জাকিরের কারখানায় আয়কর হানায় স্পষ্ট কথা তৃণমূল কংগ্রেসের

নিয়ম মেনে ব্যবসা করেন, নিয়মিত কর দেন। তিনি জেলার সর্বোচ্চ করদাতা। তাঁর কাছে প্রায় সাত হাজার শ্রমিক কাজ করেন।

Must read

প্রতিবেদন : বিজেপির প্রতিহিংসার রাজনীতির শিকার এবার তৃণমূল বিধায়ক ও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জাকির হোসেন। তাঁর বাড়িতে নগদ উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে এদিন এই ভাষাতেই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিল। বুধবার হঠাৎই সকাল সাড়ে দশটা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তাঁর বাড়ি ও কয়েকটি অফিসে তল্লাশি চালায় আয়কর দফতর। তল্লাশিতে প্রায় ১১ কোটি টাকা নগদ বাজেয়াপ্ত করা হয়। এরপরই এই নিয়ে বিরোধীরা আক্রমণ করেন তৃণমূল কংগ্রেসকে। জবাবে তৃণমূল সাফ জানিয়ে দিয়েছে, এভাবে তাঁর এবং দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চক্রান্ত চলছে।

আরও পড়ুন-শিরডিগামী ভক্তদের বাসের সঙ্গে ট্রাকের সংঘর্ষ, মৃত ১০

এদিন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন—
* এ-ঘটনায় আইন নিজের পথেই চলবে। কিন্তু এর পিছনে পরিকল্পিত চক্রান্ত রয়েছে।
* জাকির হোসেন একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। বিড়িশিল্প ও একাধিক কৃষিভিত্তিক নানা ব্যবসা রয়েছে তাঁর। তিনি পরবর্তীকালে তৃণমূলে যোগ দেন।
* একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী তাঁর অফিসে বা বাড়িতে নগদ রাখতে পারবেন না, এটা কোথায় কবে ঠিক হল?
* বিড়ি শিল্প বা এই জাতীয় শিল্পগুলি নিয়ে যাদের সামান্য ধারণা আছেন তাঁরা জানেন এইসব শিল্পে দৈনিক মজুরি নগদে পেমেন্ট করতে হয়। ফলে এর জন্য নগদের প্রয়োজন হয়। ফলে বাড়িতে বা অফিসে তিনি নগদ রাখতে পারেন।
* কিন্তু এক্ষেত্রে যার কাছ থেকে নগদ পাওয়া গেল, সেটা কোথা থেকে এল তার কোনও ব্যাখ্যা দেওয়ার সুযোগই দেওয়া হল না, তার আগেই এই তল্লাশি ও টাকার ছবি সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হল। ফলে গোটা ঘটনাক্রম দেখে দল মনে করে এর পিছনে গভীর চক্রান্ত রয়েছে। এভাবে মিডিয়া ট্রায়াল করে জাকির হোসেন ও দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করা হচ্ছে।
* সংশ্লিষ্ট এজেন্সি এভাবে জনমানসে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এতেই পরিষ্কার এটা একটা সুপরিকল্পিত একটা চক্রান্ত।
* দলবদলু বিজেপি নেতারা প্রকাশ্যে বলে দিচ্ছেন, এবার এর বাড়িতে এজেন্সি যাবে, ওর বাড়িতে যাবে। দেখা যাচ্ছে তারপরই এজেন্সি সে-সব জায়গায় যাচ্ছে। এতে সংশ্লিষ্ট এজেন্সির বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হচ্ছে।

আরও পড়ুন-ঘোষিত ফল বদলে দিতে পারি আমিই! জাহির করতে গিয়ে নন্দীগ্রাম-রহস্য ফাঁস করলেন আরএসি বিধায়ক

* শুভেন্দু অধিকারীর নাম নারদার এফআইআরে রয়েছে। এক অভিযুক্তর ফ্ল্যাট থেকে দিলীপ ঘোষের বাড়ির দলিল মিলেছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাঁদের বাড়িতে কতবার রেইড হয়েছে?
* বাজেয়াপ্ত টাকা যদি অবৈধ হয় তাহলে আইনি ব্যবস্থা যা হওয়ার হবে। কিন্তু এইভাবে যদি ছবি ছড়িয়ে দিয়ে শিল্পপতি, ব্যবসায়ীদের হেনস্থা করা হয় তাহলে চারটি জেলার কত মানুষ রোজগার হারাবেন সেটা দলবদলু বিজেপি নেতারা জানেন?
* এভাবে রাজ্যের ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের ভয় দেখানো হচ্ছে। শ্রমিক, কর্মচারীদের অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এভাবে তৃণমূলকে শেষ করার চক্রান্ত করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন-আবাসের ফর্ম বিলি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর! প্রকাশ্যে বেআইনি কাজ

এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন জাকির হোসেন। তিনি বলেছেন, এই টাকা অবৈধ নয়, তাঁর ব্যবসার টাকা। তিনি আয়কর দপ্তরের আধিকারিকদের তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন। নিয়ম মেনে ব্যবসা করেন, নিয়মিত কর দেন। তিনি জেলার সর্বোচ্চ করদাতা। তাঁর কাছে প্রায় সাত হাজার শ্রমিক কাজ করেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন রকমের ব্যবসা রয়েছে। শ্রমিকদের বেতনও নগদে দিতে হয়। তাই চালকলে কিছু নগদ টাকা রাখা ছিল। ওই টাকার একটা অংশ যারা ধান বিক্রি করেছিল, তাদেরও প্রাপ্য। তাঁর দাবি, আয়কর আধিকারিকদের কাগজপত্র দেখালেও তাঁরা মানতে চাননি। কিছু টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তিনি তৃণমূল করেন বলেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এই প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে।

Latest article