জোশীমঠে ভাঙার প্রস্তুতি শুরুর মুখেই বাধা, প্রবল বিক্ষোভ, ক্ষতিপূরণের দাবি

ধসে গিয়েছে জোশীমঠের ভিত্তি। উত্তরাখণ্ড পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল বলেছেন, এখনও পর্যন্ত ৬৭৮টি বাড়িতে ফাটল ধরেছে।

Must read

প্রতিবেদন : শুরুতেই প্রবল বাধার মুখে পড়ল বিজেপি প্রশাসন৷ উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠে মঙ্গলবার ফাটলধরা একাধিক বাড়ি ও হোটেল ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ এলাকার দুটি হোটেল ‘মাউন্ট ভিউ’ ও ‘মালারি ইন’ একটি অন্যটির গায়ে হেলে পড়েছে৷ বড় বিপর্যয় এড়াতে এদিনই তা ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রশাসন৷ কিন্তু তার আগেই শুরু হয় এলাকাবাসীর তুমুল বিক্ষোভ৷ বিজেপির সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয় মানুষ৷ বাড়ি ভাঙার আগে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিতে সরকারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন তাঁরা৷ এর জেরে ভাঙার কাজ থমকে যায়৷ বিপজ্জনক অবস্থায় থাকা হোটেল দুটি ভাঙার সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ হোটেল মালিকদের বক্তব্য, অবিলম্বে এককালীন ক্ষতিপূরণ না দিলে বাধা দেওয়া হবে৷

আরও পড়ুন-মাঝআকাশে দরজা খোলা বিমানের

এদিকে, জোশীমঠ ইস্যুতে মঙ্গলবার দ্রুত শুনানিতে রাজি হয়নি সুপ্রিম কোর্ট৷ আদালতের প্রশ্ন, সব জরুরি বিষয় নিয়েই কেন এখানে ছুটে আসতে হবে? ১৬ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য হয়েছে৷ জ্যোর্তিমঠের ৪৬তম শঙ্করাচার্য স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী এই মামলাটি করেছিলেন। পাহাড়ি জনপদের এই বিপর্যয়ের পরিস্থিতিতে জোশীমঠ ও আশপাশের এলাকায় নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জোশীমঠে ভয়াবহ ভূমিধসে শেষ ২৪ ঘণ্টায় আরও প্রায় ৮০টি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। রাতারাতি বাড়িছাড়া শতাধিক পরিবার। জোশীমঠের বাড়িগুলোকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। অতি বিপজ্জনক, বিপজ্জনক এবং নিরাপদ চিহ্নিতকরণ। অতি বিপজ্জনক বাড়িগুলিকে লাল কালি দিয়ে দাগ দেওয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার থেকেই ওই বাড়িগুলি ভাঙা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রায় ৪০০০ মানুষকে নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। জোশীমঠের ৩০ শতাংশ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জোশীমঠের পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি একটি রিপোর্ট তৈরি করছে। ওই রিপোর্ট শীঘ্রই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জমা দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন-কামারহাটিতে বিস্ফোরণে জখম ২

এদিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী অজয় ভাট বলেছেন, সরকার সবার আগে জোশীমঠের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ চালাচ্ছে। পাশাপাশি ওই অঞ্চলে থাকা সেনা ও আধাসেনারও শিবিরও সরিয়ে নেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এদিন স্থানীয় মানুষের সঙ্গে তাঁদের সমস্যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। মন্ত্রীর সঙ্গে আলাপচারিতায় স্থানীয় বাসিন্দারা জোশীমঠের এই ঘটনার জন্য এনটিপিসির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ভেটে পড়েন। তাঁদের অভিযোগ এনটিপিসি কোনওরকম পরিকল্পনা ছাড়াই একাধিক সুড়ঙ্গ তৈরি করেছে। তার ফলেই ধসে গিয়েছে জোশীমঠের ভিত্তি। উত্তরাখণ্ড পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল বলেছেন, এখনও পর্যন্ত ৬৭৮টি বাড়িতে ফাটল ধরেছে।

আরও পড়ুন-উত্তরপ্রদেশে সেনাকর্তার গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিল দুষ্কৃতীরা

এলাকার বাসিন্দাদের প্রায় সকলকেই নিরাপদ আশ্রয় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ চলছে। ধসপ্রবণ এলাকায় রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর আটটি এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর একটি প্রতিনিধিদল উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। পাশাপাশি নামানো হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশবাহিনীও। প্রশাসনের তরফে স্থানীয় মানুষকে দ্রুত এলাকা ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয় চলে যেতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে৷ ধসের কারণ জানতে এলাকায় ভূতাত্ত্বিক সমীক্ষাও করা হবে।

Latest article