প্রতিবেদন : বাংলার বঞ্চনার বিরুদ্ধে ফের গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার বিধানসভার ভিতরে। বুধবার বিধানসভায় বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধির বিল সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন তিনি। সে বিষয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিভিন্ন ইস্যু টেনে ধরে বিরোধীদের তুলোধোনা করেন।
আরও পড়ুন-আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা, রেকর্ড ব্যবসা বাংলার
বঞ্চনার তোপ : একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনা প্রকল্পে রাজ্যের ২১ লক্ষ মানুষের টাকা আটকে রেখেছে বিজেপি। সেই বঞ্চিত গরিব মানুষগুলোর জন্য প্রাণ কাঁদে না পদ্ম নেতাদের। অথচ রাজ্য সরকারি কর্মীদের একাংশের কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতার দাবি নিয়ে কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জন করছেন তাঁরা। বিজেপির এই দ্বিচারিতা নিয়ে বিধানসভায় দাঁড়িয়ে তীব্র ভাষায় আক্রমণ শানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বেতন বৃদ্ধি : বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিলের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিজেপি সব কিনে নিয়েছে! ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা, রাস্তার কাজের টাকা দেয়নি। জিএসটির নামে কর তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মাছের তেলে মাছ ভাজা হচ্ছে। দিনের পর দিন ১০০ দিনের কাজ করেও যাঁরা টাকা পেলেন না, তাঁদের জন্য বুক কাঁদে না এঁদের। লিউকোপ্লাস্ট লাগিয়ে রাখেন এঁরা।
আরও পড়ুন-রেশন দোকানে ওজনে কারচুপি রুখতে বসছে নতুন যন্ত্র
কোটিপতি বিধায়ক : বিজেপিকে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যাদের আছে ভূরি ভূরি, সে-ই করে বেশি চুরি। গেরুয়া পরলেই সাধু হওয়া যায় না। আমাদের প্রাপ্য টাকা দিয়ে নিজেদের ছবি লাগাচ্ছে। সব গেরুয়া করে দিয়েছে।
কেন বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধি করা হচ্ছে সে-প্রশ্নের ব্যাখ্যা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তাঁর কাছে দিনের পর দিন বিধায়করা কম বেতনের কথা জানিয়ে এসেছেন। যাঁদের পকেট ভর্তি, যাঁরা কোটি কোটি টাকার বিধায়ক, তাঁদের বেতন লাগে না। কিন্তু অনেক বিধায়ক রয়েছেন, যাঁরা চাষ করেন। তাঁদের কথা কেউ বলেন না।
আরও পড়ুন-ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহে রাশ টানার উদ্যোগ
ডিএ ঐচ্ছিক : ডিএ বাধ্যতামূলক নয় ঐচ্ছিক, সাফ কথা মুখ্যমন্ত্রীর। সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা প্রসঙ্গ উত্থাপন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্র এবং রাজ্যের বেতনের কাঠামো আলাদা, ছুটিও আলাদা। তাই দুই সরকারের তুলনা এক্ষেত্রে উপযুক্ত নয়। রাজ্য সরকারি কর্মীদের দাবিমতো মহার্ঘ ভাতা না দিতে পারার জন্য তিনি পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারকে দায়ী করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাম সরকারের বকেয়া ঋণ মেটাতেই সরকারের কোষাগার শূন্য হয়ে যাচ্ছে। তাও রাজ্য সরকার পঞ্চম বেতন কমিশনকে গুরুত্ব দিয়ে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ৯০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দিয়েছে। এর পরে বাড়তি কোনও দাবি-দাওয়া থাকলে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরিতে যোগ দেওয়ার তিনি পরামর্শ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন-বাড়ছে দুর্ঘটনা, যাত্রী-পরিষেবা ও সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ খোদ রেলের রিপোর্টেই
হিসেব হবে : দুর্নীতির অভিযোগে তৃণমূলের পাশাপশি বিরোধী শিবিরের বিরুদ্ধে এজেন্সি লাগিয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গ উত্থাপন করে এদিন ফুঁসে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, গোটা দেশকে ভিখারি করে দিয়ে তৃণমূলকে চোর বলে! যাদের কোটি কোটি টাকা, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নয়। সিপিএম থেকে আসা কেউ কিছু করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা। কৃষ্ণ কল্যাণী, তন্ময়কে থ্রেট করল, গুটিগুটি পায়ে ইনকাম ট্যাক্স চলে গেল। আগামী দিনে যখন বিজেপি ক্ষমতায় থাকবে না, প্রত্যেকের দেনা-পাওনা কড়ায় গণ্ডায় বুঝে নেবেন বলেও জানান।