নির্বাচনী বন্ড, এসবিআইকে কড়া নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

Must read

প্রতিবেদন : নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য অসম্পূর্ণ। শুক্রবার বন্ড সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ সাফ জানিয়ে দিল, অসম্পূর্ণ তথ্য জমা দিয়েছে এসবিআই। এই মর্মে স্টেট ব্যাঙ্ককে নোটিশ ধরিয়ে আগামী ১৮ মার্চের মধ্যে জবাব তলব করেছে শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ধমকের সুরে বিগত ৫ বছরের সমস্ত ডোনেশনের তথ্য জমা দিতে এসবিআই-কে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, বন্ড সম্পর্কিত ইউনিক অ্যালফা নিউমারিক নম্বরও গোপন রেখেছে স্টেট ব্যাঙ্ক। অবিলম্বে সেই তথ্যও আদালতকে স্পষ্ট করে জানাতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয় ওয়েবসাইটে আপলোড করা তথ্য ডিলিট করতে হবে। এই মামলায় পরবর্তী শুনানি সোমবার।

আরও পড়ুন: আগামিকালই লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা কমিশনের

সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) নির্দেশ মোতাবেক স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া গত মঙ্গলবার নির্বাচনী বন্ডের তথ্য জমা দিয়েছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে। বৃহস্পতিবারের মধ্যেই সেই তথ্য প্রকাশ্যে আনে কমিশন। বন্ডের ক্রেতা এবং প্রাপক দলের লম্বা তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশও করে দেওয়া হয়। সেই তালিকায় দেখা যাচ্ছে, বন্ড কেনায় শীর্ষে রয়েছে বিতর্কিত লটারি ব্যবসায়ী মার্টিন সান্তিয়াগোর সংস্থা ফিউচার গেমিং অ্যান্ড হোটেল সার্ভিসেস। তারা কিনেছে মোট ১,৩৬৮ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড। বন্ড কেনায় টাকার অঙ্কের নিরিখে তার পরেই রয়েছে বিখ্যাত তেলুগু ব্যবসায়ী কৃষ্ণা রেড্ডির সংস্থা মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। তারা ৯৬৬ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড রাজনৈতিক দলকে অনুদান দিয়েছে। সান্তিয়াগো মার্টিন হলেন মার্টিন গ্রুপ অফ কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান। তিনি খুব অল্প বয়সে লটারির ব্যবসা শুরু করেন। মার্টিন ‘লটারি কিং’ হিসাবে তিনি বেশি পরিচিত। লটারির ব্যবসায় প্রবেশের আগে তিনি মায়ানমারের ইয়াঙ্গুনে শ্রমিক হিসেবেও কাজ করতেন। এর পর তিনি ভারতে ফিরে আসেন।
শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, নির্বাচনী বন্ডের তথ্য নম্বর প্রকাশ্যে এলে রাজনৈতিক দল এবং অনুদানদাতাদের মধ্যে কী সম্পর্ক, তা বুঝতে সুবিধা হবে। এখন দেখার আগামী সোমবারের মধ্যে এই তথ্য কীভাবে সুপ্রিম কোর্টের হাতে তুলে দেয় এসবিআই। মূলত এসবিআই থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নির্বাচনী বন্ড নিয়ে যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন, তাতে দেশের কোন কোন সংস্থা নির্বাচন বন্ডের মাধ্যমে কত টাকা করে চাঁদা দিয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলিকে, তার তালিকা সামনে এসেছে। কিন্তু কোন সংস্থা থেকে কোন দলে কত চাঁদা গিয়েছে, তার আলাদা করে কোনও উল্লেখ নেই।
সবচেয়ে বেশি টাকা নিজেদের পকেটে ঢুকিয়েছে বিজেপি। এই তথ্যে লোকসভা নির্বাচনের আগে মোদি সরকারের অস্বস্তি বাড়বে। গত বুধবার নির্বাচনী বন্ড নিয়ে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া সুপ্রিম কোর্টকে এক হলফনামায় জানিয়েছিল, ২০১৯ সালের এপ্রিল মাস থেকে ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট ২২ হাজার ২১৭টি বন্ড ইস্যু করা হয়েছে। এর মধ্যে ২২ হাজার ৩০টি ভাঙিয়ে নিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। বাকি ১৮৭টিও ভাঙানো হয়েছে এবং তার অর্থ জমা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিলে।

Latest article