আবাস-তালিকা নিয়ে বিরোধীদের মিথ্যাচারের বড় জবাব

গত বর্ষার আঘাত সয়ে কোনওরকমে দাঁড়িয়ে রয়েছে টালি ছাওয়া মাটির কাঁচা বাড়িটি। এই বাড়িতেই বাবা-মায়ের সঙ্গে বাস করেন লক্ষ্মী হেমব্রম

Must read

অসীম চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: গত বর্ষার আঘাত সয়ে কোনওরকমে দাঁড়িয়ে রয়েছে টালি ছাওয়া মাটির কাঁচা বাড়িটি। এই বাড়িতেই বাবা-মায়ের সঙ্গে বাস করেন লক্ষ্মী হেমব্রম। গত পাঁচ বছর যিনি রানিগঞ্জ ব্লকের তিরাট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। এত বড় প্রশাসনিক পদে থেকেও নিজে পাননি আবাস যোজনায় পাকা ঘর। বাবা বিশ্বনাথ হেমব্রম আগে দিনমজুরি করতেন। বর্তমানে অসুস্থ। মা বুধনি পরের জমিতে কৃষিশ্রমিক হিসেবে দিনভর হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেন।

আরও পড়ুন-‘দিদির দূত’ গ্রামে

দিদির বিয়ে হয়েছে কয়েক বছর আগে। অশক্ত বাবা-মাকে নিয়েই লক্ষ্মীর অভাবের সংসার। ২০১৮ সালে তিরাট গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়িয়ে জয়ী হন লক্ষ্মী। রাজ্যের বিভিন্ন পঞ্চায়েতে আবাস যোজনায় দুর্নীতি নিয়ে বিরোধীরা যখন চূড়ান্ত বেলেল্লাপনা, মিথ্যাচার করে চলেছে, তখন তাঁর মতো নিঃস্বার্থ জনসেবকরা প্রচারের আলো থেকে অনেক দূরে। পঞ্চায়েত প্রধান হয়েও আবাস যোজনায় পাকা বাড়ির জন্য আবেদন করেননি কেন?

আরও পড়ুন-আয়কর হানার পর বিজেপির তহবিলে ১০ কোটি দান!

উত্তরে লক্ষ্মী বলেন, ‘‘আমি তো সামান্য গ্রামপ্রধান, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখনও টালির বাড়িতে বাস করেন, আমাদের সবার আদর্শ তো মমতা দিদিই। তিনিই আমাদের মেরুদণ্ড সোজা রেখে সারা জীবন পথ চলার প্রেরণা জুগিয়েছেন।’’ পঞ্চায়েত থেকে পাওয়া মাসিক পাঁচ হাজার টাকা ভাতা আর মায়ের সামান্য আয়েই চলে তিনজনের সংসার। লক্ষ্মী জানান, ‘‘২০১৩ ও ২০১৮ সালে ন্যাশনাল সোশিও-ইকনমিক কাস্ট সেনশাসের তালিকায় আমাদের নাম ওঠেনি। তাই আবাস যোজনার তালিকাতেও নাম তোলা হয়নি।’’ গত বর্ষায় একটি গাছ টালির চালে পড়ায় বাড়ির বড় ক্ষতি হয়। মা ও তাঁর টাকা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি মেরামত করা হয়। লক্ষ্মীর পাকা বাড়ি না পাওয়া নিয়ে রানিগঞ্জের বিডিও অভীক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পাকা বাড়ি যাতে হয় তার চেষ্টা চলছে।’’

আরও পড়ুন-শীতে ঘন কুয়াশা, বিপর্যস্ত উত্তর ভারত

রানিগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিনোদ নুনিয়া বলেন, ‘‘লক্ষ্মীর পরিবারের নাম আগে তালিকায় ওঠেনি, তৃণমূল স্বজনপোষণ নীতিতে বিশ্বাসী নয় বলেই। নিয়ম মেনেই ওঁর পরিবারকে পাকা বাড়ি দেওয়া হবে।’’ তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন দাশু বলেন, ‘‘আমাদের দলের ৯৯ শতাংশ পদাধিকারীই লক্ষ্মী হেমব্রমের মতো। ওঁরাই দলের সম্পদ। দু-একজন কোথাও কিছু ভুলভাল করলে বিরোধীদের উসকানিতে মিডিয়ার একাংশ সেটাকেই ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখায়।’’

Latest article