কিসান সম্মাননিধি প্রকল্প রূপায়ণে চূড়ান্ত ব্যর্থতা কেন্দ্রের, নোডাল অফিসার নিয়োগে দ্বারস্থ রাজ্যের

শুধু নিয়োগ নয়, তাঁদের বেতন দেওয়ার দায়িত্বও রাজ্যের উপর চাপিয়ে দিতে চাইছে তারা। অর্থাৎ কেন্দ্র নিজেদের ব্যর্থতার বোঝা চাপিয়ে দিতে চাইছে রাজ্যের উপরে।

Must read

প্রতিবেদন : নিজেদের প্রকল্পের রূপায়ণে চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়ে এবারে রাজ্যের কাছে কার্যত সাহায্য চাইছে কেন্দ্র। থমকে দাঁড়ানো মোদির কিসান সম্মাননিধি প্রকল্পের অগ্রগতির জন্য প্রতিটি পঞ্চায়েতে একজন করে ভিলেজ রিসোর্স পার্সন নিয়োগের দায়িত্ব রাজ্যকে নিতে বলছে কেন্দ্র। শুধু নিয়োগ নয়, তাঁদের বেতন দেওয়ার দায়িত্বও রাজ্যের উপর চাপিয়ে দিতে চাইছে তারা। অর্থাৎ কেন্দ্র নিজেদের ব্যর্থতার বোঝা চাপিয়ে দিতে চাইছে রাজ্যের উপরে।

আরও পড়ুন-অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখলেন দমকলমন্ত্রী

বাংলার কৃষকদের আয় বাড়াতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চালু করেছেন কৃষকবন্ধু প্রকল্প। সঙ্গে আছে বাংলা শস্য বিমা যোজনাও। বাংলার প্রায় দেড় কোটি কৃষক এই প্রকল্প দুটির সুবিধা পান। একই সঙ্গে বাংলায় প্রায় ৪৫ লক্ষ কৃষক কিসান সম্মাননিধি প্রকল্পের সুবিধাও পান। কিন্তু রাজ্যের প্রকল্পে সুবিধা বেশি থাকায় এই দু’টি প্রকল্প থেকে কয়েক যোজন পিছিয়ে নরেন্দ্র মোদির কিসান সম্মাননিধি প্রকল্প। বাংলায় এই যোজনার জন্য পড়ে থাকা আবেদনের সংখ্যা প্রায় ৫ লক্ষ। এদিকে দুয়ারে কড়া নাড়ছে ২৪’র লোকসভা নির্বাচন। কেন এই আবেদনকারীরা এখনও সুবিধা পাননি? কেন্দ্রের সাফাই, প্রয়োজনীয় সব নথি না থাকায় বা অনলাইন আবেদনে ভুল থাকার জন্যই এঁদের আবেদন খারিজ হয়েছে। তাই দ্রুত এইসব আবেদনের নিষ্পত্তি করতে এবং আগামী দিনে এই প্রকল্প যাতে দ্রুত এগিয়ে যায় তার জন্য বাংলার প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে ১জন করে ভিলেজ রিসোর্স পার্সন নিয়োগ করার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। বাংলায় এখন গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যা ৩৩৪২টি। সেই হিসাবে সমসংখ্যক পদে ভিলেজ নোডাল পার্সন নিয়োগ হতে চলেছে আগামী দিনে।

আরও পড়ুন-পৌষ সংক্রান্তি থেকে কংসাবতী তীরে গঙ্গারতি চালু করছে মেদিনীপুর পুরসভা

তবে মজার কথা কেন্দ্রের প্রকল্পের সফল রূপায়ণের দায়দায়িত্ব রাজ্যের ঘাড়ে ঠেলে দিয়েছে মোদি সরকার। বাংলার প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে যে ১জন করে ভিআরপি নিয়োগ করার কথা বলা হয়েছে, তাঁদের ন্যূনতম ৩ হাজার টাকা করে বেতন দিতে হলেও বছরে খরচ করবে ১২ কোটি টাকা। কেন্দ্র সরকার যেমন এই নিয়োগের কোনও দায়দায়িত্ব নিতে চাইছে না, তেমনি এই বেতনের বোঝাও নিতে চাইছে না। বেতন মেটানোর দায় রাজ্যের ঘাড়েই ঠেলে দিয়েছে তাঁরা। এই রিসোর্স পার্সন-রা গ্রামেতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কিসান সম্মাননিধি প্রকল্পের জন্য জমা পড়ে থাকা আবেদন এবং বাতিল হয়ে যাওয়া আবেদনগুলি খতিয়ে দেখবেন।

আরও পড়ুন-মুড়িগঙ্গায় নতুন চর, ড্রেজার এল ফরাক্কা থেকে

কার্যত কেন্দ্রীয় প্রকল্পকে বাংলায় সফল করে তুলতে বাংলাকে বোঝা বইতে হবে। আর সেই কারণেই ক্ষোভ ছড়িয়েছে নবান্নে। রাজ্যের আধিকারিকদের দাবি, কেন্দ্র সরকার ১ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে। এই টাকা বাংলার নায্য পাওয়া। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বোঝা সামলাতে এমনিতেই রাজ্যকে বিপুল চাপ সহ্য করতে হচ্ছে। গ্রামীণ অর্থনীতি সচল রাখতে এবং সাধারণ মানুষের জন্য ইতিমধ্যে নিজেদের তহবিল থেকে টাকা দিয়ে বিকল্প কাজের ব্যবস্থাও করেছে নবান্ন। এখন নতুন করে ভিলেজ রিসোর্স পারসন-দের নিয়োগের জন্য বেতনের বোঝাও সুকৌশলে রাজ্যের ঘাড়ে ঠেলে দিচ্ছে কেন্দ্র। কেন্দ্রের তরফে প্রকল্পের খরচ চালাতে মাত্র ৩ কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে। বাড়তি ৯ কোটি টাকা আসবে কোথা থেকে, তার ভার নিচ্ছে না কেন্দ্র

Latest article