‘যুদ্ধবিরতি হবে না, শুধুমাত্র কিছুক্ষণের জন্য থামতে পারি’, বিশ্বজুড়ে আর্জি সত্ত্বেও অনড় নেতানিয়াহু

গাজা ভূখণ্ডে হত্যালীলা বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক মহল বারবার আবেদন জানালেও যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইজরায়েলের অনীহা স্পষ্ট করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু

Must read

প্রতিবেদন : গাজা ভূখণ্ডে হত্যালীলা বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক মহল বারবার আবেদন জানালেও যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইজরায়েলের অনীহা স্পষ্ট করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তাঁর সাফ কথা, কোনও যুদ্ধবিরতি সম্ভব নয়। সাধারণ মানুষকে সরে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে হামলা ইজরায়েলি সেনার হামলা কিছক্ষণের জন্য বন্ধ হতে পারে মাত্র। তার বেশি নয়। নেতানিয়াহুর বক্তব্য, এই যুদ্ধ হামাস শুরু করেছে। তারা নির্বিচারে ইজরায়েলের মানুষকে মেরেছে, পণবন্দি করেছে। এবার সেই যু্দ্ধে জয়লাভ করে হামাসকে যথোচিত শিক্ষা দেবে ইজরায়েল।

আরও পড়ুন-দিনের কবিতা

গত ৭ অক্টোবর ইজরায়েলের মাটিতে প্যালেস্টাইনের জঙ্গিগোষ্ঠী হামাসের অতর্কিত হামলা দিয়ে শুরু। অপ্রত্যাশিত ‘ধাক্কা’ খাওয়ার পর নিজেদের গোয়েন্দা ব্যর্থতা মেনে নিয়েই সর্বশক্তিতে প্রত্যাঘাতে নেমেছে নেতানিয়াহুর দেশ। ইজরায়েলি সেনার আক্রমণের অভিঘাতে এক মাসের যুদ্ধে বিধ্বস্ত গাজা ভূখণ্ড। হামাস যত দুর্বল হচ্ছে ততই অবর্ণনীয় দুরবস্থার মধ্যে পড়তে হচ্ছে প্যালেস্টাইনের সাধারণ মানুষকে। একাধিক শরণার্থী শিবির ও হাসপাতালে হামলা হয়েছে। মৃতের সংখ্যা ১০ হাজারের কাছাকাছি। নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে মানবিক সংকটের অভিযোগ যাতে জোরালোভাবে তোলা যায় সেজন্য হামাস গাজার সাধারণ মানুষকে বলির পাঁঠা হিসাবে ব্যবহার করছে।

আরও পড়ুন-বারবার গাজর ঝুলিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার চেষ্টা

হাজার হাজার অসামরিক জনগণের মৃত্যু, ক্ষয়ক্ষতি ও জল-বিদ্যুৎ, গ্যাস, চিকিৎসা পরিষেবার অভাব মিলিয়ে মানবিক সংকট তীব্র হচ্ছে গাজায়। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার সুযোগ দিতে যুদ্ধবিরতির আবেদন জানিয়েছে একাধিক দেশ। চলতি তেল আভিভ সফরে মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন একই আর্জি জানিয়েছিলেন। গাজায় হতাহত বাড়তে থাকায় ইজরায়েলের উপর চরম ক্ষুব্ধ আরব দুনিয়া। ইউরোপের একাধিক দেশ এবং চিনও যুদ্ধবিরতির আবেদন জানিয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের পক্ষ থেকেও একাধিকবার হামলা বন্ধ করার কথা বলা হয়েছে। সম্মিলিত চাপের মুখেও অনড় ইজরায়েল সরকার। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়ে দিলেন, সাধারণ মানুষের প্রাণ বাঁচাতে, নিরাপদ দূরত্বে সরে যাওয়ার সুযোগ দিতে এবং অসামরিক ব্যক্তিদের ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিতে কিছুক্ষণের জন্য হামলা থামতে পারে মাত্র। কিন্তু তা কখনওই যুদ্ধবিরতি হবে না।

আরও পড়ুন-‘আমার প্রচার চাই না’ বিজয়া সম্মিলনী থেকে কেন্দ্রকে নিশানা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

হামাসের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে আমেরিকা ইজরায়েলকে সরাসরি সমর্থন করলেও সম্প্রতি মানবিকতার খাতিরে যুদ্ধ বিরতির আবেদন জানিয়েছে বাইডেন প্রশাসনও। এই বিষয়ে সম্প্রতি একটি আমেরিকান টেলিভিশন চ্যানেলে নেতানিয়াহুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ত্রাণ ইত্যাদি বিশেষ প্রয়োজনে সাময়িকভাবে যুদ্ধ আমরা আগেও থামিয়েছি, ভবিষ্যতেও থামাব। ত্রাণসামগ্রী পাঠানো, আমাদের পণবন্দিদের উদ্ধার করে দেশে ফেরানোর জন্য কোথাও এক ঘণ্টা, কোথাও দু’ঘণ্টার বিরতিতে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু সাধারণভাবে যুদ্ধবিরতি এখনই হচ্ছে না। বরং হামাসকে সমূলে বিনষ্ট করাই আমাদের লক্ষ্য। এর আগেও যে প্রতিজ্ঞা নেতানিয়াহু করেছিলেন, মিত্র দেশ আমেরিকার যুদ্ধবিরতির ডাক ফিরিয়ে দিয়ে এখনও তাতেই অনড় ইজরায়েল।

আরও পড়ুন-প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরের বিপুল অঙ্কের প্রসঙ্গ তুলে বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ করলেন কুণাল ঘোষ

এদিকে আরব দেশগুলির তরফে গাজায় যুদ্ধ থামানোর জন্য ক্রমশ ইজরায়েলের উপর চাপ বৃদ্ধি করা হচ্ছে। হামাসের সমর্থনে অস্ত্র ধরেছে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হেজবুল্লা। ইয়েমেনের হুথিরাও ইজরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে। যুদ্ধ না থামালে ইরান প্রকাশ্যে আক্রমণের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইজরায়েলকে। সবমিলিয়ে হামাস-ইজরায়েল দ্বন্দ্বে উত্তাল পরিস্থিতি পশ্চিম এশিয়ায়।

Latest article