ঘরছাড়াদের ঘরে ফিরিয়ে নন্দীগ্রামে শান্তির বার্তা তৃণমূলের

Must read

প্রতিবেদন : নন্দীগ্রামে (Nandigram- TMC) গিয়ে শান্তির পক্ষে সওয়াল করল তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। দলের স্থানীয় কর্মী-সমর্থকদের সংযত থাকতে বললেন রাজ্য নেতারা। পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরে নন্দীগ্রাম এবং খেজুরিতে যাবতীয় অশান্তির জন্য বিরোধী দলনেতাকে দায়ী করে তাঁকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানাল তৃণমূল। বিরোধী দলনেতার উদ্দেশ্যে টেঙ্গুয়ার জনসভায় তৃণমূলের চ্যালেঞ্জ, ক্ষমতা থাকলে লোকসভা নির্বাচনে এখানে দাঁড়ান। গো-হারা হারবেন গদ্দার। এবারে ১০,৪৫৭ ভোটে পরাজয়তেই সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট। গেরুয়া সন্ত্রাসের প্রতিবাদে এবং তৃণমূলের এক মহিলা কর্মী সোমা জানাকে গাছে বেঁধে ৩ ঘণ্টা ধরে অত্যাচারের ঘটনায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে শুক্রবার নন্দীগ্রামের ভেকুটিয়ায় ধরনায় বসে যান মন্ত্রী শশী পাঁজা, তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। পুলিশ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে কথা দিলে ধরনা প্রত্যাহার করেন তাঁরা। বিজেপির এক হামলাকারীকে দেখে উত্তেজিত তৃণমূল কর্মীরা তাড়া করলে তাঁদের নিরস্ত করেন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেন।

বিজেপির হাতে আক্রান্ত কর্মী-সমর্থকদের পাশে দাঁড়াতে শুক্রবার দুপুরের আগেই নন্দীগ্রামে পৌঁছে যান তৃণমূলের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা-রাজ্যের মন্ত্রী ডাঃ শশী পাঁজা, দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এবং অন্যতম মুখপাত্র ঋজু দত্ত। তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র এবং তমলুকের যুব তৃণমূল সভাপতি আসগর আলি পল্টু যোগ দেন তাঁদের সঙ্গে। নন্দীগ্রামের গেরুয়া তাণ্ডব-বিধ্বস্ত কিছু এলাকা ঘুরে দেখেন তাঁরা।

আরও পড়ুন- বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই: বেঙ্গালুরুতে বিরোধী জোটের বৈঠক, তৃণমূল সুপ্রিমোর সঙ্গে থাকবেন অভিষেকও

ভেকুটিয়া, সোনাচূড়া, বয়াল-২, গোকুলনগর, বিরুলিয়া, আমদাবাদেই বেশি সন্ত্রাস চালিয়েছে গেরুয়া বাহিনী। তৃণমূলের প্রতিনিধিরা যান বিরুলিয়া রুক্মিণীপুর গ্রামে। প্রথমে যান নন্দীগ্রাম-২-এর দলীয় কার্যালয়ে। ঘরছাড়া দলীয় কর্মীদের ঘরে ফিরিয়ে দেন। আক্রান্ত মহিলাদের সঙ্গে দেখা করে মন দিয়ে শোনেন গেরুয়া-অত্যাচারের কাহিনি। উঠে আসে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ। হামলাকারীদের নামে এফআইআর করার পরামর্শ দিয়ে দ্রুত কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন পুলিশকে। অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে বলেন তৃণমূলের রাজ্যনেতারা। বয়াল-২ তে গিয়ে প্রতিনিধিরা শোনেন তৃণমূল সমর্থকের ভেড়িতে বিজেপির বিষ মিশিয়ে দেওয়ার কাহিনি। পুলিশ ক্যাম্প বসানোর ব্যবস্থা করেন। ভেকুটিয়া গ্রামে গিয়ে লাঞ্ছিতা সোমা জানার হাতে দলের পক্ষ থেকে শাড়ি ও ওষুধ তুলে দেওয়া হয়।

রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বললেন, বিরোধী দলনেতার সুপরিকল্পিত চক্রান্তে তাঁর লোকজনের তাণ্ডব এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে এমএ পাশ করা তৃণমূলের বিজয়ী মহিলা প্রার্থীকেও ধর্ষণের হুমকি দিচ্ছে, তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে ওরা। নন্দীগ্রাম-১ ব্লকে গাছে বেঁধে রাখছে মহিলাকে। বিরোধী দলনেতার নামে জিন্দাবাদ ধ্বনি দিয়ে চালানো হচ্ছে অকথ্য অত্যাচার। অথচ গদ্দারের কথাতেই ফাঁস হয়ে গিয়েছে তাঁর চক্রান্ত। গদ্দারের নির্লজ্জ মন্তব্য, ৩৫৫-র পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এর জন্য কিছু কিছু কাজও করতে হবে। কী করতে হবে আমরা জানি— এর থেকেই স্পষ্ট ওদের ষড়যন্ত্র। কুৎসিত রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য ওদের দরকার মৃত্যু, রক্ত, মৃতদেহ। তৃণমূলকর্মীদের উপর লাগামছাড়া সন্ত্রাস তো ওরা চালাচ্ছেই, দরকারে নিজের দলের লোকেদের বলি দিতেও ওরা পিছ-পা হচ্ছে না। তৃণমূলের বক্তব্য, গরিব মানুষকে বিজেপি লেলিয়ে দিচ্ছে গরিবের বিরুদ্ধে। জখম হচ্ছেন তাঁরা। এমনই কয়েকজন গুরুতর জখমকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে, সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে। তৃণমূল (Nandigram- TMC) নেতৃত্বের স্পষ্ট বার্তা, বন্ধ হোক গরিব মানুষের মধ্যে হানাহানি। ফিরে আসুক শান্তি। গ্রেফতার করা হোক দুর্বৃত্তদের।

Latest article