স্বজনপোষণ? ব্রাত্যর যুক্তিতে কুপোকাত বিরোধীরা

উপাচার্য নিয়োগে আগে কেন্দ্রীয় আইন বদল করুন : শিক্ষামন্ত্রী

Must read

প্রতিবেদন : আগে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের পদ্ধতি পরিবর্তন করুক কেন্দ্র। তারপরে এ-নিয়ে রাজ্যকে জ্ঞান দিক। বিধানসভায় রাজ্যের ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য বাছাইয়ে সার্চ কমিটি গঠন-সংক্রান্ত নিয়ম পরিবর্তনের জন্য আনা সংশোধনী নিয়ে আলোচনার সময় এভাবেই বিরোধী বিধায়কদের বিঁধলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। মুখ্যমন্ত্রীর মনোনীত প্রতিনিধিকে সার্চ কমিটিতে রাখা নিয়ে বিরোধীরা আপত্তি জানানোয় তাঁদের কড়া জবাব দেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, আইআইএমের মতো কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সার্চ কমিটিতে রাষ্ট্রপতির তিনজন প্রতিনিধি থাকেন। তাতে দোষ না হলে রাজ্যের সার্চ কমিটিতে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধি থাকলে অসুবিধা কোথায়? শিক্ষামন্ত্রী (Bratya Basu) জানান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসির বিধি মেনেই এই আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, উপাচার্য নিয়োগের সার্চ কমিটিতে রাজ্যপাল মনোনীত প্রতিনিধি থাকছেন, ইউজিসির প্রতিনিধিও থাকবেন, তা হলে শুধুমাত্র মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধি থাকবেন বলে বিরোধীদের আপত্তি কেন? রাজ্যপালকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে রাখার বিষয়টিও ঔপনিবেশিক মানসিকতার প্রতিফলন বলে দাবি করেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি অভিযোগ করেন, আলিয়া-সহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রাক্তন পুলিশকর্তা বা প্রশাসনিক আধিকারিকদের নিয়োগ করে রাজ্যপাল নিজেই ইউজিসির বিধি ভঙ্গ করছেন। কারণ সেখানে স্পষ্ট বলা আছে উপাচার্য হিসাবে মনোনীত প্রার্থীর ১০ বছর অধ্যাপনা করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
এদিকে, বিরোধী বিজেপি এই বিলের বিরোধিতা করে একে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবি জানায়। ভোটাভুটি হলে ওই প্রস্তাব ১২০-৫১ ভোটে পরাজিত হয় ও বিল পাশ হয়ে যায়।

আরও পড়ুন- লকেটও সুবিধাভোগী, কেন তদন্ত নয়? ইডির কাছে নালিশ জানালেন কাউন্সিলর

উল্লেখ্য, কলকাতা-সহ রাজ্যের ৩১ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য বাছাইয়ে সার্চ কমিটি গঠনে অর্ডিন্যান্স আগেই জারি হয়েছিল। এবার সেই অর্ডিন্যান্সকে আইনি স্বীকৃতি দিতে রাজ্য বিধানসভায় এই বিল আনা হয়েছিল। এই আইনে বলা হয়েছে, কারও মেয়াদ শেষ হওয়া বা ৬৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পরে নতুন উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত তিনিই উপাচার্য হিসেবে এক বছর কাজ চালাতে পারবেন। বর্তমান আইনে ছয় মাস পর্যন্ত তাঁকে কাজ করার সুযোগ দেওয়া রয়েছে। এ ছাড়া সার্চ কমিটি গঠন করতে হবে পাঁচ জন সদস্য নিয়ে। আগে তিন জন সদস্য নিয়ে এই কমিটি তৈরি করা হত। এই কমিটিতে আবার ফিরিয়ে আনা হচ্ছে ইউজিসির প্রতিনিধিকে।
বিধানসভায় পেশ হওয়া ‘পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ল সংশোধনী অর্ডিন্যান্স বিল ২০২৩’-এ স্পষ্ট বলা হয়েছে, সার্চ কমিটি এবার থেকে উপাচার্য পদে তিন থেকে পাঁচ জনের নাম সুপারিশ করতে পারবে। যাঁদের নাম সুপারিশ করা হবে তাঁদের অন্তত দশ বছরের বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এক্ষেত্রে যদি কারও দশ বছর কোনও প্রতিষ্ঠিত গবেষণা সংস্থা বা অ্যাকাডেমিক অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সংস্থায় নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা থাকে তা হলেও চলবে। তাঁর সঙ্গে থাকছেন মুখ্যমন্ত্রী, আচার্য, রাজ্য উচ্চশিক্ষা সংসদের প্রতিনিধি ছাড়াও রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি। তবে এঁদের মধ্যে আচার্যর প্রতিনিধিই সার্চ কমিটির চেয়ারম্যান হবেন।

Latest article