নার্ভাসমেমব্রেন সুরক্ষিত থাকে এবং মাথা দুর্দান্ত কাজ করে। শুধু চিনে বাদামও কিন্তু এই একই কাজ করে। এর পাশাপাশি যে কোনও ধরনের বাদাম যেমন কাজুবাদাম, আমন্ড বাদাম, আখরোট মস্তিষ্কের জন্য উপকারী। এগুলোতে ওমেগা থ্রি তো আছেই সঙ্গে গবেষণা বলছে বাদাম খেলে মস্তিষ্কে ‘নিউরোডিজেনারেটিভ’ অসুখ হবার সম্ভাবনাও কমে।

আরও পড়ুন-এভাবেও ফিরে আসা যায়…

ডিম
সানডে হো ইয়া মানডে রোজ খাও আন্ডে। ডিম ছাড়া দিন চলে না আমাদের। বাড়িতে শুধু ডিম থাকলেই হল। ডিমে রয়েছে ৯ রকম অ্যামাইনো অ্যাসিড আর কুসুমে রয়েছে কোলিন যা আমাদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতাকে বুস্ট-আপ করে। রোজ ব্রেকফাস্টে একটা ডিমসেদ্ধ বা এগ ভুর্জি বা ফ্রেঞ্চ ওমলেট অবশ্যই রাখুন।
মুগ, মুসুর, কাবলি চানা

বাঙালির রান্নাঘরে অতি-চেনা এবং প্রয়োজনীয় তিনটে উপাদানে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন যা আমাদের অক্সিজেন বহনকারী লোহিত রক্ত কণিকাকে সুস্থ এবং মস্তিষ্কের কোষে বিশুদ্ধ রক্ত পৌঁছে দেয়। এতে ভাল থাকে মাথা।
ওটস
জলখাবারে ওটস খেতে বলছেন চিকিৎসকেরা। স্বাস্থ্যসুরক্ষায় ওটস দারুণ সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের ক্রিয়াশীলতা বাড়াতেও। ওটসের লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্স এবং সলিউবল ফাইবার দীর্ঘক্ষণ এনার্জি ধরে রাখে, মনোযোগ বাড়ায়, ব্রেনকে চট করে বুস্ট-আপ করে, সারাদিন কাজে আসে স্ফূর্তি।
দুধ, দই, পনির
ডেয়ারি প্রোডাক্টের গুণাগুণ নিয়ে আর বলে দিতে হয় না। রোজ সকালে আগুনে ধোঁয়া ওঠা গরম দুধের মধ্যে রয়েছে ব্রেনকে কর্মক্ষম, সতেজ, সুস্থ রাখার চাবিকাঠি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন যা মস্তিষ্কের কোষগঠনে সহায়ক। আর রয়েছে ভিটামিন বি যা মস্তিষ্কে নিরন্তর এনার্জি সরবরাহ করে।

আরও পড়ুন-পুরনো সহকর্মীর সঙ্গে দেখা করলেন রাজ্যপাল

কমলা লেবু
শীত জুড়ে খাবার টেবিলে কমলার ঝুড়ি। এই শীতফলের ভিটামিন সি যেকোনও ধরনের মানসিক ভারসাম্যহীনতাকে রোধ করে। মস্তিষ্কের অসুখ দূর করে কর্মক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে। ডিপ্রেশন আসতে দেয় না ফলে ব্রেন থাকে চাঙ্গা।
টমেটো
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে টমেটোতে আছে লাইকোপেন নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা দেহে প্রবেশ করার পর মস্তিষ্কের কোষের ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে, সেই সঙ্গে বিষাক্ত উপাদান থেকে মস্তিষ্ককে রক্ষা করে। ফলে অ্যালঝাইমার্স এবং ডিমেনশিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে আসে। একটা কাঁচা টমেটো রোজ খেতে পারেন।

Latest article