‘ধর্মের নামে ভোট দেবেন না, কর্মের জন্য ভোট দিন’ বার্তা অভিষেকের

রাজ্য তৃণমূলের সভাপতি সুব্রত বক্সি সহ এদিন ছিলেন অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম, দেবাশিস কুমরারা সহ অন্যান্যরা।

Must read

পার্ক সার্কাস ময়দানে আজ সভা করছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এদিন তাঁর পাশে আছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। রাজ্য তৃণমূলের সভাপতি সুব্রত বক্সি সহ এদিন ছিলেন অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম, দেবাশিস কুমরারা সহ অন্যান্যরা।

আরও পড়ুন-কালীঘাটে পুজো দিয়ে সংহতি যাত্রার পথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মঞ্চ থেকে বলেন, ‘আজ বাঙালি হিসেবে আমি গর্বিত বোধ করছি। কারণ একটি অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে যখন আজ দেশে অস্ত্রের ঝনঝনানি চলছে, চোখরাঙানি চলছে; তখন আমার শহর, আমার রাজ্যে লাখ-লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে সংহতি তুলে ধরেছেন। মানুষের কাছে আর্জি, আপনার যে দলকে পছন্দ, সেই দলকে ভোট দিন। কিন্তু ধর্মের নামে ভোট দেবেন না, কর্মের জন্য ভোট দিন। গরীবদের বঞ্চিত করে ধর্ম নিয়ে বিভাজন করা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের নেত্রী বার বার বলেছেন ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আমরা বাড়ির ভিতরে ধর্ম করব। বাইরে নয়। আজকের দিনটা আমার কাছে গর্বের। কারণ যেদিন দেশে একটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে ঘিরে ভেদাভেদ চলছে, তখন বাংলায় ধর্মীয় সংহতি যাত্রা হচ্ছে।

আরও পড়ুন-অসমের মন্দিরে ঢুকতে বাধা রাহুলকে, ধর্নায় সাংসদ

পার্ক সার্কাসের সভা থেকে এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজেপি-র বিরুদ্ধে বাংলাকে শোষণ এবং ধর্মের নামে রাজনীতি করার অভিযোগ তোলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক৷ তিনি বলেন, ‘আমি হিন্দু, হিন্দু ধর্ম পালন করি৷ কিন্তু যখন আমি মানুষের ভোটে জিতে জনপ্রতিনিধি তখন আমার একটাই ধর্ম, মানব ধর্ম৷ আমার একটাই ধর্ম, মানুষের সেবা করা। একটা রাজনৈতিক দল গা জোয়ারি করে বাংলাকে শোষিত করছে। আমরা ধর্মকে কেন্দ্র করে রাজনীতি করিনা৷ আমাদের বৈচিত্র‍্যের মধ্যে ঐক্য।’

আরও পড়ুন-অসমের মন্দিরে ঢুকতে বাধা রাহুলকে, ধর্নায় সাংসদ

কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করে এদিন অভিষেক বলেন, ‘রাজনীতিতে মানুষের সমর্থন অর্জন করতে পারে না, তারা ধর্মের নামে ভোট চাইতে যায়। কেন্দ্রে যে সরকার চলছে, তারা কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে বলে দিচ্ছে কী ভাবে তদন্ত করতে হবে, বিচার ব্যবস্থার একাংশকে প্রভাবিত করার চেষ্টা হচ্ছে। খালি একটা জায়গায় এরা কোনওরকমভাবে কোনও প্রভাব প্রতিপত্তি খাটাতে পারেনি, সেটা হচ্ছে মানুষের হৃদয়। তাই কানে শুনে নয়, চোখে দেখে লড়াইে অংশগ্রহণ করে বাংলার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যাতে অব্যাহত থাকে তা সকলকে সুনিশ্চিত করতে হবে।’ সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে অভিষেক বলেন, ‘কোই কহতে হ্যায় হিন্দু খতরে মে হ্যায়, কোই কহতে হ্যায় মুসলমান খতরে মে হ্যায়, ম্যায় কহতা হুঁ, ধরম কা চশমা হটাকে দেখ, পুরা হিন্দুস্তান খতরে মে হ্যায়।’

আরও পড়ুন-বাড়ল সম্পত্তি কর, রাজ্যকে বিশেষ ইনসেনটিভ কেন্দ্রের

২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের কথা মনে করিয়ে দিয়ে অভিষেক বলেন, ‘২০১৯-এ যে বিষয়কে সামনে রেখে ভোট হয়েছিল, আজকে সেটাই বাস্তবায়িত হচ্ছে৷ আগামী দিনে কানে শুনে নয়, চোখে দেখে ভোট দিন৷ ধর্মের নামে নয়, কর্মের নামে ভোট হোক৷ একশো দিনের টাকা, বাংলার প্রতি বঞ্চনা, আপনার বাড়ির সামনের রাস্তার কথা মাথায় রেখে ভোট দেন, তাহলে দেখবেন যে যত বড় নেতা হোন না কেন, আপনার টাকা কেউ আটকে রাখতে পারবে না৷’

আরও পড়ুন-সম্মান সব ধর্মকে, নেতৃত্বে মুখ্যমন্ত্রী, কাল সংহতি মিছিল, বাংলায় প্রস্তুতি তুঙ্গে

এদিন মন্দির, গুরুদোয়ারা এবং গির্জার পরে মসজিদে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পার্ক সার্কাসের একটি মসজিদ চত্বরের বাইরে চাদর তুলে দেন তিনি। সেখান থেকে তিনি সভাস্থলে যান। প্রসঙ্গত, সংহতি যাত্রার মঞ্চ থেকে নাখোদা মসজিদের ইমাম জানান, ‘দেশে যখন ভেদাভেদের পরিবেশ, তখন মমতা একা বাঘিনীর মতো সংহতির কথা বলছেন। ঘৃণার পরিবেশে ভালবাসার স্তবক নিয়ে ঘুরছেন। সমস্ত ধর্মকে ভালবাসার যে পথ আপনি দেখিয়েছেন, তা একদিন আপনাদের দেশের শীর্ষে পৌঁছে দেবে’।

Latest article