রেলের গতিই এখন কেন্দ্রের অগ্রাধিকার!

রেলের সুরক্ষার থেকেও গতির দিকেই নজর বেশি কেন্দ্রীয় সরকারের। অভিযোগ করল পিপলস কমিশন অন পাবলিক সেক্টর অ্যান্ড পাবলিক সার্ভিসেস

Must read

নয়াদিল্লি : রেলের সুরক্ষার থেকেও গতির দিকেই নজর বেশি কেন্দ্রীয় সরকারের। অভিযোগ করল পিপলস কমিশন অন পাবলিক সেক্টর অ্যান্ড পাবলিক সার্ভিসেস। তাদের তরফে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বুলেট ট্রেন, বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মতো দ্রুতগামী ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এগুলি নিয়ে ফলাও করে প্রচার চালানো হচ্ছে।

আরও পড়ুন-কাল ভারতের সামনে ভানুয়াতু, নতুনদের প্রেরণা ছাংতে : স্টিমাচ

রেলযাত্রায় ট্রেনের গতির প্রতি নীতি নির্ধারকদের যতটা মনোযোগ, তার একচুলও নেই রেলের সুরক্ষার প্রতি। অভিযোগ, এর ফলে ওড়িশার বালেশ্বরের মতো ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটছে। শুধুমাত্র রেলের গাফিলতিতে অকালে প্রাণ গেল অসংখ্য মানুষের। বহু মানুষকে পঙ্গু হয়ে কাটাতে হবে বাকি জীবন। পিপলস কমিশনের বক্তব্য, নির্বিচারে বন্দে ভারতের মতো অতি-দ্রুতগামী ট্রেন চালু করার চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ যাত্রীসুরক্ষায় সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি নেওয়া। এছাড়া কোনও সুপারফাস্ট ট্রেন চালু করার আগে নিরাপত্তাকেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।

আরও পড়ুন-অভ্যন্তরীণ দূষণ

সংগঠনের বক্তব্য, যখনই কোনও রেল দুর্ঘটনা ঘটে তখনই কেন্দ্রীয় সরকার দুর্ঘটনার জন্য রেল স্টেশনের নিচুতলার কর্মীদের দায়ী করে। অথচ দুর্ঘটনার মূলে রয়েছে সরকারের অপরিকল্পিত নীতি ও কর্মসূচি। তা থেকে ইচ্ছে করে চোখ ফিরিয়ে রাখা হয়।
ওড়িশার রেল দুর্ঘটনার পর রেলওয়ে সুরক্ষা কমিশনের পক্ষ থেকে অভিযোগ সামনে এসেছে। বলা হয়েছে, রেলের সুরক্ষা সংক্রান্ত সুপারিশগুলি বকেয়া রয়েছে রেলবোর্ডে। অতীতে ঘটে যাওয়া অন্তত ১৫টি রেল দুর্ঘটনার তদন্ত এবং তার প্রেক্ষিতে ১৩৫টি সুপারিশ করেছিল রেল সুরক্ষা কমিশন। এখনও পর্যন্ত সেগুলি নিয়ে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না তা জানায়নি রেলমন্ত্রক। সুরক্ষা কমিশনের বক্তব্য, সুপারিশের ভিত্তিতে সরকারের তরফে কী ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়েছে তা জানানো হয় না। বিভিন্ন বৈঠকে বিষয়টি তুলে ধরার পরেও পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি।

আরও পড়ুন-অন্দরমহলের তিনকাহন

প্রসঙ্গত, প্রতিটি রেল দুর্ঘটনার পরই তদন্ত করে সুরক্ষা কমিশন। সেই তদন্তের উপর ভিত্তি করে সুপারিশও করা হয়। রেলমন্ত্রককে সেই সুপারিশের প্রেক্ষিতে করা পদক্ষেপের রিপোর্ট দিতে হয়। সুরক্ষা কমিশনের বক্তব্য, রেলের তরফে সবসময়েই দীর্ঘ সময় পর পদক্ষেপ সম্পর্কিত রিপোর্ট দেওয়া হয়। রেলের সুরক্ষা কমিশনের নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এখনও পর্যন্ত ২০১৩-১৪ সালের রিপোর্ট বকেয়া রয়েছে। তদন্তের ভিত্তিতে করা সুপারিশ নিয়ে সরকারের পদক্ষেপ জানাতে অনেক দেরি করা হচ্ছে। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে দেওয়া তদন্তের রিপোর্ট এবং সুপারিশের প্রেক্ষিতে সরকারের পদক্ষেপ এখনও জানানোই হয়নি। আর এর মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেনের লাগাতার লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে।

Latest article