ত্রিপুরায় গণতন্ত্র নেই, অপশাসনের রাজত্ব, বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ কুণালের জনসংযোগে তৃণমূল

ত্রিপুরা বিধানসভার উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের হয়ে প্রচার করতে আজ আসছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

Must read

আগরতলা : ত্রিপুরা বিধানসভার উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের হয়ে প্রচার করতে আজ আসছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে সোমবার আগরতলায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে কড়া তোপ দাগলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। ত্রিপুরায় বিজেপির বিরুদ্ধে অপশাসনের অভিযোগ তুলে কুণাল বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই বিপ্লব দেবের অপশাসন নিয়ে সরব ছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের অভিযোগ যে সঠিক এবং প্রশাসন যে ব্যর্থ তা আজ প্রমাণিত। তৃণমূলের চাপেই প্রশাসনের মুখকে সরিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে গেরুয়া শিবির। বিপ্লব দেবের ব্যর্থতা আর বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল, এই দুইয়ের জেরে অতিষ্ঠ ত্রিপুরার মানুষ।

আরও পড়ুন-অভিষেক আসার আগেই উত্তপ্ত ত্রিপুরা, আক্রান্ত তৃণমূল কংগ্রেস, নীরব দর্শক পুলিশ

তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, তৃণমূল জমানায় বাংলার অসংখ্য জনমুখী প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন বঙ্গবাসী। ত্রিপুরার মানুষেরও সেই অধিকার আছে। কুণালের আবেদন, যদি এখানকার মানুষও উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সুবিধা পেতে চান, তাহলে তৃণমূলকে সমর্থন করুন। পাশাপাশি বিজেপিকে কটাক্ষ করে কুণাল বলেন, যদি চান পেট্রোপণ্যের দাম বাড়ুক, এলআইসি-সহ বিভিন্ন সংস্থা বেসরকারীকরণ হোক, বেকারত্ব বাড়ুক— তাহলে বিজেপিকে ভোট দিন। আর যদি চান বাংলা-ত্রিপুরা মিলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের গদি উল্টে দিক— তাহলে তৃণমূলের হাত শক্ত করুন।
ত্রিপুরায় গণতন্ত্র নেই বলেও এদিন সরব হন কুণাল ঘোষ। বলেন, বাংলায় গণতন্ত্র আছে বলেই বিজেপি-র সব খবর করে সংবাদমাধ্যম। এমনকী, বাংলার সমালোচনাও হয়। কিন্তু কোনও সংবাদমাধ্যমের উপর আক্রমণ হয় না। কিন্তু ত্রিপুরায় গণতন্ত্র নেই বলে সংবাদমাধ্যমের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। সংবাদপত্রের অফিসে ভাঙচুর হয়। পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র আছে৷ সেখানে দাঁড়িয়ে কথা বলা যায়, সমালোচনাও করা যায়। কিন্তু ত্রিপুরায় এই বাক্-স্বাধীনতা আদৌ নেই।

আরও পড়ুন-হাওড়ার পান পাড়ি দিচ্ছে এবার বিদেশে

বিজেপি নেত্রীর তীব্র বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বাংলায় বিক্ষিপ্ত অশান্তি প্রসঙ্গে কুণাল বলেন, পশ্চিমবঙ্গ ভাল আছে। উল্টে, মানুষে-মানুষে বিভাজন করতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিষ ঢালছে বিজেপিই। অশান্তি-গন্ডগোল পাকিয়েছে বিজেপি। ওদের জন্যই দেশের নানা প্রান্তে সমস্যা হচ্ছে। গোষ্ঠীবাজি করে বিজেপি অশান্তিতে ইন্ধন দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে শান্তি ও সুস্থিতি ফেরাতে কাজ করছে বাংলার প্রশাসন। এই প্রসঙ্গে সিপিএম-কংগ্রেসকেও তীব্র কটাক্ষ করেন কুণাল। বলেন, বিধানসভায় শূন্য পাওয়াদের দল অন্য ইস্যু না পেয়ে বিভাজনকামী শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে অশান্তি করছে।

আরও পড়ুন-নূপুরকে তলব করল নারকেলডাঙা থানা

ত্রিপুরায় প্রশাসনের মদতে বিজেপির নির্বাচনীবিধি অমান্য করা নিয়েও সরব হন কুণাল ঘোষ৷ এই প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, সরকার ভয় পাচ্ছে আমাদের৷ বারবার নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণের পরেও তৃণমূলের পতাকা, ফেস্টুন ছিঁড়ে প্রচারে বাধা দেওয়া হচ্ছে৷ আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ধরে নিয়ে নির্বাচনী প্রচারে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে গেরুয়া শিবির৷ এতেই প্রমাণিত, তৃণমূলের ভয়ে ভীত বিজেপি৷ এদিন ৬ নং আগরতলা বিধানসভা কেন্দ্র এবং ৪ বরদোয়ালি বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থীদের নিয়ে পথসভায় উপস্থিত ছিলেন কুণাল ঘোষ, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সুবল ভৌমিক প্রমুখ৷ এই কেন্দ্রের প্রার্থীরা হলেন পান্না দেব ও সংহিতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ আগরতলার জিবি বাজারে প্রচার কর্মসূচি চলাকালীন ইচ্ছাকৃত প্ররোচনা ও হামলা চালায় বিজেপির দুষ্কৃতীরা৷ প্রচারসভায় ইট–পাথর ছুঁড়ে সভা বানচালের চেষ্টা করলেও গেরুয়া শিবিরের তাণ্ডব উপেক্ষা করেই প্রচার চালায় তৃণমূল৷

Latest article