আন্দোলন রুখতে নয়া কৌশল? কৃষকদের চাল, গমের বদলে ডাল, ভুট্টা, তুলো উৎপাদনের পরামর্শ

কৃষক আন্দোলন রুখতে এবার কি গেরুয়া শিবিরের নতুন চাল? কৃষকদের মূল দাবিকে পাশ কাটিয়ে আন্দোলনকারীদের সামনে নতুন সমাধানসূত্র পেশ করেছে কেন্দ্র

Must read

প্রতিবেদন : কৃষক আন্দোলন রুখতে এবার কি গেরুয়া শিবিরের নতুন চাল? কৃষকদের মূল দাবিকে পাশ কাটিয়ে আন্দোলনকারীদের সামনে নতুন সমাধানসূত্র পেশ করেছে কেন্দ্র। আর নতুন প্রস্তাব বুঝে উঠতেই এবার দুদিন সময় চেয়ে নিলেন আন্দোলনরত কৃষকরা। রবিবার চতুর্থ দফার বৈঠকে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে কৃষকদের প্রস্তাব দেওয়া হয়, ধান ও গমের পরিবর্তে তাঁরা ডাল, তুলো বা ভুট্টার মতো নতুন ফসল উৎপাদন করলে কেন্দ্রীয় সমবায় সংস্থাগুলি তা আগামী পাঁচ বছর ন্যায্য দামে কেনার চুক্তি করতে প্রস্তুত। কেন্দ্রের যুক্তি, এতে জমির জলস্তর নেমে যাওয়াও আটকানো যাবে। কৃষক সংগঠনের নেতারা কেন্দ্রের ওই প্রস্তাব বিবেচনার জন্য দু’দিন সময় চেয়েছেন।

আরও পড়ুন-ইন্ডিয়ার প্রার্থী হতে পারেন কমল হাসান

ততক্ষণ পর্যন্ত দিল্লি চলো অভিযান স্থগিত রাখা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। রবিবার গভীর রাতে চতুর্থ দফার বৈঠক বসে চণ্ডীগড়ে। কৃষক নেতাদের সঙ্গে সেই বৈঠকে অংশ নেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা, শিল্প বাণিজ্য ও উপভোক্তামন্ত্রী পীযুষ গয়াল ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই। বৈঠকে ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বা এমএসপির সঙ্গে কেন্দ্র শস্য বৈচিত্র্যকে জুড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। লক্ষণীয়, পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলের ধান, গম ও আখ চাষের কারণে কৃষিজমির জলস্তর দ্রুত কমে যাচ্ছে। এই বিষয়টি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা আলোচনায় তুলে ধরেন। কৃষক নেতারাও জলস্তর কমে যাওয়ায় নিজেদের উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তার কথা জানান। এই প্রসঙ্গেই উঠে আসে ধান ও গমের বদলে অন্য ফসল উৎপাদনের বিষয়টি। সরকারি সূত্রের খবর, কৃষক নেতাদের বলা হয় তাঁরা অন্য ফসল উৎপাদনের চিন্তা করলে সরকার তাঁদের সমর্থন করবে। ধান ও গমের বদলে বিভিন্ন ধরনের ডাল, তুলো বা ভুট্টার চাষ করলে তাতে জমির ঊর্বরতা যেমন রক্ষা করা যাবে, জলস্তরও তেমন ধরে রাখা যাবে। উৎপাদিত ফসল ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে কিনে নেবে ন্যাশনাল কো–অপারেটিভ কনজিউমার্স ফেডারেশন (এনসিসিএফ) ও ন্যাশনাল অ্যাগ্রিকালচারাল কো–অপারেটিভ মার্কেটিং ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার (নাফেড) মতো সমবায় সংস্থা। মন্ত্রীরা জানান, কৃষকদের স্বার্থে পরবর্তী পাঁচ বছর ওই দুই সংস্থা উৎপাদিত সব ফসল কিনে নিতে কৃষকদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হবে। ফসল বৈচিত্র্যের ফলে কৃষকেরা উপকৃত হবেন এবং আমদানি খরচ কমবে। কিন্তু কেন্দ্রের এই যুক্তি এবং প্রতিশ্রুতির সারবত্তা কতটা তা নিয়ে সম্ভবত দোলাচলে কৃষক আন্দোলনের নেতৃত্ব।

আরও পড়ুন-রাজ্যপালের রিপোর্টকে কটাক্ষ তৃণমূলের

অতীতের অভিজ্ঞতার সূত্র ধরে তাঁরা সম্ভবত নিশ্চিত হতে পারছেন না সমস্যা সমাধানে কেন্দ্রের আন্তরিকতা আসলে কতটা। লোকসভা ভোটের মুখে কৃষকদের আন্দোলন থেকে বিরত করতেই মূল দাবি এড়িয়ে নতুন প্রস্তাব পেশ কিনা, তা বুঝে নিতে চান কৃষক নেতারা। বৈঠক শেষে আন্দোলনকারী কৃষকদের নেতা সারওয়ান সিং পান্ধের বক্তব্যেও এই সংশয়ের প্রতিফলন। তাঁর কথায়, সরকারি প্রস্তাব তাঁরা বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের কাছে রাখবেন। তাঁদের অভিমত দুদিন পর সরকারকে জানাবেন। মন্ত্রীদের প্রতি তাঁর সরাসরি প্রশ্ন, অন্যান্য দাবি কত দ্রুত মানা হবে, সরকার আগে তা নির্দিষ্ট করে জানাক। ততদিন পর্যন্ত কৃষকরা পাঞ্জাব–হরিয়ানা সীমান্তে অবস্থান করবেন। নিজেদের মুখ বাঁচাতে কেন্দ্র কোনও ফাঁদ পাতছে কিনা তা বুঝে নিতে চায় আন্দোলনকারী কৃষক সংগঠনগুলি।

Latest article