জনবিরোধী বাজেট নিয়ে ক্ষোভ তুলে ধরল তৃণমূল

বাজেট অধিবেশনের শুরু থেকে আদানি ইস্যুতে পরপর কয়েকদিন সংসদ অচল থাকার পর বুধবার থেকে শুরু হয়েছে বাজেট নিয়ে আলোচনা

Must read

নয়াদিল্লি : বাজেট অধিবেশনের শুরু থেকে আদানি ইস্যুতে পরপর কয়েকদিন সংসদ অচল থাকার পর বুধবার থেকে শুরু হয়েছে বাজেট নিয়ে আলোচনা। অথচ বাজেট নিয়ে আলোচনার দ্বিতীয় দিনেও লোকসভায় অনুপস্থিত খোদ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। বাজেট সংক্রান্ত আলোচনার সময় উপস্থিত ছিলেন না রেলমন্ত্রীও। বাজেট নিয়ে আলোচনায় বৃহস্পতিবার তৃণমূলের তরফে প্রথম বক্তা ছিলেন সৌগত রায়।

আরও পড়ুন-ভারতে চালু হল ট্যুইটার ব্লু সাবস্ক্রিপশন

তৃণমূল সাংসদ বলেন, দেখা যাচ্ছে লোকসভায় বাজেট আলোচনার কোনও গুরুত্বই নেই অর্থমন্ত্রী এবং রেলমন্ত্রীর কাছে। তাঁরা দুজনেই লোকসভায় অনুপস্থিত! এটা কি ইয়ার্কি হচ্ছে নাকি? এই বাজেটকে দূরদৃষ্টিহীন বলে মন্তব্য করে সৌগত রায় বলেন, এই বাজেট জনবিরোধী এবং ভবিষ্যতের জন্য নয়, বরং সুযোগসন্ধানী। হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ছেলেবেলায় মা যেমন বলতেন রাতে সাপের নাম নিতে মানা, সেভাবে সংসদে একটি সংস্থার নাম করা বারণ। যদিও সেই সংস্থাটিই সরকারের সব। তাঁর এই বক্তব্যের সময় পয়েন্ট অফ অর্ডার তোলায় প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হন সৌগত রায়। বারবার প্রবীণ সাংসদকে বাধা দিচ্ছিলেন বিজেপির সৌমিত্র খাঁ। সৌগত রায় বলেন, বিজেপির কৌশল হল, বিরোধী দলের সাংসদ বলতে শুরু করলেই তাঁকে বাধা দেওয়া।

আরও পড়ুন-দু’গোলে পিছিয়েও ড্র করল ম্যান ইউ

বাংলাকে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে তৃণমূল সাংসদ বলেন, একশো দিনের কাজে বাংলার বকেয়ার পরিমাণ ৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সাংসদরা কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েতমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে রাজ্যের বকেয়া মেটানোর দাবি জানিয়েছিলেন। তারপরেও তা মেটানো হয়নি। অতি সত্ত্বর সেই বকেয়া মেটাতে হবে। রেলমন্ত্রীর উদ্দেশে কলকাতা মেট্রোর উদাহরণ তুলে ধরে সৌগত রায় মন্তব্য করেন, একটি প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি শেষ না করে অর্ধেকাংশের উদ্বোধন করা বন্ধ করুন রেলমন্ত্রী। বাজেটে বেকারত্ব, বৈষম্য, দারিদ্র, মুদ্রাস্ফীতির মতো জ্বলন্ত ইস্যুগুলির কোনও উল্লেখ নেই। যেভাবে ইডি বিরোধী নেতাদের বাড়িতে তল্লাশি চালায়, কেন একটি নির্দিষ্ট সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত করছে না সে প্রশ্ন তোলেন এই প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়।

আরও পড়ুন-স্কোরবোর্ড, প্রথম দিন

অন্যদিকে লোকসভার আরেক সংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার এই বাজেটকে জনবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন। বলেছেন, অর্থমন্ত্রী নিজে একজন মহিলা হয়েও বাজেটে শুধুমাত্র একটি প্রকল্প ছাড়া মহিলাদের নিয়ে কোনও উল্লেখ করেননি। মহিলাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্র ও ব্যাঙ্ক ঋণে ভর্তুকির দাবি জানান তিনি। কাকলির বক্তব্য, হাজার হাজার শূন্যপদ ফাঁকা পড়ে রয়েছে, অথচ সেগুলি পূরণ করা হচ্ছে না। রাজ্যের কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের উল্লেখ করে কাকলি ব্যাখ্যা দেন কীভাবে রাজ্যের মহিলাদের উন্নতি ঘটিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।

আরও পড়ুন-সাংবাদিক হত্যা, পিছনে অন্ধকার জগৎ?

বর্তমানে দেশে ৩.৭ কোটি বেকার। অথচ সে বিষয়ে অর্থমন্ত্রী একটি শব্দও ব্যয় না করায় প্রশ্ন তোলেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার। বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে দুয়ারে রেশন প্রকল্প চালু করে বুঝিয়ে দিয়েছেন গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত সরকারের ভূমিকা কী। এই পথে চলুক কেন্দ্রও। তৃণমূল সাংসদ অভিযোগ করেন, বাজেটে আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের জন্য কোনও আশার কথা শোনাননি অর্থমন্ত্রী। বাজেটে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আরও অর্থ বরাদ্দ হওয়া উচিত ছিল। একশো দিনের কাজে বরাদ্দ ৩৩ শতাংশ কমনোর তীব্র সমালোচনা করেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার।

Latest article