এক দশকের রেকর্ড ভাঙল মুদ্রাস্ফীতি, খাদ্যদ্রব্যের দাম বেড়েছে ২০ শতাংশ

এমনিতেই অতিমারিকালে দেশে বিনিয়োগ অত্যন্ত ব্যাহত হয়েছিল। সুদ বৃদ্ধির ফলে বিনিয়োগ কমে গেলে তার নেতিবাচক প্রভাব অর্থনীতিতে পড়বেই।

Must read

নয়াদিল্লি : মুদ্রাস্ফীতি আট বছরের সর্বোচ্চ। এবার গোদের উপর বিষফোড়া পাইকারি বাজারেও রেকর্ড মূল্যস্ফীতি। কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রকের রিপোর্ট বলছে, এপ্রিল মাসে দেশের পাইকারি মূল্যস্ফীতির সূচক ১৫.০৮। গত এক দশকের রেকর্ড। গত বছরের এপ্রিলে এই মান ছিল ছিল ১০.৭৪ শতাংশ। লাগাতাক তেরো মাস পাইকারি মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কেই রয়েছে। কেন্দ্রের দাবি, এপ্রিলে মূল্যস্ফীতির এই উচ্চ হারের কারণ, খনিজ তেল, ধাতু, অপরিশোধিত জ্বালানি, প্রাকৃতিক গ্যাস, খাদ্যপণ্য ইত্যাদির দাম বৃদ্ধি।

আরও পড়ুন-কান্দির তিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, বাড়ছে ৩০টি করে শয্যা

প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিলে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৮.৩৫ শতাংশ, যা মার্চে ছিল ৮.০৬ শতাংশ। খাদ্যদ্রব্যের মূল্যস্ফীতির প্রধান কারণ, সবজির চড়া দাম। কেবল আলুর দামই বেড়েছে ১৯.৮৪ শতাংশ। এর পাশাপাশি, ফলের দামও বেড়েছে। গমের দামেও রেকর্ড ১০.৭০ শতাংশ বৃদ্ধি ঘটেছে। বেড়েছে ডিম-মাছ-মাংসের দাম। এপ্রিল মাসে হাইস্পিড ডিজেলের দাম বেড়েছে ৬৬.১৪ শতাংশ, এলপিজির দাম বেড়েছে ৩৮.৪৮ শতাংশ।

আরও পড়ুন-বীরভূমে ভার্চুয়াল উদ্বোধন হল তিনটি প্রকল্পের, মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে খুলল সেতু

অর্থনীতির কারবারিরা বলছেন, অতিমারি এবং যুদ্ধের কারণে তৈরি হওয়া ক্রমবর্ধমান অনিশ্চয়তার আবহে ভারতকে প্রধানত তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে— সরকারি এবং বেসরকারি, উভয় ক্ষেত্রেই ক্রমবর্ধমান ঋণের বোঝা, মূল্যস্ফীতি এবং আর্থিক ক্ষেত্রে অস্থিরতা। এখন মূল্যবৃদ্ধির হার প্রত্যাশিত হারের তুলনায় বেশি। পাশাপাশি সাপ্লাই চেন বা জোগান-শৃঙ্খল ব্যাহত হয়েছে। আর্থিক ক্ষেত্রেও অস্থিরতার মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ভারতের শেয়ার বাজারেও তুমুল ওঠাপড়া চলছে। এ ছাড়া, বিদেশি বিনিয়োগও উল্লেখযোগ্যভাবে দেশ থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। তথ্যাভিজ্ঞ মহলের আশঙ্কা, ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছেও প্রবল উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইতিমধ্যেই একদফা রেপো রেট বাড়ানো হয়েছে। সুদের হার বাড়ানো মানেই বিনিয়োগের খরচ বেড়ে যাওয়া— কারণ, ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিতে গেলে সাধারণ গ্রাহক বা কোনও সংস্থাকে বেশি সুদ বহন করতে হবে। এমনিতেই অতিমারিকালে দেশে বিনিয়োগ অত্যন্ত ব্যাহত হয়েছিল। সুদ বৃদ্ধির ফলে বিনিয়োগ কমে গেলে তার নেতিবাচক প্রভাব অর্থনীতিতে পড়বেই।

Latest article