১৬ অগাস্টের মধ্যে রাজ্যে পঞ্চায়েতের সবক’টি বোর্ড গঠন

Must read

প্রতিবেদন : আগামী ১৬ অগাস্টের মধ্যে রাজ্যের ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের বোর্ড (Panchayat Board) গঠনের প্রক্রিয়া শেষ করতে নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। বুধবার রাজ্য বিধানসভায় পঞ্চায়েত ভোটের হিংসা প্রসঙ্গে বিরোধীদের আনা মুলতুবি প্রস্তাবের ওপর জবাবি ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি এই নির্দেশ দেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ১৬ অগাস্টের মধ্যে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে পঞ্চায়েতের নতুন বোর্ড (Panchayat Board) গঠন করতে হবে। ওই সময়ের মধ্যে নতুন বোর্ড গঠিত না হলে পঞ্চায়েত পরিচালনার দায়িত্ব জেলাশাসকদের হাতে চলে যাবে। সেক্ষেত্রে উন্নয়নের কাজ চালিয়ে যাওয়া এবং বরাদ্দ খরচে অসুবিধে হবে। গত ৮ জুলাই রাজ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোট। ১১ জুলাই প্রকাশিত হয়েছে ফলাফল। পঞ্চায়েত ভোট শেষ হয়ে গেলেও, আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকায় বোর্ড গঠন নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল। যদিও আদালত সরাসরি পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের ব্যাপারে কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে সেই ধোঁয়াশা অনেকটাই কেটে গেল। গ্রামীণ এলাকার স্থানীয় সরকার গঠনের নির্বাচন ঘিরে শাসক-বিরোধী তরজা এখনও চলছে। ভোটে লাগামহীন হিংসার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দল। যার জেরে জয়ী প্রার্থীদের ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সবথেকে বড় বিষয়, নাগরিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে গ্রামাঞ্চলের কোটি কোটি বাসিন্দা। জয়ের সার্টিফিকেট হাতে থাকা সত্ত্বেও, হাজার হাজার প্রার্থী কার্যত ‘পঙ্গু’ হয়ে বসে রয়েছেন। তারই মাঝে রাজ্যজুড়ে ডেঙ্গির হানা ক্রমবর্ধমান। নবান্নের এক শীর্ষ আধিকারিকের দাবি, রাজ্যের পুর এলাকাগুলিতে মশা মারার তেল, জলাশয়ে গাপ্পি মাছ ছাড়া, ধোঁয়া সহ একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু গ্রামীণ এলাকার বড় অংশে এই ডেঙ্গি প্রতিরোধে কিছু করা যাচ্ছে না।

আরও পড়ুন- ইন্ডিয়া’র প্রতিনিধি দল কাল মণিপুরে

নবান্নের এই কর্তার কথায়, জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েত— এই ত্রিস্তরীয় ব্যবস্থা কার্যত অকেজো হয়ে রয়েছে। পঞ্চায়েত এলাকার স্থানীয় মানুষের যাবতীয় নাগরিক পরিষেবা এই ত্রিস্তর প্রশাসনের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। বর্ষা শুরু হতেই ডেঙ্গি বাড়তে থাকলেও, এই মুহূর্তে বিশেষ কিছু করা যাচ্ছে না। কেন না, নতুন বোর্ড তৈরি না হলে বিভিন্ন খাতে তহবিলের টাকা পেতে সমস্যা হচ্ছে। পাশাপাশি বিদায়ী বোর্ডের সদস্যরা স্থানীয় মানুষের অভিযোগ পেলেও, তাতে বিশেষ কর্ণপাত করছেন না। তাঁরা বলছেন, আমরা তো সরে গিয়েছি। নতুন যাঁরা বোর্ড গঠন করবেন, তাঁদের কাছে আবেদন করুন। জয়ী প্রার্থীদের বক্তব্য, আদালতে আমাদের ভাগ্য ঝুলে রয়েছে। যতদিন না এই জটিলতা কাটছে, ততদিন নাগরিক পরিষেবা সংক্রান্ত কাজ করা যাচ্ছে না। অর্থাৎ ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি বাছাই হয়ে গেলেও, গ্রামের একটা বড় অংশের মানুষের এখন শিরে সংক্রান্তি দশা। কোথাও অভিযোগ জানিয়েও মিলছে না সুরাহা। পঞ্চায়েত দফতর সূত্রের খবর, শুধু ডেঙ্গি মোকাবিলাই নয়, এলাকার ময়লা সাফাই, টিকাকরণ অভিযান, বাড়ির নকশা অনুমোদন সহ একাধিক কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। কিন্তু গোটা বিষয়টি আদালতের রায়ের উপর আটকে থাকায় সরকারের কিছু করার নেই। বিরোধীদের দাবি, হাইকোর্টে সন্তোষজনক রায় না মিললে, সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। স্বভাবতই পঞ্চায়েত এলাকায় মানুষের দুর্ভোগ আরও বিলম্বিত হওয়ার আশঙ্কা।

Latest article