রক্তাক্ত আমেরিকার স্বাধীনতা দিবস, বন্দুকবাজের হামলায় মৃত ৬, জখম ৩০

প্রায় ৮ ঘণ্টা তল্লাশি চালানোর পর পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। বছর ২২-এর ওই সন্দেহভাজন যুবকের নাম রবার্ট ক্রিমো থ্রি ওরফে ববি।

Must read

প্রতিবেদন : বন্দুকবাজদের হামলা ক্রমেই গভীর সামাজিক ব্যাধির চেহারা নিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে৷ যে কারণে কয়েকদিন আগেই আমেরিকায় অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন বলবৎ হয়েছে। ৪ জুলাই ছিল আমেরিকার স্বাধীনতা দিবস। কিন্তু স্বাধীনতা দিবসের দিন ফের বন্দুকবাজের হামলায় রক্তাক্ত হল আমেরিকা। শিকাগোর হাইল্যান্ড পার্কের মতো অভিজাত এলাকায় স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজ চলছিল। সে সময় আচমকাই চলে এলোপাথাড়ি গুলি। এই হামলায় ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন প্রায় ৩০ জন। যার মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক।

আরও পড়ুন-পুজোর আগেই খুলছে ভুটান গেট

পুলিশের আশঙ্কা, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। জানা গিয়েছে, নিহত ৬ জনের মধ্যে ৫ জনের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। একজনের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে। আহতরা সকলেই হাইল্যান্ড পার্কের এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গুলিবিদ্ধদের মধ্যে ৮ বছরের শিশু থেকে শুরু করে ৮৫ বছর বয়সি বৃদ্ধও আছেন। গুলিবিদ্ধদের মধ্যে পাঁচটি শিশু। প্রাথমিক চিকিৎসার পর অবশ্য ১৬ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। নিহতদের মধ্যে একজন মেক্সিকোর নাগরিক আছেন।

আরও পড়ুন-রাজনীতিক, অপরাধী, আমলাদের যোগসাজশ অবিলম্বে বন্ধ হোক, এলাহাবাদ হাইকোর্ট

প্রায় ৮ ঘণ্টা তল্লাশি চালানোর পর পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। বছর ২২-এর ওই সন্দেহভাজন যুবকের নাম রবার্ট ক্রিমো থ্রি ওরফে ববি। হাইল্যান্ড পার্কের পুলিশ প্রধান লু জগমেন জানিয়েছেন, সোমবার সকাল ১০টা ১৫ মিনিট নাগাদ গুলি চলে। ঘটনার পরই এলাকা থেকে গা ঢাকা দেয় ওই যুবক। প্রায় ৮ ঘণ্টা পর ওয়েস্টলেগ রোড এবং ইউএস-৪১ স্ট্রিটের কাছে এক জায়গায় ক্রিমোর গাড়ি পড়ে থাকতে দেখা যায়। সেখান থেকেই ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। জগমেন আরও জানিয়েছেন, ক্রিমো পেশায় ইউটিউবার। বিভিন্ন নামে একাধিক ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে তার। ক্রিমোর একাধিক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। তার ভিডিওগুলিতেই রয়েছে হিংস্রতার ছবি। ওই সব ভিডিও থেকেই বাঝা যায় ক্রিমো মানসিক অস্থিরতায় ভুগছে। কেন সে এ ধরনের কাজ করল তা জানতে পুলিশ ক্রিমোকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। ঘটনার কথা জানার পর মৃতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেছেন দেশের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তাঁর স্ত্রী জিল। বাইডেন বলেছেন, এই ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। আমি স্তম্ভিত।

আরও পড়ুন-ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে নয়া আইন চায় কেন্দ্র

সোমবার সকাল ১০টায় শুরু হয়েছিল কুচকাওয়াজ। মিনিট দশেকের মধ্যেই একটি দোকানের ছাদ থেকে অজ্ঞাতপরিচয় বন্দুকবাজ এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। গুলির শব্দে গোটা এলাকায় তীব্র আতঙ্ক ছড়ায়। কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণকারী থেকে শুরু করে দর্শকদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। দর্শকরা অনেকেই দৌড়ে পালাতে থাকেন। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার একাধিক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানেই দেখা যাচ্ছে, স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে ব্যান্ড বাজছে। ব্যান্ডের তালে তালে এগিয়ে চলেছে কুচকাওয়াজ। বিপরীত দিক থেকে পাগলের মতো ছুটে আসছেন কিছু মানুষ। তাঁরা সকলেই অত্যন্ত আতঙ্কিত। তাঁরাই গুলি চলছে বলে জানান।

আরও পড়ুন-গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনার সুবিধা বন্ধ করে দিতে চায় মোদি সরকার

গুলির শব্দকে অনেকেই প্রথম আতশবাজির শব্দ বলে মনে করেছিলেন। কারণ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে আমেরিকায় বাজি পোড়ানো হয়। ইলিনয় রাজ্যের এক সেনেটর বলেছেন, যখন গুলি চলে তখন আমি সেখানেই বসে ছিলাম। গুলির শব্দ শুনে ভেবেছিলাম আতশবাজি পোড়ানো হচ্ছে। তারপরই দেখি, কিছু মানুষ চিৎকার করতে করতে ছুটছে। তখনই বিষয়টি বুঝতে পারি। ঘটনার জেরে এদিন স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়।

Latest article