মণিপুরকাণ্ডের পিছনে মাদকের রমরমা কারবার

একটা দেশের কোনও প্রান্তে যদি এরকম যুদ্ধ বেধে যায় তাহলে সেটা কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতা এবং লজ্জা। মণিপুরের ঘটনায় সেটাই হয়েছে।

Must read

২০১০ থেকে মণিপুর আর উত্তরপ্রদেশের অবজার্ভার ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার সংসদ ডাঃ কাকলি ঘোষদস্তিদার। ১০০ দিন ধরে জাতিগত হিংসায় জ্বলছে মণিপুর। প্রায় ২০০’র কাছাকাছি মানুষ হিংসার বলি হয়েছে। গত ২০ জুলাই তৃণমূলের সংসদীয় প্রতিনিধি দল গিয়েছিল মণিপুরে, দলে ছিলেন ডাঃ কাকলি ঘোষদস্তিদার। মণিপুরের অশান্তি নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের লোকসভার সাংসদ। অনাস্থা বিতর্কেও তিনি যেমন মণিপুর নিয়ে বিস্ফোরক ছিলেন সংসদে, একইভাবে তিনি বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন সেখানে অশান্তির নেপথ্যে মাদকের রমরমা কারবার এবং তারসঙ্গে বৈদেশিক শক্তির হাত রয়েছে। তাঁর সঙ্গে কথা বললেন জাগোবাংলার প্রতিনিধি নবনীতা মণ্ডল

২০১০ থেকেই মণিপুরের দুই জনজাতির মধ্যে মনকষাকষি ছিল। তখনও যেমন সেখানে উন্নয়নের অভাব ছিল আজও সেখানে উন্নয়নের অভাব। যদিও বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন বারাক ভ্যালি পর্যন্ত রেললাইন বসানোর ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছিলেন। মনমোহন সিং সরকার থাকাকালীন উত্তর-পূর্বের উন্নয়নের জন্য ফান্ড চালু করেছিলেন কিন্তু যেহেতু ওখানকার কোনও শংসাপত্র দিতে হয় না তাই সেখানের উন্নয়নের দায় রাজ্য সরকারের।

আরও পড়ুন-অসুখ

সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার জানালেন, পাহাড়ে থাকা কুকি জনজাতিরা তফসিলি উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত। সেই কারণে মণিপুরের পাহাড় এবং সমতল দুই জায়গাতেই জমি কিনতে পারেন। তবে সমতলের মেইতিরা তা পারেন না। পাহাড়ের জমি কেনার এত চাহিদার একমাত্র কারণ হল, সেখানে আফিম চাষ করা হয় এবং এই চাষে অন্য দেশ থেকে মদত দেওয়া হয়। তিনি বলেন, এই জঙ্গি গোষ্ঠীর থেকে ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সাহায্য নিয়েছিল বিজেপি। সেই জঙ্গি গোষ্ঠীর নাম জেলারো।

আরও পড়ুন-দিনের কবিতা

অসমে অশান্তির মূল পান্ডা পরেশ বড়ুয়া বর্তমানে চিনে রয়েছে। তাদের মূল লক্ষ্যই হল ভারতে অশান্তি তৈরি করা। দীর্ঘদিন চেষ্টা করতে করতে এবার তারা মণিপুরে একটা ভয়ংকর অশান্তি সংগঠিত করতে সক্ষম হয়েছে। মণিপুরে ২টি লোকসভা আসন রয়েছে এবং সেখানকার মোট জনসংখ্যা ২৫ লক্ষ। তৃণমূল সাংসদ জানালেন, এতটুকু ছোট্ট অঞ্চলে ৭০ হাজার আধাসামরিক বাহিনী রয়েছে। তা সত্ত্বেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। প্রশ্ন উঠেছে, সরকারই নাকি নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে না। তিনি বলেন, অশান্তি, হিংসা, ধর্ষণ, বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনার চিত্র দূর থেকে বোঝা মুশকিল। একটা দেশের কোনও প্রান্তে যদি এরকম যুদ্ধ বেধে যায় তাহলে সেটা কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতা এবং লজ্জা। মণিপুরের ঘটনায় সেটাই হয়েছে।

আরও পড়ুন-নরওয়ে প্রযুক্তিতে তরল নাইট্রোজেন বউবাজারের ভূগর্ভে

মণিপুরে মহিলাদের অত্যাচার নিয়ে সরব হন কাকলি ঘোষদস্তিদার। তিনি বলেন, অশান্তি তৈরি করার অন্যতম হাতিয়ার হল মহিলাদের উপর অত্যাচার। সেখানে শয়ে শয়ে মেয়েরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। মণিপুরের রাজ্যপাল আমাদের সংসদে মণিপুর প্রসঙ্গ তোলার অনুরোধ করেছিলেন। কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে তাঁর বক্তব্য, মণিপুর চলে গিয়েছে, অরুণাচল চলে গিয়েছে, মিজোরামের একটা অংশ চলে গিয়েছে, গালোয়ান উপত্যকাও কার্যত গিয়েছে। তাহলে সরকার করছে কী?

Latest article