প্রতিবেদন : শুক্রবারই পেয়েছিলেন হুমকি-চিঠি। আর তারপরই শনিবার গোটা দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুর ইস্তফা-নাটক নিয়ে সরগরম ছিল যাদবপুর। দিনের শেষে অবশ্য উপাচার্য জানিয়ে দেন রেজিস্ট্রারের ইস্তফা গৃহীত হয়নি, তিনি নিজের দায়িত্ব পালন করবেন। রেজিস্ট্রার অবশ্য ইস্তফা দেওয়ার কথা সংবাদমাধ্যমের সামনে স্বীকার করেননি। উল্টে তিনি জানিয়েছেন, এই অবস্থায় ইস্তফা দেওয়ার কথা তিনি ভাবতেই পারেন না।
আরও পড়ুন-দেশের সেরা স্মার্ট সিটি হল নিউটাউন
শুক্রবারই যাদবপুরে সব পক্ষকে নিয়ে একটি বৈঠক হয়। সেখানেও একাধিক অভিযোগ ওঠে রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুর বিরুদ্ধে। ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় বারবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে রেজিস্ট্রারের ভূমিকা। ঘটনার দিন রাতে তাঁকে ফোনে গোটা ঘটনার কথা জানানো হলেও তিনি কোনও উদ্যোগ নেননি বলেই অভিযোগ। ঘটনার কথা জানার পর তিনি ফোন বন্ধ করে দেন। অসুস্থতার দোহাই দিয়ে পাঁচদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রিসীমানায় তাঁকে দেখা যায়নি। পাঁচদিন পর এসে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের মুখে পড়ে কান্নাকাটি জুড়ে দেন রেজিস্ট্রার।
আরও পড়ুন-দুয়ারে সরকারে ভ্রাম্যমাণ শিবিরে পরিষেবা
এরই মধ্যে শুক্রবার একটি করে হুমকি চিঠি পান রেজিস্ট্রার ও জয়েন্ট-রেজিস্ট্রার। ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় ধৃত সৌরভ চৌধুরীর কোনও ক্ষতি হলে তাঁদের গুলি করে মারা হবে। অধ্যাপক রানা রায় নামে একজন এই চিঠি দেন বলেই জানা গিয়েছে। এরপরই শনিবার সকাল থেকে রটে যায় ইস্তফা দিয়েছেন স্নেহমঞ্জু বসু। শনিবার সারাদিনই তাঁর ইস্তফার জল্পনায় সরগরম ছিল শিক্ষামহল। বিকেলের পর যাবতীয় জল্পনা উড়িয়ে সংবাদমাধ্যমে জানিয়ে দেন তিনি কোনও ইস্তফাপত্র দেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অবস্থায় তিনি পদ ছাড়ছেন না বলেও দাবি করেন রেজিস্ট্রার। অস্থায়ী উপাচার্যকে চিঠি দেওয়া নিয়েও স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাননি তিনি। তবে রেজিস্ট্রারের কাছ থেকে একটি চিঠি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন যাদবপুরের সদ্য-নিযুক্ত অস্থায়ী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ। চিঠি পেলেও তাঁর ইস্তফা নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাননি উপাচার্য। তবে রেজিস্ট্রার তাঁর দায়িত্ব পালন করবেন বলেই জানিয়ে দেন উপাচার্য। রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুও চিঠির বিষয়টিকে অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে এড়িয়ে গিয়েছেন। ফলে সব মিলিয়ে সারাদিন ধরেই রেজিস্ট্রারের ইস্তফা-নাটক নিয়ে সরগরম ছিল যাদবপুরের অন্দরমহল।
আরও পড়ুন-সুনীল আকাশ
এদিকে ছাত্রমৃত্যু চলছে পুলিশি তদন্ত। গ্রেফতার হয়েছেন ১৩ জন প্রাক্তন ও বর্তমান পড়ুয়া। এরই মধ্যে শুক্রবার ধৃত প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরীর কিছু হলে তাঁকে গুলি করে খুন করা হবে বলে একটি হুমকি-চিঠি পান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও জয়েন্ট রেজিস্ট্রার। চিঠিতে প্রেরক হিসেবে অধ্যাপক রানা রায় নামে একজনের নাম রয়েছে। সেই চিঠি পাওয়ার পরই তা যাদবপুর থানার হাতে তুলে দিয়েছেন দু’জনেই। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৬, ৫০৯ এবং ৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে।