রাজ্যপালকে ঠেকাতে না পেরে ‘হায়-হায়’ রব বিজেপির, থামল না অধিবেশন

কোনমতেই আটকাতে পারল না রাজ্যপালের স্বাগত ভাষণ। বাজেট অধিবেশনের শুরুর দিনই বিজেপির চূড়ান্ত ‘অভব্যতা লক্ষ্য করা গেল বিধানসভায়

Must read

রাজ্যের বিরুদ্ধে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে অনেকবার ক্ষোভ জানিয়েও লাভ হল না গেরুয়া শিবিরের। কোনমতেই আটকাতে পারল না রাজ্যপালের স্বাগত ভাষণ। বাজেট অধিবেশনের শুরুর দিনই বিজেপির চূড়ান্ত ‘অভব্যতা লক্ষ্য করা গেল বিধানসভায়। রাজ্যপালকেই হায়-হায় স্লোগান দিতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়কেরা। বুধবার, স্বাগত ভাষণ পাঠ শুরু করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (Governor CV Ananda Bose)। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই গোলমাল শুরু করেন বিজেপির (BJP) বিধায়কেরা। এমনকী, সব শিষ্টাচার লঙ্ঘন করেন রাজ্যপালের ভাষণের কপি ছিঁড়ে তার দিকেই ছুড়ে মারেন বিজেপি বিধায়কেরা। তারপর ওয়াকআউট করেন তাঁরা।

আরও পড়ুন-ফের রেপো রেট বৃদ্ধির ঘোষণা করল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক

কিন্তু বিজেপির এতো গোঁসা কেন?
রাজ্যপাল তাঁর ভাষণে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বিগত বছর শান্তিপূর্ণভাবে কেটেছে। রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে সরকার সর্বদা তৎপর। আনন্দ ও সৌহার্দ্যের বাতাবরণে সব ধর্মীয় উৎসব পালিত হয়েছে।“ অতিমারির সময়ে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে রাজ্যের মানুষের কষ্ট লাঘব হয়েছে- একথাও ছিল ভাষণে। এই সব কথা মনঃপূত হয়নি বিজেপি বিধায়কদের। ফলে আক্রমণ করে স্লোগান দিতে শুরু করেন তাঁরা। তবে, কেন্দ্রের পাঠানো রাজ্যপালকেই সরাসরি আক্রমণ করা হয়। তাঁকে হায়-হায় বলা হয়। এমনকী, তাঁর দিকে কাগজ ছুড়ে মারেন বিজেপি বিধায়করা।

আরও পড়ুন-রঞ্জি সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষ আজ মধ্যপ্রদেশ, দুই স্পিনারে নামছে বাংলা

তবে, কাজে আসেনি তাঁদের বিক্ষোভ। এতটুকু বিচলিত হননি সিভি আনন্দ বোস। স্লোগানের মাঝেই পুরো ভাষণ শেষ করেন তিনি। ‘ফ্লপ শো’য়ে মুখ পোড়ে গেরুয়া শিবিরের। ২০২২-এর এই বাজেট অধিবেশনেই জগদীপ ধনকড় রাজ্যপাল থাকাকালীন ভাষণ শেষ করেননি। কিন্তু তাঁর সময় রাজভবনকে বিজেপি সদর কার্যালয় বানিয়ে ফেলেছিল বলে অভিযোগ বিরোধীদের। আনন্দ বোস প্রথম থেকেই রাজ্যের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেছেন। আর এতেই বেজায় চটেছে পদ্মশিবির! এদিন শেষ পর্যন্ত অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করেন বিজেপি বিধায়করা। বাইরে বেরিয়েও স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। তবে, এই কোনও কিছুকেই পাত্তা না দিয়ে হাসিমুখে ভাষণ শেষ করে বেরিয়ে যান সিভি আনন্দ বোস।

আরও পড়ুন-কেন্দ্রীয় এজেন্সি ব্যবস্থা নিক, সংসদে সরব তৃণমূল

এদিন রাজ্যপালের ভাষণ সংবাদমাধ্যমে লাইভ সম্প্রচার করা হয়েছে। বিজেপি বিধায়কদের এই আচরণের তীব্র নিন্দা হয় সব মহলে। তৃণমূল (TMC) মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে তীব্র কটাক্ষ করে লেখেন,
“রাজ্যপাল তো বিধানসভায় বিজেপিকে পাত্তাও দিলেন না।
ওরা চেঁচালো, কাগজ ছিঁড়ল, শ্লোগান দিল, নিজেরাই বেরিয়ে গেল, বাইরে নাটক করল, রাজ্যপাল বেরিয়ে যাওয়ার সময়ও তাঁর বিরুদ্ধে হাঁকডাক করল। কিন্তু তাতে কী এসে গেল?
সবই ঠিকঠাক হল।
অতৃপ্ত আত্মা শুভেন্দুর দলের বেলুন ফুস।
হেরো। হেরো।“
প্রবল খোঁচা দিয়ে কুণাল লেখেন
“অপদার্থ আলুভাতে বিরোধী দলনেতার বিরোধী দল এই জোকারি ছাড়া কী করবে? রোজ একঘেয়ে কুৎসা আর মুখেন মারিতং জগত।
ডাহা ফেল।… কেন্দ্রের পাঠানো রাজ্যপালের ভাষণের সময় অসভ্যতা করল কেন্দ্রের শাসকদলের মানসিক অবসাদগ্রস্ত বঙ্গ শাখা। নিজেদের কেন্দ্রের পাঠানো রাজ্যপালকেও ছাড়ছে না। হাস্যকর। এতে বিজেপির দেউলিয়া, হতাশার রাজনীতি প্রমাণিত।…“

Latest article