মোহনবাগানে অমর একাদশের মূর্তি উন্মোচনে সৌরভ ও ক্রীড়ামন্ত্রী

মোহনবাগান ক্লাবে ঐতিহাসিক অমর একাদশের মূর্তি উদ্বোধন করতে এসে ইন্ডিয়ান সুপার লিগকে (আইএসএল) বিঁধলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস

Must read

প্রতিবেদন : মোহনবাগান ক্লাবে ঐতিহাসিক অমর একাদশের মূর্তি উদ্বোধন করতে এসে ইন্ডিয়ান সুপার লিগকে (আইএসএল) বিঁধলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। মূর্তি উন্মোচনের মঞ্চ থেকে দুই প্রধানকে ক্রীড়ামন্ত্রীর বার্তা, ছাড়ুন আইএসএল। আসুন ময়দানে। বাংলার ফুটবলকে আবার ফিরিয়ে আনতে হবে।

আরও পড়ুন-অ্যালেন পার্কের অনুষ্ঠান থেকে নয়া চিড়িয়াখানার উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী

মূর্তি উন্মোচনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে ভারতীয় ফুটবল নিয়ে একরাশ ক্ষোভ, হতাশা, বিরক্তি নিয়ে ক্রীড়ামন্ত্রী বললেন, ‘‘আমি শুধু একটাই আবেদন করব মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলকে। মহামেডানের কাছেও নিশ্চয় আমার বার্তা পৌঁছবে। ছাড়ুন আইএসএল। ফিরে আসুন ময়দানে। ও দিয়ে আমাদের ফুটবলের উন্নতি হবে না। ময়দানে ফুটবলের উন্মাদনা ফিরিয়ে আনুন। এখানে আমরা চিৎকার করব, হাসব, চোখের জল ফেলব, সেই ময়দানের ফুটবলকে ফিরিয়ে আনতে পারলেই অমর একাদশকে সম্মান জানাতে পারব।’’
এখানেই না থেমে অরূপ আরও বলেন, ‘‘সন্তোষ ট্রফিতে পরপর দু’বার মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি বাংলা। আগে আমরা খেলার আগের দিন বলে দিতে পারতাম, মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল পরের দিন কী দল নামাবে। আজ আমরা ক’জনের নাম জানি? আমাদের বাংলার কতজন ফুটবলার আছে দলে? আগে ফুটবল নিয়ে আবেগ ছিল আর এখন সেই আবেগটাই হারিয়ে গিয়েছে। তার উপর জঘন্য রেফারিং। কলকাতার দলগুলোও আমাদের কাছে রেফারিং নিয়ে বারবার অভিযোগ জানায়। আগের দিন দেখুন, সাতটা লাল কার্ড। সঙ্গে আরও সাতটা হলুদ কার্ড। এটা কী ধরনের রেফারিং! কীভাবে ভারতীয় ফুটবল এগোবে, জানি না।’’

আরও পড়ুন-কেন্দ্রের নিরিখে সেরা তিন থানার মধ্যে স্থান পেল হুগলি জেলার শ্রীরামপুর থানা, শুভেচ্ছাবার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

মোহনবাগান ক্লাবের লনে যেখানে ঐতিহাসিক অমর একাদশের বেঞ্চটা ছিল, তার উপরই শিবদাস ভাদুড়ি, বিজয়দাস ভাদুড়ি, ভুতি সুকুল, অভিলাষ ঘোষদের পূর্ণবয়ব মূর্তি বসানো হয়েছে। বেঞ্চের পিছনে অনেকের দাঁড়ানো মূর্তি। অমর একাদশের পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ক্লাব লনে মূর্তি উন্মোচনে রীতিমতো চাঁদের হাট। ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি মোহনবাগানপ্রেমী শ্যামল সেনের হাত দিয়ে উদ্বোধন হল ঐতিহাসিক অমর একাদশের মূর্তি। বিশিষ্ট অতিথিদের মধ্যে ছিলেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, সঙ্গীতশিল্পী লোপামুদ্রা মিত্র, লেখক দেবারতি মুখোপাধ্যায়। এছাড়াও ছিলেন ক্লাবের এক ঝাঁক প্রাক্তন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছয় মোহনবাগান রত্ন ঘরের ছেলে সুব্রত ভট্টাচার্য, শ্যাম থাপা, গৌতম সরকার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, সৈয়দ নঈমউদ্দিন ও প্রদীপ চৌধুরী। ছিলেন সিএবি সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় এবং মানস ভট্টাচার্য, বলাই দে, শ্যামল বন্দ্যোপাধ্যায়, দীপেন্দু বিশ্বাসের মতো ক্লাবের প্রাক্তন ফুটবলাররাও ছিলেন। মূর্তি উন্মোচনের পর মঞ্চে সৌরভ ও ক্রীড়ামন্ত্রীর হাতে ক্লাবের নতুন ‘মেম্বারশিব স্মার্ট কার্ড’ তুলে দিলেন সচিব দেবাশিস দত্ত। অতিথিদের প্রত্যেককে অমর একাদশের স্মারক দিয়ে ও সবুজ-মেরুন উত্তরীয় পরিয়ে সম্মান জানানো হয় ক্লাবের পক্ষ থেকে। মূর্তি তৈরি করেছেন যে দুই শিল্পী সেই রতন ও প্রিয়ব্রত হালদারকেও সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন-কুস্তি ছাড়লেন সাক্ষী

মোহনবাগানে ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে পেরে উচ্ছ্বসিত সৌরভ পুরনো দিনে ফিরলেন। বললেন, ‘‘আমি ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে ক্লাবে এসে অনেকে খেলা দেখেছি। এখানে প্রাক্তন ফুটবলারদের অনেকে রয়েছেন, তাঁদের ক্লাবের সঙ্গে আরও বেশি করে যুক্ত করা উচিত। খেলাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে খেলোয়াড়দের প্রশাসনে এসে দায়িত্ব নিতে হবে। অরূপদা বললেন, ময়দানে ফুটবল ফেরাতে হবে। অবশ্যই সেটা আমরা চাই। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সব কিছু বদলায়। আইএসএল ছোট নয়, রঞ্জি ট্রফিও ছোট নয়। আবার সেগুলোই শুধু বড় নয়। শুধু অর্থই সব কিছু নয়। একটা বারপোস্ট আর বল থাকলেই ফুটবল খেলা যায়। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকতে হবে। তারজন্য স্কিল থাকা চাই। শুধু অর্থ দিয়ে স্কিল আনা যায় না।’’
মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত জানালেন, আগামী ২৫ ডিসেম্বর বড় দিন ক্লাব লন খুলে দেওয়া হবে। অমর একাদশের মূর্তির সাক্ষী থাকতে পারবেন সাধারণ মানুষ।

Latest article