শহরে ফিরে জনপ্লাবনে ভেসে গেলেন প্রীতমরা

Must read

চিত্তরঞ্জন খাঁড়া: ঘরে ফিরে চ্যাম্পিয়নরা বীরের সম্মান পেলেন। আট বছর আগের ছবিটা ছিল অনেকটা এমনই। সে বার ১৩ বছর পর আই লিগ জয়ের খরা কাটিয়ে বেঙ্গালুরু এফসি-র সঙ্গে ড্র করে ভারতসেরা হয়ে শহরে ফিরেছিল মোহনবাগান (Mohun Bagan)। এবারও সেই বেঙ্গালুরুকে হতাশার অন্ধকারে ডুবিয়ে প্রথমবার আইএসএল ট্রফি জিতে শহরে ফিরল সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। আনন্দ এবার দ্বিগুণ হয় মোহনবাগান নামের আগে থেকে এটিকে শব্দ সরে যাওয়ায়। তাই চ্যাম্পিয়নদের বরণ করে নিতে বৃষ্টিস্নাত শহরেও জনবিস্ফোরণ। মোহনবাগানের বিমান নামে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে। কিন্তু অনেক সকাল থেকেই বিমানবন্দরের এক নম্বর গেটের সামনে সমর্থকরা সবুজ-মেরুন পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন, চ্যাম্পিয়ন লেখা টি-শার্ট পরে নায়কদের অপেক্ষায় ছিলেন।

ফুটবলাররা একে একে যখন বিমানবন্দরের বাইরে এলেন, তখন সমর্থকদের উচ্ছ্বাস-উন্মাদনার ডেসিবেলের মাত্রা সীমা ছাড়াল। ‘আমরা কারা মোহনবাগান’ আওয়াজটা শুধু বিমানবন্দর চত্বরেই আটকে থাকল না। বাতাসে ধাক্কা খেয়ে যেন ছড়িয়ে পড়ছিল শহর থেকে বাংলার সীমানা ছাড়িয়ে গোটা দেশে। আবারও যে ভারতসেরা মোহনবাগান (Mohun Bagan)। জনি কাউকো, ব্রেন্ডন হ্যামিল, দিমিত্রি পেত্রাতোস, স্লাভকোরা বিমানবন্দরের বাইরে বেরনোর সময় এই দৃশ্য মোবাইল ক্যামেরায় তুলে রাখছিলেন। অধিনায়ক প্রীতম কোটালের কাছে এই ছবি অবশ্য নতুন নয়। আট বছর আগেও আই লিগ জিতে ফিরে এভাবেই আবেগের জোয়ারে ভেসে গিয়েছিলেন। এদিন দলের সঙ্গেই একই বিমানে ছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস (Sports Minister Aroop Biswas)। অভিভাবকের মতোই টিম মোহনবাগানকে আগলে রাখছিলেন।

আরও পড়ুন: জুয়ানকে রেখেই দল মোহনবাগানের, কোচের বিরুদ্ধে তোপ বুমোসের

১২০ মিনিটের রুদ্ধশ্বাস লড়াই শেষে টাইব্রেকারে জয়। সারা রাত না ঘুমিয়ে ভোরেই কলকাতায় ফেরার বিমান ধরতে হয়েছে। ফুটবলাররা ক্লান্ত হলেও চোখে মুখে তার ছাপ নেই। সমর্থকদের ভালবাসায় ডুবে যান তাঁরা। টিম বাসে উঠে সমর্থকদের অভিনন্দন গ্রহণ করতে এবং তাঁদের কৃতজ্ঞতা জানাতে ভুললেন না বিশাল কাইথ, প্রীতম, মনবীর সিংরা। বাইক র‍্যালি করেও প্রচুর সমর্থক বিমানবন্দরে এসেছিলেন ফুটবলারদের বরণ করে নিতে। টিম বাস এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে সমর্থকরাও বাইকে চেপে পাশে এগোতে থাকেন। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই অনেকে বাসের সামনে দাঁড়িয়ে ফুটবলারদের ছবি তুলতে থাকেন। ভিআইপি রোড স্তব্ধ হয়ে যায় সমর্থকদের উৎসবের জেরে। হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। পরিস্থিতি সামাল দিয়ে পুলিশ এসকর্ট করে মধ্য কলকাতায় সঞ্জীব গোয়েঙ্কার আরপিএসজি কার্যালয়ে গোটা দলকে আনা হয় সংবাদমাধ্যমের উপস্থিতিতে ট্রফি সেলিব্রেশনের জন্য। তবে এক ঘণ্টার পথ আসতে সময় লেগে যায় প্রায় পৌনে তিন ঘণ্টা।

মঞ্চে ট্রফি সেলিব্রেশনে মধ্যমণি তখন সঞ্জীব গোয়েঙ্কা। তিনিই ফুটবলারদের ডেকে নিলেন মঞ্চে। দিমিত্রি, স্লাভকোরা বিখ্যাত ‘চ্যাম্পিয়ন’ গানের সঙ্গে কোমর দুলিয়ে ট্রফি জয়ের উৎসবে মেতে ওঠেন। ফুটবলারদের থেকে নিজেকে একটু দূরেই রেখেছিলেন কোচ জুয়ান ফেরান্দো। কিন্তু শীর্ষকর্তার অনুরোধ মেনে ছাত্রদের সঙ্গেই ট্রফি স্পর্শ করলেন স্প্যানিশ কোচ। দেদার ছবির আবদারও মেটালেন কোচ, ফুটবলাররা।

Latest article