বিজেপির প্রতিহিংসা, সত্যপালের কাছে ইডি

সপ্তমবার ইডির তলব কেজরিকে

Must read

প্রতিবেদন : ছিলেন মোদির অভিসন্ধি, চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর জেনে বুঝে ভুল। এবার কি তারই বদলা? জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের (Satya Pal Malik) বাড়িতে বৃহস্পতিবার সাতসকালেই হানা দিল সিবিআই। চালাল তল্লাশি অভিযান। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এদিনই ইডি সপ্তমবার তলব করল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে। আগে ৬ বার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে তলব করেছিল ইডি। এবার সপ্তমবারের জন্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার চিঠি পেলেন কেজরি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি সোমবার ইডি অফিসে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে তাঁকে। প্রশ্ন উঠছে এবার কি ইডি অফিসে যাবেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী? নাকি এড়িয়ে যাবেন ইডির তলব? তবে বৃহস্পতিবারের দুটো ঘটনাই প্রমাণ করল, শুধু প্রতিহিংসা নয়, অস্তিত্ব হারানোর আশঙ্কাতেও ভুগছে গেরুয়া শিবির। কিন্তু সত্যপাল মালিকের বাড়িতে আচমকা এই তল্লাশি অভিযান কেন? ২২০০ কোটি টাকার কিরু জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের কাজের বরাত পাইয়ে দেওয়ার জন্য ৩০০ কোটি টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। হয়তো সাজানো অভিযোগ, তবুও তার তদন্তেই মালিকের বাড়িতে এই তল্লাশি অভিযান। শুধু তাঁর বাড়িতেই নয়, সবমিলিয়ে এদিন মোট ৩০টি জায়গায় একযোগে তল্লাশি চালিয়েছে সিবিআই। অভিযান চালানো হয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীর, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র, বিহার এবং রাজস্থানেও। বিরোধীমুক্ত দেশ গড়তে বিজেপির রাজনৈতিক কৌশলে নিউ নর্ম্যাল এখন ‘পুরস্কার অথবা কারাবাস’। এই ফর্মুলা এখন প্রযোজ্য বিরোধী রাজনৈতিক নেতা থেকে সমাজকর্মীদের ক্ষেত্রে। তারই প্রমাণ মিলল আরও একবার। লক্ষণীয়, গতবছর এপ্রিলে এক টিভি সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তীব্র সমালোচনা করেন মালিক (Satya Pal Malik)। তারপর থেকেই মোদির বিরাগভাজন হতে শুরু করেন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হওয়ার আগে পর্যন্ত জম্মু-কাশ্মীরের দশম ও শেষ রাজ্যপাল। এদিন এক্স-হ্যান্ডেলে মালিক লিখেছেন, আমি গত তিন-চার দিন ধরে অসুস্থ ছিলাম। হাসপাতালে ভর্তি আছি। তা সত্ত্বেও, সরকারি সংস্থার মাধ্যমে স্বৈরাচারী শাসক আমার বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে। আমার ড্রাইভার এবং আমার সহকারীও রয়েছেন সেখানে। অকারণে অভিযান ও হয়রানি করা হচ্ছে। আমি একজন কৃষকের সন্তান, এই অভিযানে মোটেই ভয় পাব না। আমি কৃষকদের পাশে আছি। প্রশ্ন উঠেছে, তাঁর উপর এত রাগ কেন মোদিজির? আসলে সত্যপাল মালিক এক সাক্ষাৎকারে প্রকাশ্যে দ্বিধাহীনভাবে বলেছিলেন, পুলওয়ামা কাণ্ড নিয়ে মোদি সরকার জেনেবুঝে ভুল করেছিল। গোয়েন্দা তথ্য থাকা সত্ত্বেও সেনাদের জম্মু থেকে শ্রীনগরে বিমানে নিয়ে যাওয়া হয়নি। শুধু তাই নয়, এ-বিষয়ে তাঁকে মুখ বন্ধ রাখার নির্দেশও দিয়েছিলেন মোদি এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। কারণ তাঁর দাবি, তিনি জানতেন যে বিষয়টি পাকিস্তানের ঘাড়ে চাপানো হবে। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, দুর্নীতিকে অপছন্দ করেন না প্রধানমন্ত্রী। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেও কোনও ব্যবস্থা নেন না, কারণ তাঁরা তাঁর ঘনিষ্ঠ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দিকেও আঙুল তুলেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, সিআরপিএফ জওয়ানদের বিমানে নিয়ে যাওয়ার আবেদন জানানো হয়েছিল। কারণ এত বড় সংখ্যায় বাহিনী সড়কপথে যায় না। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সেই আর্জি খারিজ করে দেয়। একইসঙ্গে মালিক দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলির ব্যর্থতার দিকেও আঙুল তুলেছিলেন।

আরও পড়ুন- দলবদলু মাস্টার প্ল্যান নিয়ে কিছু না করলেও মুখ্যমন্ত্রী করবেন, ঘাটালবাসীদের আশ্বাস সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের

Latest article