মাওবাদী ডেরার তকমা ঘোচাতে রোজ জাতীয় সংগীত

এই উদ্যোগের পিছনে নেই কোনও স্থানীয় নেতা। গ্রামের বাসিন্দারাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ৩৬৫ দিনই সকালে তাঁরা জাতীয় সংগীত গাইবেন

Must read

প্রতিবেদন : গড়চিড়ৌলি। নামটা শুনলেই মনে পড়ে মাওবাদী সন্ত্রাসের কথা। বছরের কোনও না কোনওদিন এই গ্রামে হয় মাওবাদীরা বন্দুক হামলা চালিয়েছে, নয়তো বা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। মাওবাদীদের অতর্কিত হামলায় শহিদ হয়েছেন বহু জওয়ান ও পুলিশকর্মী। বেঘোরে প্রাণ হারিয়েছেন গ্রামবাসীরা। মাওবাদীদের বিরুদ্ধে একটানা অভিযানের পর পরিস্থিতি এখন আগের থেকে অনেকটাই শান্ত। তবুও গড়চিড়ৌলি আজও গোটা দেশের কাছে মাওবাদীদের ডেরা হিসেবেই পরিচিত।

আরও পড়ুন-বিরোধী নেতা মানসিক ভারসাম্যহীন, অভিষেককে ভয় পেয়ে আক্রমণ

মুম্বই থেকে ৯০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গ্রাম মুলছেরা। গ্রামের জনসংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার। কিন্তু মাওবাদীদের ডেরা, এই তকমায় খুশি নন গড়চিড়ৌলির মুলছেরা গ্রামের বাসিন্দারা। তাই গ্রামকে অন্যভাবে মানুষের কাছে পরিচিত করতে এক অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা। এই গ্রামের সব বাসিন্দা দিনের শুরু করেন জাতীয় সংগীত গেয়ে। সম্মিলিত দেশপ্রেমের বার্তা দিতেই তাঁদের এই উদ্যোগ। জানা গিয়েছে, মুলছেরা গ্রামের বাসিন্দারা প্রতিদিন পৌনে ৯টায় সময় সমবেত হয়ে জাতীয় সংগীত জনগণমন গাইতে থাকেন। তাঁদের দেখাদেখি পাশের গ্রাম বিবেকানন্দপুরের বাসিন্দারাও নিয়ম করে একই সময় সমবেত হয়ে জাতীয় সংগীত গাইতে শুরু করেছেন।

আরও পড়ুন-রায় জমিদারবাড়িতে প্রতিমা সোলার

এমনকী, জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সময় কোনও বাস ওই এলাকা দিয়ে গেলে বাসচালক বাস থামিয়ে কন্ডাক্টর এবং যাত্রীদের নিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে গলা মেলান। জাতীয় সংগীত গাওয়ার এই রেওয়াজ প্রথম শুরু হয়েছিল তেলেঙ্গানার নালগোন্দা গ্রামে। পরে মহারাষ্ট্রের সাংলিতে। এবার মহারাষ্ট্রের গড়চিড়ৌলি জেলার বাসিন্দারা সেই রেওয়াজে শামিল হলেন। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, জাতীয় সংগীত শুরুর আগে সাড়ে ৮টা থেকেই গ্রামের সব দোকানপাট বন্ধ হতে শুরু করে। হাটেও যাঁরা ব্যস্ত থাকেন, তাঁরাও সাড়ে আটটা বাজলে ডালা গোটাতে থাকেন। জাতীয় সংগীত শেষ হওয়ার পর ফের তাঁরা বিকিকিনি শুরু করেন। এ বিষয়ে সব থেকে বেশি চমকপ্রদ তথ্য হল, এই উদ্যোগের পিছনে নেই কোনও স্থানীয় নেতা। গ্রামের বাসিন্দারাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ৩৬৫ দিনই সকালে তাঁরা জাতীয় সংগীত গাইবেন।

Latest article